মুরগির দাম বাড়ার কারণ জানাল পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন

:: পাবলিক রিঅ্যাকশন রিপোর্ট | পাবলিকরিঅ্যাকশন.নেট
প্রকাশ: ৮ মাস আগে

সরকার নানামুখী উদ্যোগ নিলেও প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের সহযোগিতায় করপোরেট গ্রুপগুলোর কৃত্রিম সংকটে মুরগির বাচ্চা ক্রয় করতে না পেরে উৎপাদন থেকে বাধ্য হয়ে সরে যাচ্ছে প্রান্তিক খামারিরা। উৎপাদনে প্রান্তিক খামারিরা না থাকায় থামানো যাচ্ছে না মুরগির বাজারের পাগলা ঘোড়াকে। বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে করপোরেট গ্রুপ। ফলে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে দাম।

বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) সভাপতি সুমন হাওলাদার।

প্রসঙ্গত, বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ২০০-২৩০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩২০-৩৫০ টাকা, দেশি মুরগি ৬০০-৬৫০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৬০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩২০-৩৩০ টাকায়।

বিজ্ঞপ্তিতে সুমন হাওলাদার বলেন, করপোরেট গ্রুপগুলোর কৃত্রিম সংকটে মুরগির বাচ্চা ক্রয় করতে না পেরে উৎপাদন থেকে বাধ্য হয়ে সরে যাচ্ছে প্রান্তিক খামারিরা। মুরগির বাজারের এখন বেশিরভাগ মুরগি হচ্ছে করপোরেট গ্রুপগুলোর। বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে তারা। ফলে বাজারে মুরগির দাম বাড়বে এটাই স্বাভাবিক।

সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা প্রান্তিক খামারিদের সঙ্গে সম্পর্ক না রেখে করপোরেট গ্রুপদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখে উল্লেখ করে সুমন বলেন, প্রান্তিক খামারিরা বিপর্যয়ের মুখে। অসাধু কর্মকর্তা ও করপোরেট গ্রুপকে আইনের আওতায় এনে প্রান্তিক খামারিদের সুরক্ষা দিয়ে উৎপাদনে ফিরিয়ে আনতে হবে সরকারকে। তা না হলে মহাবিপর্যয়ে পড়বে প্রান্তিক পোল্ট্রি শিল্প। জিম্মি হয়ে পড়বেন ১৭ কোটি ভোক্তা।

প্রান্তিক খামারিদের উৎপাদন খরচ বাড়ছে জানিয়ে বিপিএ সভাপতি আরও বলেন, একটি মুরগির বাচ্চা উৎপাদন করতে খরচ হয় ২৮ থেকে ৩০ টাকা। অথচ প্রান্তিক খামারিদের সেই বাচ্চা কিনতে হয় ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। অন্যদিকে ব্রয়লার মুরগির ফিড উৎপাদন করতে খরচ হয় ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, কিন্তু প্রান্তিক খামারিদের সেই ফিড কিনতে হয় ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজি দরে। আর এক কেজি ব্রয়লার মুরগি উৎপাদন করতে খরচ হয় ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা।

অথচ কৃষি বিপণন অধিদফতর ব্রয়লার মুরগির দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে ১৪৯ টাকা। এ দামে মুরগি বিক্রি করলে লোকসানে পড়বেন খামারিরা। তাই অধিদফতর থেকে দেয়া প্রজ্ঞাপণ দ্রুত প্রত্যাহার করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের আইনে বলা হয়েছে, উৎপাদক ৩০% লাভ করতে পারবে কর্পোরেট গ্রুপদের জন্য এক আইন এবং প্রান্তিক ছোট ছোট খামারীদের জন্য অন্য আইন কেন। একটি মুরগির বাচ্চা উৎপাদন করতে খরচ হয় ২৮ থেকে ৩০ টাকা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর মূল্য নির্ধারণ করে দিল ১০০% প্রফিট দিয়ে ৬৩ টাকা। সেই নির্ধারিত দামে মুরগির বাচ্চা পাওয়া যায় না প্রান্তিক খামারিদের সেই বাচ্চা ক্রয় করতে হয় ৮০ থেকে ৯০ টাকায় অন্যদিকে ব্রয়লার মুরগির ফিড উৎপাদন করতে খরচ হয় ৫০ থেকে ৫৫ টাকা প্রান্তিক খামারীদের সেই ফিড ক্রয় করতে হয় ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজি। প্রান্তিক খামারীদের উৎপাদন খরচ বাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে এবং প্রান্তিক খামারিদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য দেয়া হচ্ছে না প্রান্তিক পর্যায়ের খামারীদের এক কেজি ব্রয়লার মুরগি উৎপাদন করতে খরচ হয় ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা এবং কৃষি বিপণন অধিদপ্তর মূল্য নির্ধারণ করে দিল ১৪৯ টাকা এবং একটি ডিমের উৎপাদন খরচ ১০ টাকা ৫০ পয়সা এবং তা বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ করল ১০ টাকা ৪৯ পয়সা উৎপাদন খরচ না দেখে কেন বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ করা হলো উৎপাদন খরচ না জেনে বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ করা হলে বাজারে বিরূপ প্রভাব পড়বে। প্রান্তিক খামারিরা উৎপাদন করবে ন্যায্য মূল্য দেওয়া না হলে উৎপাদনে টিকতে পারবে না ডিম মুরগির বাজারে কখনোই স্বস্তি মিলবে না। তার মানে কর্পোরেট গ্রুপগুলো ১০০ থেকে ২০০% লাভ করবে এবং প্রান্তিক ছোট ছোট উদ্যোক্তা যারা উৎপাদন করে তারা প্রায় ২৫% লস করে বিক্রি করতে হবে। আমাদের এই বৈষম্য থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের বেধে দেয়া মূল্যের প্রজ্ঞাপনকে উইদ্ধ করে নিতে বিনীতভাবে অনুরোধ করেছেন বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) এবং সকল উৎপাদক এবং ব্যবসায়ীদেরকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে মূল্য নির্ধারণ করতে হবে।


[প্রিয় পাঠক, পাবলিক রিঅ্যাকশনের প্রায় প্রতিটি বিভাগে আপনিও লিখতে পারেন। আপনার অনুভূতির কথা আমাদের লিখে পাঠান। ছবিসহ মেইল করুন opinion2mail@gmail.com এই ঠিকানায়। যে কোনো খবর, ভ্রমণ, আড্ডা, গল্প, স্মৃতিচারণসহ যে কোনো বিষয়ে লিখে পাঠাতে পারেন। পাঠকের লেখা আমাদের কাছে সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ।]