বেনাপোলে উদ্বোধনের পরও চালু হয়নি ই-গেইট সুবিধা

:: বেনাপোল প্রতিনিধি ::
প্রকাশ: ২ years ago

বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে ই-গেইট (ইলেকট্রনিক ফটক) উদ্বোধন করা হলেও এখনও কোন ই-পাসপোর্টধারী যাত্রীরা এ সুযোগ পাচ্ছেন না। ই-গেইট পরিচালনার টেকনিশিয়ান না থাকায় এ সমস্যা দেখা দিয়েছে। কবে থেকে এ কার্যক্রম চলবে তাও ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ বলতে পারছেন না। তবে পূর্বের ম্যানুয়াল নিয়মে একজিট এন্ট্রি সিল দিয়ে পাসপোর্টযাত্রীরা যাতায়াত করছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পরিদর্শক বোরহান উদ্দিন। তিনি জানান, শনিবার উদ্বোধনের পর থেকে আজ বিকেল পর্যন্ত কোন পাসপোর্টযাত্রী ই-গেইট ব্যবহার করেননি। ই-গেইট কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত কোন টেকনিশিয়ান না আসায় এখনো চালু করা হয়নি। তবে দ্রুত ঢাকা থেকে টেকনিশিয়ান আসবেন বলে জেনেছি।

পাবলিক রিঅ্যাকশনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন

জানা গেছে, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর, সুরক্ষা সেবা বিভাগ ও স্বরাস্ট্র মন্ত্রনালয় ই-গেইট কার্যক্রমের সাথে সংযুক্ত। শনিবার (৪ মার্চ) বিকালে স্বরাস্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে ই-গেইট উদ্বোধন করেন।

ই-গেইট ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ইমিগ্রেশন পুলিশ ই-পাসপোর্টের বিভিন্ন তথ্যাদি তাদের ইমিগ্রেশন ওয়ার্কস্টেশনে স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্বল্প সময়ে ইমিগ্রেশন তথ্যাদি যাচাই বাছাই ও কার্যক্রম সম্পাদন করতে পারবে। যার মূল উদ্দেশ্যে হচ্ছে নিবিঘেœ এবং দ্রুততার সাথে যথাযথ তথ্য যাচাই পূর্বক ই পাসপোর্টধারীদের ইমিগ্রেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করা। যা স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনায় বিশে^র সর্বাধুনিক ও সর্বোত্তম প্রযক্তি সন্নিবেশিত রয়েছে।

ই-গেট ব্যবহারের পদ্ধতিতে প্রথম ধাপে প্রবেশপথে নিজের ছবি, তথ্য ও বারকোডযুক্ত ই-পাসপোর্টের প্রথম পৃষ্ঠা স্ক্যান করলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে যাত্রীর সব তথ্য যাচাই শেষে খুলে যাবে প্রথম গেইট। এরপর দ্বিতীয় ধাপে স্বয়ংক্রিয় ভাবে ক্যামেরাযুক্ত ফেসিয়াল রিকগনিশনের মাধ্যমে পাসপোর্টের ছবির সঙ্গে যাত্রীর মুখমন্ডল মিললে খুলে যাবে দ্বিতীয় গেইট। সার্ভার এবং সিষ্টেম ঠিক থাকলে মাত্র ১৮ সেকেন্ডেই শেষ হবে একজন যাত্রীর ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া।

ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ১৮ জানুয়ারি থেকে দেশে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম শুরু হয়। দেশের বেশিরভাগ মানুষ এখনো ই-পাসপোর্টের আওতায় আসেননি। ২০২০ সাল থেকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশে বিদেশে ৭০ লাখের বেশি গ্রাহককে সফল ভাবে ই-পাসপোর্ট প্রদান করা হয়েছে। যে কারণে ই গেইট সেবা কার্যক্রমের পাশাপাশি ম্যানুয়াল পদ্ধতির সেবা কার্যক্রমও সচল থাকবে। বর্তমানে দেশে সব জেলা পাসপোর্ট অফিসে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। পাসপোর্টধারী সব মানুষকে ই পাসপোর্টের আওতায় আনতে সময় লাগবে। এখন সবাইকে ই পাসপোর্ট দেয়া হচ্ছে।

আরো জানা গেছে, ২০২২ সালের ৭ জুন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বহির্গমনে ১৩টি ও আগমনীতে ১৩টি ই-গেইট, ১৮ নভেম্বর শাহ আমনত বিমানবন্দরে বহির্গমনে তিনটি ও আগমনীতে তিনটি ই-গেইট এবং এ বছর ৮ জানুয়ারি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বহির্গমনে তিনটি ও আগমনীতে তিনটি ই-গেইট সম্পূর্ণ সচল করে আধুনিক ইমিগ্রেশন সুবিধা শুরু করা হয়। এ পর্যন্ত এক লাখ ১৫ হাজারের অধিক যাত্রী এই সেবা গ্রহণ করেছেন। ৪ মার্চ বেনাপোল স্থলবন্দরের চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে বহির্গমনে ২টি ও আগমনীতে ২টি ই-গেইট উদ্বোধন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য স্থলবন্দরে এই কার্যক্রম শুরু হবে। এই ই-গেইট সেবা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে প্রথম প্রবর্তন করা হয়েছে।

ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে ই-পাসপোর্টধারী যাত্রীগন মাত্র ১৮ সেকেন্ডে ইমিগ্রেশনের কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন। ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে একজন যাত্রীর সময় লাগে প্রায় ৫ থেকে ৮ মিনিট। ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম শেষ করতে ঘন্টার পর ঘন্টা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয় যাত্রীদের। সেই ভোগান্তি নিরসনে বেনাপোল ইমিগ্রেশনে চারটি ই- গেইট স্থাপন করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মতো স্থলবন্দরেও স্থাপিত ই-গেইট সেবা কার্যক্রম চালু হলে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াতকারী পাসপোর্টযাত্রীদের যেমন ভোগান্তি কমবে তেমনি দালাল ও প্রতারকদের দৌরাত্মও কমে আসবে।

মো. আইয়ুব হোসেন পক্ষী/বেনাপোল, যশোর/ ৫ মার্চ ২০২৩ ইং


আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে ভার্চুয়াল মতামত ও অন্যান্য ভিডিও পাবেন।

গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে সাথেই থাকুন।


Public Reaction একটি মতামতভিত্তিক সাইট।
মূলধারার সংবাদ এবং মতামত, প্রবন্ধ, গল্প, কবিতাসহ সৃজনশীল লেখা প্রকাশের একটি মুক্তমাধ্যম এটি। লিখুন আপনিও।
ইমেইল: opinion2mail@gmail.com, info@publicreaction.net