আর্থিক ও শারীরিকভাবে সামর্থ্যবানদের ওপর হজ অবশ্য পালনীয় একটি বিধান। হজ ইসলামি শরিয়তের অন্যতম একটি স্তম্ভ ও রুকন। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একাধিক হাদিসে আমাদের হজের গুরুত্ব, সওয়াব ও উপকারিতা বুঝিয়েছেন। সাহাবি আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি বলেন, ‘জান্নাতই হচ্ছে মকবুল হজের একমাত্র প্রতিদান।’ (সহিহ বোখারি: ১৭৭৩, সহিহ মুসলিম: ৪৩৭)
তবে যাদের হজ অথবা ওমরায় যাওয়ার সামর্থ্য ও সক্ষমতা নেই, তাদের জন্যও দয়াবান আল্লাহ এমন কিছু পথ বের করে দিয়েছেন; যেগুলো দ্বারা দুর্বল বান্দারা মকবুল হজের সওয়াব পেয়ে যেতে পারে। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের সেসব রকমারি পথ বা আমল বাতলিয়ে দিয়েছেন বিভিন্ন হাদিসে।
সেসব হাদিসের কোনোটা সহিহ বোখারি, সহিহ মুসলিম, সুনানে তিরমিজি কিংবা অন্য কোনো হাদিসগ্রন্থে অকাট্য সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। আবার কোনোটা ওই মানের না হলেও জয়িফ কিংবা মওজু নয়, পারিভাষিক দৃষ্টিকোণ থেকে যেগুলোকে হাসান বলা হয়। অতএব আমরা যদি বিশ্বাস এবং সওয়াবের দৃঢ় আশ্বাস নিয়ে এসব আমল করতে পারি, তবে ইনশাআল্লাহ অনেক বিরাট প্রতিদানের অধিকারী হতে পারবো।
তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হলো, মাতা-পিতার সেবা এবং তাদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করা। হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) বর্ণনা করেন, জনৈক ব্যক্তি নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট এসে বলল, ‘আমি জিহাদে অংশগ্রহণ করতে চাই, কিন্তু আমার সেই সামর্থ্য ও সক্ষমতা নেই।’
নবীজি প্রশ্ন করলেন, ‘তোমার মাতা-পিতার কেউ কি জীবিত আছেন?’ লোকটি বলল, আমার মা জীবিত। প্রত্যুত্তরে নবীজি বললেন, তাহলে মায়ের সেবা করে আল্লাহর নিকট জিহাদে যেতে না পারার অপারগতা বা ওজর পেশ কর। এভাবে যদি করতে পার এবং তোমার মা সন্তুষ্ট থাকেন তবে তুমি হজ্জ, ওমরাহ এবং জিহাদের সওয়াব পেয়ে যাবে। সুতরাং আল্লাহকে ভয় কর এবং মায়ের সেবা কর।’ (মাজমাউয যাওয়াইদ: ১৩৩৯৯) মহান আল্লাহ তায়ালা যেন আমাদের সকলকে আমল করার ও মাতা-পিতার খেদমত করার তাওফিক দান করুন আল্লাহুম্মা আমিন।
লেখক: হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী; বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ লেখক ও কলামিস্ট।