মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্তে ‘জাতীয় গণতদন্ত কমিশন’ গঠন

:: পাবলিক রিঅ্যাকশন রিপোর্ট | পাবলিকরিঅ্যাকশন.নেট
প্রকাশ: ৫ মাস আগে

কোটা আন্দোলন ঘিরে নির্যাতন, গুলি, সহিংসতা, মৃত্যু, গণগ্রেপ্তার ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্তে ‘জাতীয় গণতদন্ত কমিশন’ গঠন করা হয়েছে।

এই তদন্ত কমিশনে দুজন করে সভাপতি ও সদস্যসচিব করা হয়েছে। আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মো. আব্দুল মতিন এবং আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল যুগ্মভাবে সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন। সদস্যসচিব হিসেবে যুগ্মভাবে দায়িত্ব পালন করবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তানজিমুদ্দিন খান ও লেখক-গবেষক মাহা মির্জা।

সোমবার (২৮ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সদস্যসচিব তানজিমুদ্দিন খান ও মাহা মির্জা এ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ১৬ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে শিক্ষার্থীদের বেধড়ক পিটিয়ে সহিংসতার সূত্রপাত হয়। এই সহিংসতার প্রতিবাদে বাংলাদেশজুড়ে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ পথে নেমে এলে রংপুরে আবু সাঈদকে সরাসরি বুকে গুলি করা হয়।

কিন্তু পুলিশ যখন মামলা করে, তখন সাধারণ ছাত্র ও জনগণকে দায়ী করা হয়। এতে গোটা তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে সাধারণ নাগরিকদের মনে প্রশ্ন উঠেছে এবং এসব ঘটনায় সত্য উদঘাটনের দাবি উঠেছে। এ ঘটনায় পত্রিকার হিসাবে অন্তত ২০৯ জনের মৃত্যুর সংবাদ প্রকাশ হলেও সরকারি হিসাবে তা ১৪৭ জন।

প্রসঙ্গত, সরকারি হিসেবে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৫০ জনে দাঁড়িয়েছে বলে আজ মন্ত্রিসভায় জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এই আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীদের নির্যাতন, গুলি ও গণগ্রেপ্তারসহ নানা সহিংস উপায়ে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হয়েছে এবং তাতে সংবিধান, প্রচলিত আইন ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে।

তাই এসব ঘটনার কারণ উদঘাটন, সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের আবশ্যকতা রয়েছে। এরই অংশ হিসেবে দেশের শিক্ষক, আইনজীবী, সংস্কৃতিকর্মী ও সাধারণ অভিভাবকদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের কয়েকজন প্রথিতযশা ব্যক্তির সমন্বয়ে একটি ‘জাতীয় গণতদন্ত কমিশন’ গঠন করা হয়েছে।

কমিশনের সদস্যরা হলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মো. আব্দুল মতিন, আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আবু সাইয়িদ খান, অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আশরাফ কায়সার, আইনজীবী অনীক আর হক, অধ্যাপক তানজিমউদ্দিন খান এবং লেখক ও গবেষক মাহা মির্জা।

এ ছাড়া গণতদন্ত কমিশনে উপদেষ্টা হিসেবে থাকবেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী তোবারক হোসেন, আইনজীবী সারা হোসেন, শাহদীন মালিক, লেখক ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সলিমুল্লাহ্ খান, শিক্ষক কাজী মাহফুজুল হক সুপন, আইনজীবী রাশনা ইমাম, আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ও শিক্ষক সাইমুম রেজা তালুকদার।

জাতীয় গণতদন্ত কমিশনের পক্ষ থেকে সব সচেতন ব্যক্তিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত ১ জুলাই থেকে সংঘটিত বিভিন্ন সহিংস নির্যাতন, নিপীড়ন, হত্যা, গুলিবর্ষণ, হুমকি, মামলা, মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যাবতীয় তথ্য কমিশনের কাছে পাঠানোর জন্য শিগগিরই অনুরোধ জানানো হবে।

এসংক্রান্ত অডিও, ভিডিও, ফটোগ্রাফ, লেখাসহ যেকোনো ধরনের তথ্য পাঠানো যাবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।