প্রায় তিন দশকের দাম্পত্য জীবনের ইতি টেনে বিচ্ছেদের কথা ঘোষণা করেছেন কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী এ আর রহমানের স্ত্রী সায়রা বানু। সায়রার আইনজীবী বন্দনা শাহ এই দম্পতির বিচ্ছেদের সিদ্ধান্তের কথা জানান।
তাদের বিচ্ছেদ নিয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ করেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, বিয়ের বহু বছর পর স্বামী এ আর রহমানের সঙ্গে বিচ্ছেদের কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সায়রা বানু। তাদের সম্পর্কের মধ্যে মানসিক চাপের কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। একে অপরের প্রতি তাদের গভীর ভালোবাসা সত্ত্বেও, এই দম্পতি খেয়াল করেছেন তাদের মধ্যে অনেক ব্যবধান, দূরত্ব তৈরি হয়েছে। যা এই মুহুর্তে কোনো পক্ষই পূরণ করতে সক্ষম নয় বলে মনে করছেন তারা।
মিসেস সায়রা বানু জানান, এই সিদ্ধান্ত নেওয়া তার পক্ষে মোটেও সহজ ছিল না। অনেক ব্যথা ও যন্ত্রণা থেকে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
এই কঠিন সময়ে সবার কাছে গোপনীয়তা রক্ষার এবং তাদেরকে একান্তে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেছেন সায়রা বানু।
এদিকে, অস্কারজয়ী সংগীতশিল্পী এ আর রহমানের আশা ছিল একসঙ্গেই বিয়ের তিরিশতম বছর উদযাপন করবেন। কিন্তু তা আর হল না। সামাজিকমাধ্যমে বেদনাদায়ক পোস্টের মাধ্যমে এই বিচ্ছেদের খবর জানান এ আর রহমান।
বিয়ের এত বছর পর আচমকা কেন বিচ্ছেদের পথে হাঁটলেন রহমান ও সায়রা? এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কিছু জানা যায়নি। তবে সামাজিকমাধ্যম এক্স হ্যান্ডেলে রহমান নিজের ও সায়রার যৌথ বিবৃতি শেয়ার করেছেন। যাতে জানানো হয়, দাম্পত্যের তিরিশ বছরের জন্য অনেক প্রত্যাশা ছিল এ আর রহমান ও তার স্ত্রীর। কিন্তু তা হল না।
বিবৃতিতে লেখা হয়, আমরা গ্র্যান্ড থার্টিতে পৌঁছে যাব এই আশা ছিল। কিন্তু নিয়তির যে অন্য ভাবনা ছিল আর তা আগে থেকে আঁচ করা যায়নি। ভাঙা মনের ভারে ঈশ্বরের আসনও তো টলে যায়। তবুও এই ছিন্নভিন্ন সম্পর্কে আমরা মানে খুঁজতে থাকি। যদিও এই ভাঙা টুকরো গুলো আবার আগের মতো জোড়া লাগানো সম্ভব নয়। জীবনের এই ভঙ্গুর অধ্যায়ে আমাদের প্রাইভেসিকে সম্মান করার জন্য় আর মহানুভবতার জন্য বন্ধুদের ধন্যবাদ জানাই।
১৯৯৫ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন এ আর রহমান ও সায়রা বানু। তাদের তিন সন্তান খতিজা, রহিমা ও আমিন। এর আগে, সিমি গারেওয়ালকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রহমান স্বীকার করে নিয়েছিলেন, তার ও স্ত্রী সায়রার মধ্যে বেশকিছু সাংস্কৃতিক মত পার্থক্য রয়েছে। যদিও বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে তারা বিষয়টি সামলে চলেন বলেও জানিয়েছিলেন রহমান।
রহমান এও জানিয়েছিলেন যে, সায়রা বানু তার পছন্দ ছিলেন না। তবে সে সময় তিনিও বিয়ের জন্য মেয়েও খুঁজে পাচ্ছিলেন না। অগত্যা তার যখন ২৯ বছর বয়স, তখন সংগীতশিল্পী তার মাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন পাত্রী খুঁজে দেওয়ার জন্য। শেষ পর্যন্ত সায়রা বানুর সঙ্গে বিয়ে হয়ে যায় রহমানের। সেই বিয়ের ২৯ বছর পর পথচলায় ইতি টানলেন রহমান ও সায়রা।