বেতন বৈষম্য দূরসহ ৬ দাবিতে মেট্রোরেল কর্মচারীদের কর্মবিরতি

:: পাবলিক রিঅ্যাকশন রিপোর্ট | পাবলিকরিঅ্যাকশন.নেট
প্রকাশ: ৪ মাস আগে

গ্রেড ভিত্তিক বেতন-ভাতা বৈষম্য দূরীকরণ, অন্যান্য দেশের সাথে সামঞ্জস্যতা রেখে সুযোগ-সুবিধা প্রদান, ডিউটিকালীন নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ ৬ দফা দাবিতে “সর্বাত্মক কর্মবিরতি” পালন করছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)-এ ১০ থেকে ২০ তম গ্রেড পর্যায়ের ৭০০ এরও বেশি কর্মচারী।

বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মেট্রোরেলের উত্তরা ডিপোর সামনে তারা এক মানববন্ধনে এসব দাবি করেন।

তাদের দাবি গুলো হলো­­- ১। বর্তমান বেতন কাঠামো অনুযায়ী ১-৯ম গ্রেড পর্যন্ত জাতীয় বেতন স্কেল এর ২.৩ গুণ হারে এবং ১০-২০তম গ্রেড পর্যন্ত জাতীয় বেতন স্কেল- এর ২.০ গুন হারে প্রদান করা হচ্ছে; যা পরিবর্তন করে বৈষম্যহীন বেতন কাঠামো অর্থাৎ সকল গ্রেডের একই রকম বেতন কাঠামো যা জাতীয় বেতন স্কেল-২০১৫ এর ২.৩ গুণ হারে যোগদানের তারিখ হতে বকেয়াসহ প্রদান করতে হবে। ২। চাকুরীতে যোগদানের তারিখ হতে বকেয়াসহ সিপিএফ সুবিধা প্রদান করতে হবে। ৩। অন্যান্য সকল সরকারী মালিকানাধীন কোম্পানি ও অন্যান্য দেশের মেট্রোর সাথে সমন্বয় করে পদোন্নতি ব্যবস্থা চালুকরণসহ সকল ধরনের ভাতাদি সম্বলিত সার্ভিস রুলস দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রদান করতে হবে। ৪। শিক্ষানবিশকাল শেষে অন্যান্য সকল সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানির ন্যায় যোগদানের তারিখ হতে স্বামীকরণ (নিয়মিতকরণ) করতে হবে। ৫। পেটশন ও ডিপোসহ সকল স্থানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাসহ পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত করে ডিউটি প্রদান করতে হবে। ৬। সর্বোপরি কর্মক্ষেত্রে স্বৈরাচারী মনোভাব ও বৈষম্যমূলক আচরণ এবং ব্যাক্তিগত আক্রোশের বহিঃপ্রকাশ না ঘটানো।

এছাড়াও শিক্ষানবিশকাল শেষে স্থায়ীকরণ করতে হবে; স্টেশন ও ডিপোসহ সব স্থানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাসহ পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে; কর্মক্ষেত্রে স্বৈরাচারী মনোভাব ও বৈষম্যমূলক আচরণ এবং ব্যক্তিগত আক্রোশের বহিঃপ্রকাশ ঘটানো যাবে না।

মানববন্ধনে তারা বলেন, ২০১৩ সালের ৩ জুন শতভাগ সরকারী মালিকানাধীন কোম্পানি হিসাবে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড গঠন করা হলেও অদ্যাবধি উক্ত প্রতিষ্ঠানের সার্ভিসরুলস প্রণয়ন করা হয়নি। এতে উক্ত প্রতিষ্ঠানে ১০-২০ তম গ্রেডে কর্মরত প্রতিটি জনবল বছরের পর বছর চরম বৈষম্য, স্বেচ্ছাচারিতা, স্বৈরাচারিতা, অন্যায়, জুলুম ও অবিচারের শিকার। প্রতিষ্ঠার পর থেকে অদ্যাবধি সার্ভিস রুলস প্রণয়ন না করায় প্রতিটি কর্মচারী বাংলাদেশের সরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চলমান সকল সুযোগ সুবিধা হতে বঞ্চিত হচ্ছে। বৈষম্যমূলক বেতন কাঠামোর ফলে প্রতিটি কর্মচারী আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রন্থ হচ্ছে। পাশাপাশি কর্মচারীরা বছর বছর ধরে সকল প্রকার সুবিধা (সিপিএফ, পদোন্নতি, ঝুঁকিভাতা, শিফটিং ভাতা, যাতায়াত ভাতা, প্রাপ্তি বিনোদন ভাতা, মোবাইল ভাতা, গভঃ হলিডে ভাতা, মাইলেজ ভাতা) বঞ্চিত হয়ে আসছে। বৈষম্যমূলক ছুটি (সপ্তাহে ছয়দিন ডিউটি) প্রথা চালুর ফলে প্রতিটি কর্মী অদ্যাবধি সকল নৈমিত্তিক ছুটি, অর্জিত ছুটি, প্রাপ্তি বিনোদন ছুটি, চিকিৎসা ছুটি, শিক্ষানবিশ ছুটিসহ অন্যান্য ছুটি সমূহ (সকল ধরনের সরকারি ছুটি) হতে বঞ্চিত হচ্ছে এবং ছুটির দিনে ডিউটির বিপরীতে প্রদেয় পাওনা হতে বঞ্চিত হচ্ছে। তাছাড়াও অন্যান্য রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের ন্যায় শিক্ষাগত যোগ্যতা বিবেচনা করে স্কিল্ড মেইনটেইনার, সেমি স্কিল্ড মেইনটেইনার, কাস্টমার রিলেশন এ্যাসিস্ট্যান্ট, টিকেট মেশিন অপারেটর পদসমূহ নিম্নতর গ্রেডে হওয়ায় মেট্রোকর্মীরা প্রতিনিয়ত বঞ্চনা ও বৈষম্যের শিকার হচ্ছে যা উন্নীত করে বৈষম্যে দূর করা প্রয়োজন।

তারা আরও অভিযোগ করেন, নিয়োগবিধি অনুযায়ী দুই বছর সন্তোষজনক চাকুরি শেষে স্থায়ীকরণের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৩-৫ বছর অতিবাহিত হলেও কাউকে স্থায়ী করা হচ্ছে না। ফলে প্রতিটি কর্মীকে অত্যন্ত উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও হতাশায় দিনানিপাত করতে হচ্ছে। বার বার মৌখিক আশ্বাস দিলেও কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নিতে গড়িমসি ও দীর্ঘসূত্রিতা করে আসছে।