স্পোর্টস ডেস্ক:
গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে অঘটনে পড়লেও পরের ম্যাচেই দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে পর্তুগাল। অন্যদিকে চলতি বিশ্বকাপে মরক্কো ঘটিয়েই চলছে একের পর এক অঘটন। গ্রুপ পর্বে বেলজিয়ামকে চমকে দেওয়া দলটি বিদায়ঘণ্টা বাজিয়েছে হেভিওয়েট স্পেনেরও। ফলে এই ম্যাচে ঘটতে পারে যেকোনো কিছুই।
ম্যাচের ফলাফল জানা যাবে ম্যাচ শেষেই, তবে তার আগে কাগজে কলমে দুদলের সামর্থ্য ও সাম্প্রতিক ফর্মের আলোকে ভবিষ্যৎবাণী নিয়ে হাজির আমরা। পাশাপাশি দুই দলের সম্ভাব্য একাদশ, ফর্মেশনও তুলে ধরা হলো:
কখন?
শনিবার, ১০ ডিসেম্বর, বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা
কোথায়?
আল থুমামা স্টেডিয়াম, দোহা
টিম নিউজ
রক্ষণের অপরিহার্য সদস্য নুনো মেন্দেসের ছিটকে গেছেন লম্বা সময়ের জন্য। তার ফেরার সম্ভাবনা নেই এই ম্যাচেও। পিএসজি সেন্টার ব্যাক দানিলো পেরেইরার চোটও সারেনি। শেষ পর্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে তাকে খেলাবেন কিনা সান্তোস তা জানা যাবে ম্যাচেই। তবে আশার খবর পোর্তো মিডফিল্ডার ওতাভিও ইনজুরি কাটিয়ে ফিরতে পারেন এই ম্যাচে। শুরুর একাদশে তাকে না রাখলেও বদলী হিসেবে আস্থা রাখতে পারেন পর্তুগিজ কোচ।
স্পেনের বিপক্ষেই পেশির চোটে পড়েছিলেন মরক্কো রক্ষণের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য নায়েফ আগুয়ের্ড। তার এই ইনজুরি বাড়িয়ে দিয়েছে রেগরাগুইয়ের দুশ্চিন্তা। তবে শেষ পর্যন্ত তাকে খেলিয়েও দিতে পারেন এই কোচ।
নজরে থাকবেন যারা
সুইসদের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করা রামোসের দিকে বাড়তি নজর থাকবে ভক্তদের। তরুণ বেনফিকা ফরোয়ার্ড মুখিয়ে থাকবেন আবারও ফিনিশিং ঝলকে দলকে এগিয়ে নিতে। মাঝমাঠে ব্রুনো ফার্নান্দেজ-বের্নার্দো সিলভা জুটিতে রাখতে হবে অভিজ্ঞতার ছাপ। রোনালদো যদি শুরুর একাদশে জায়গা নাও পান, বদলী হিসেবে তার গোলের অপেক্ষায় থাকবেন লাখো ভক্ত।
হাকিম জিয়েশ, ইউসেফ এন নেসিরিদের ওপর এই ম্যাচেও নির্ভর করবে অনেক কিছু। একের পর এক আক্রমণে তাদের পরীক্ষা নিতে হবে পর্তুগিজ রক্ষণের। তবে প্রতি ম্যাচে পেনাল্টির ভরসায় খেললে চলবে না মরক্কোর, তাই কাটাতে হবে ফিনিশিং দুর্বলতা। রক্ষণে আশরাফ হাকিমিকে দিতে হবে নেতৃত্ব। সঙ্গে ডান প্রান্ত থেকে আক্রমণ শানাতেও ভূমিকা রাখতে হবে পিএসজি তারকাকে।
সম্ভাব্য লাইন আপ
পর্তুগাল: (৪-৩-১-২) দিয়োগো কস্তা (গোলরক্ষক), রাফায়েল গেরেইরো, রুবেন দিয়াস, পেপে, দিয়োগো দালত, উইলিয়াম কারভালহো, ওতাভিও, বের্নার্দো সিলভা, ব্রুনো ফার্নান্দেজ, গনসালো রামোস ও জোয়াও ফেলিক্স।
মরক্কো: (৪-৩-৩) ইয়াসিন বুনো (গোলরক্ষক), জাওয়াদ এল ইয়ামিক, আশরাফ হাকিমি, রোমেইন সাইস, নৌসাইর মাজরাউই, সোফিয়ান আমরাবাত, সেলিম আমাল্লাহ, আজজেদিন ওনাহি, সোফিয়ান বোফাল, ইউসেফ এন-নেসিরি ও হাকিম জিয়েশ।
প্রেডিকশন
শক্তির বিচারে এমনিতেই বেশ এগিয়ে পর্তুগাল। তার ওপর শেষ ষোলোর অমন উড়ন্ত পারফরম্যান্স আরও ভারি করেছে তাদের সম্ভাবনার পাল্লা। তবে মরক্কোও ছিটকে দিয়েছে অন্যতম ফেভারিট স্পেনকে। সান্তোসের শিষ্যদের আক্রমণ রুখতে পারলে ও নিজেদের সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারলে সাফল্য পেতে পারে রেগরাগুইয়ের শিষ্যরাও।
সম্ভাব্য স্কোর:
পর্তুগাল ১-০ মরক্কো
ম্যাচ ফ্যাক্টস
১. অতীতে মাত্র দুইবারই মুখোমুখি হয়েছে পর্তুগাল ও মরক্কো। দুটি মোকাবিলাই ছিল বিশ্বকাপে। যাতে দুই দলেরই আছে একটি করে জয়। ১৯৮৬ আসরের গ্রুপ পর্বে ৩-১ ব্যবধানে জিতে নিয়েছিল আফ্রিকানরা, ২০১৮ রাশিয়া আসরে রোনালদোর একমাত্র গোলে জয় পায় পর্তুগাল।
২. সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে হেডে গোল করে এক নতুন কীর্তি গড়েছেন পেপে। ৩৯ বছর ২৮৩ দিন বয়সে গোল করে বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে গোল করা সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় এখন তিনিই।
৩. সুইসদের বিপক্ষেই বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো ম্যাচ শুরু করেছিলেন রামোস। হ্যাটট্রিক করে ভাগ বসিয়েছেন সাবেক জার্মান তারকা মিরোস্লাভ ক্লোসার ২০ বছর পুরোনো রেকর্ড। এর আগে ফুটবলের মহাযজ্ঞে প্রথম শুরু করার ম্যাচে ২০০২ সালে এমন কীর্তি দেখিয়েছিলন ক্লোসা।
৪. প্রথম আরব দল হিসেবে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে পা রেখেছে মরক্কো। ক্যামেরুন, সেনেগাল ও ঘানার পর চতুর্থ আফ্রিকান দল হিসেবে এই কীর্তি দেখিয়েছে তারা।
৫. প্রতিপক্ষের কোনো খেলোয়াড়ই এখন পর্যন্ত বল জড়াতে পারেনি মরক্কোর জালে। কানাডার বিপক্ষে তাদের হজম করা গোলটি ছিল আত্মঘাতী।
৬. ১৯৮৬ সালের পর এবারই প্রথম বিশ্বকাপের নকআউটে খেলছে মরক্কো। এবারই প্রথম কোন আরব কোচের অধীনে এই পর্বে পা রেখেছে তারা।
৭. সেপ্টেম্বরে কোচের দায়িত্ব নেওয়া রেগরাগুইয়ের অধীনে এখন পর্যন্ত পর্যন্ত একটি ম্যাচও হারেনি মরক্কো। তার অধীনে সাতটি ম্যাচ খেলে পাঁচটিতেই জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন হাকিমি-জিয়েশরা। অপর দুটি ম্যাচ হয়েছে ড্র। এই সময়ে মাত্র এক গোল হজম করেছে মরক্কো।