সুমন হাওলাদার:
প্রান্তিক পোল্ট্রি খামারীগণ মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন ব্যবসা থেকে। খামার বন্ধ করে বেকার হয়ে পরবেন প্রায় ৪০ থেকে ৫০ লক্ষ কর্মজীবী মানুষ। উৎপাদন খরচ উঠছে না প্রান্তিক খামারীদের।
একটি ডিম উৎপাদন খরচ ১০.৫০ পয়সা, বর্তমানে খামারীদের বিক্রি ৯.১০ পয়সা। ১ কেজি ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা। খামারীরা মূল্য পাচ্ছে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা। কতদিন আর লসের ব্যবসা করবে। তাই খামারীরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে পোল্ট্রি খামারীরা। এখনই যদি প্রান্তিক খামারীদের টিকিয়ে রাখা না যায় তবে আমিষের ভয়ঙ্কর সঙ্কট দেখা দিবে দেশে এবং এদেরকে রক্ষা করতে হলে এখনই সরকারের উচিত এদেরকে টিকিয়ে রাখার ব্যবস্থা নেয়।
একদিকে খামারীরা উৎপাদিত পণ্যের ন্যার্য্য মূল্য পাচ্ছে না, অন্যদিকে কর্পোরেট কোম্পানীদের স্বেচ্ছাচারীতায় ক্রমেই বেড়ে চলেছে ১দিন বয়সে মুরগির বাচ্চা ও ফিডের অস্বাভাবিক মূল্যের কারণে খামার বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছে। ২০০৯ সালে ১ লক্ষ ৬০ হাজার খামারী ছিল এখন ১ লক্ষ খমারী বন্ধ হয়ে গেছে আর ৬০ হাজার খামারী রয়েছে তাও বন্ধের প্রক্রিয়ায় আছে।
এখনই প্রান্তিক খামারীদের টিকিয়ে রাখার জন্য সকল ধরণের ব্যবস্থা নিতে হবে। যাতে করে প্রান্তিক খামারীদের উৎপাদন অব্যাহত থাকে এবং বাজার স্থিতিশীল থাকে। খামারীদের স্বল্পসুদে ব্যাংক ঋণ ফাইনান্সিয়াল সাপোর্ট ও সকল প্রকার ভ্যাট মওকুফ করতে হবে এবং সকল ধরণের লাইসেন্স সজক করে দিতে হবে।
পোল্ট্রি খামারীদের উৎপাদিত পণ্য ন্যার্য্য মূল্য নিশ্চিত করতে হবে। সংকট মোকাবেলার জন্য সকল ধরণের পোল্ট্রি, ফিড, বাচ্চা এবং আমদানীকৃত সকল পণ্যের উপরে আপাদত ভ্যাট মওকুফ করার আহ্বান করছি এবং যে কেউ যাতে পোল্ট্রি ফিড আমদানীতে এলসি করতে পারে সে ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তর সকল ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে খামারীদের টিকিয়ে রাখতে।
পোল্ট্রি সেক্টরে ফিড উৎপাদন থেকে শুরু করে বাচ্চা-মেডিসিন সব জায়গায় স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনতে হবে কর্পোরেট কোম্পানীদের তদারকি করে ন্যার্য্য মূল্যে ফিড ও বাচ্চা বিক্রয়ের নিশ্চিত করতে হবে।
পোল্ট্রি বোর্ড গঠন করে পোল্ট্রি সকল পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে দিন, কর্পোরেট কোম্পানীদের এস এম এস এর মাধ্যমে মূল্য নির্ধারণ বন্ধ করুন। পোল্ট্রি শিল্পকে রক্ষা করুন।
অতি জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে সামনে দেশে ডিম ও মুরগির ঘাটতি দেখা দিবে।
লেখক: সভাপতি, বাংলাদেশ পোল্ট্রি এসোসিয়েশন।