সংগীতশিল্পী তাপস ও চিত্রনায়িকা শবনম বুবলীর প্রেমের গুঞ্জন চাউর হয়েছে। এই গুঞ্জনের সূত্রপাত, কৌশিক হোসেন তাপসের স্ত্রী ফারজানা মুন্নীর ফেসবুক থেকে। এরপরই ফাঁস হয় মুন্নী-অপুর কল রেকর্ড। সম্পাদনা করে কল রেকর্ডে শুধু মুন্নীর কণ্ঠ রাখা হয়।
এই কল রেকর্ডে বুবলীর প্রেমের কথা প্রকাশ করেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা কম হয়নি। কয়েকদিন আগে দেশের একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব বিষয় নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন মুন্নী। সেখানে তিনি জানান, অপু বিশ্বাস উদ্দেশ্যপ্রোণিতভাবে কল রেকর্ড ফাঁস করেছেন।
মুন্নীর এই মন্তব্যের পর ফেসবুকে একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন অপু বিশ্বাস।
রোববার (১৭ ডিসেম্বর) ভোর ৪টা ৪৬ মিনিটে প্রকাশ করা ভিডিওতে এ নায়িকা বলেন, ‘আমি অত্যন্ত পছন্দ করি গানবাংলার (টেলিভিশন চ্যানেল) মুন্নী ভাবি ও তাপস ভাইয়াকে। আমার এত বছরের ক্যারিয়ারে কখনো তাদের সঙ্গে দেখা হয়নি। এমনকী গানবাংলা চ্যানেলটি কোথায় অবস্থিত— সেটাও আমি চিনি না। তাদের সাথে কথা হয়নি বা কাজ হয়নি। তবে হাতিরঝিল প্রাঙ্গণে অনেক বড় করে তারা একটি প্রোগ্রাম করেছিল। আমি যদি ভুল না করে থাকি, সেখানে বাংলাদেশের প্রত্যেক আর্টিস্ট পারফর্ম করেছেন। খুবই ভালো কথা। কারণ একজন আর্টিস্টের জন্য গানবাংলা উঁচু একটি প্ল্যাটফর্ম। আমার হয়ত কখনো সুযোগ হয়নি অথবা সুযোগের জায়গাটা খুঁজতে যাইনি যে, আমার গানবাংলার কাজ করা উচিত ছিল।’
ফারজানা মুন্নীর সেই ফেসবুক স্ট্যাটাস প্রসঙ্গে অপু বিশ্বাস বলেন, ‘একমাস আগে আপনারা দেখেছিলেন যে, মুন্নী ভাবি ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। যার নামটা বলতে আমার ঘৃণা লাগে, কিন্তু নাম কিছু কিছু জায়গায় উল্লেখ না করলে বুঝতে অসুবিধা হয়। আপনাদের ক্লিয়ার করার জন্য আজকে নামটা বলতে হচ্ছে। সেটি হচ্ছে বুবলী। বুবলীর একটি কথা নিয়ে মুন্নী ভাবি স্ট্যাটাস দিয়েছিল এরকমভাবে যে, বুবলী অ্যান্ড তাপস হ্যাভিং রিলেশনশীপ। অপু বিশ্বাসের লাইফে যেভাবে ঝামেলা করেছে এবং যেভাবে বুবলী বাচ্চা পেটে নিয়েছে; সে মুন্নী ভাবি ও তাপস ভাইয়ার মাঝে এ রকমই একটি সম্পর্ক তৈরি করতে যাচ্ছে। সেটা (ফেসবুক স্ট্যাটাস) ছিল ১৩-১৫ মিনিটের মতো। তারপর স্ট্যাটাসটি উধাও হয়ে যায়। উধাও হওয়ার পর একটা গ্রুপ বলে যে, আমি হ্যাক করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি কিন্তু মুন্নী ভাবির সঙ্গে কখনো কথাই বলিনি। এমনকী তার ফোন নম্বরও জানি না। তাহলে রাত ৩টায় যখন তিনি স্ট্যাটাসটা দিলেন, আমি তো ওনাকে বলিনি যে, বুবলীর সাথে তাপস ভাইয়ার সম্পর্কের মধ্যে আমার নাম ধরে স্ট্যাটাসটা দিতে। আমি কি বলেছি যে, অপু বিশ্বাসের লাইফটা নষ্ট করেছিল বুবলী। আমি তো তাকে বলিনি। তাহলে কেন ওই সময় আমার নামটা উল্লেখ করে লিখল?’
মুন্নীর সঙ্গে ফোনালাপ প্রসঙ্গে অপু বলেন, ‘একটি টেলিভিশন চ্যানেলের ছোট ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলার একটি পর্যায়ে তাকে বললাম, মুন্নী ভাবির নম্বরটা কি আমাকে দিতে পারবে? কারণ আমি আসলে কিছু ফোনকল বুঝতে পারছিলাম। মুন্নী ভাবির সঙ্গে আমার সরাসরি কথা বলার সুযোগ হয়নি। কিন্তু তিনি যে পাওয়ারফুল পারসোনালিটি, আমি সত্যিই পছন্দ করি। দেখুন বেলাশেষে, প্রত্যেকটা মেয়েই তার স্বামীকে ভালোবাসে। আজকের ভিডিওর মাধ্যমে মুন্নী ভাবিকে শ্রদ্ধা জানাতে চাই, কারণ তিনি ফার্স্ট প্রায়োরিটি ফ্যামিলিকে দিয়েছেন। আপনি যে কথাগুলো বলেছেন, তা নিয়ে আমার কষ্ট বা মনখারাপ নেই। অবশ্যই প্রত্যেকটা মানুষ তার সংসার বাঁচাতে চায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই যে তার (ফারজানা মুন্নী) সংসারে টানাপড়েন, সেই একই তৃতীয় পক্ষ। যে তৃতীয় পক্ষ আমার সংসারটাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। সরি টু সে ভাবি; আপনি যেমন একটি ইনফরমেশন দিয়েছেন যে, একটি ফোন এসেছে রাত ৩টায়। সেখানে অপু বিশ্বাস লেখা। কাইন্ড ইওর ইনফরমেশন, ট্রু-কলারে যে নামটা দিয়ে রেজিস্ট্রার করা হয়, সে নামটা ভেসে আসে। আমার নম্বরটি থেকে যদি আপনার নম্বরে কল যায়, তাহলে ওখানে নাম উঠবে আব্রাম খান। কারণ, আমার ওইভাবে রেজিস্ট্রি করা। মুন্নী ভাবি আমাকে প্রথমে ফোন করেছিল মোবাইল ফোনে। তখন তাকে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করতে বলি। কারণ, বিষয়টি সেনসেটিভ। আমার সাথে কিন্তু ওনার হোয়াটসঅ্যাপে কথা হয়েছে।’
সাক্ষাৎকারে মুন্নী জানিয়েছিলেন, তিনি কেবল অপুর কথার পরিপ্রেক্ষিতে কথাগুলো বলেছেন, যে কল রেকর্ড পরে ফাঁস হয়।
এ প্রসঙ্গে অপু বলেন, “উনি (ফারজানা মুন্নী) এতটা ডিস্টার্ব ছিল যে, আমার কোনো কথাই বলতে হয়নি। নিজেই বলছিল। তিনি আমাকে বলেন ‘আমি আর এই সংসারে থাকব না’। আমি তখন তাকে বলেছি, ‘ভাবি আপনি আমাকে অপু ডেকেছেন না! আমাকে আদর করেছেন না! ওই মহিলার (বুবলী) ইনটেনশন হচ্ছে, প্রতিটা সংসার ভাঙানো। শাকিব অত্যন্ত সরল-সোজা একজন মানুষ। সেই সরল-সোজা মানুষকে যা-তা করে ইউজ করতে পেরেছে সাইনবোর্ডের মতো। আমি আপনার ক্ষেত্রে এমনটা হতে দেব না। দরকার হলে বলেন, আমি ভাইয়ার সঙ্গে কথা বলব। আপনি ভাইয়াকে ছেড়ে যাবেন, এটা স্বপ্নেও চিন্তা করবেন না। আপনি যদি এই কাজ করেন, তাহলে এখনই ফোনটা কেটে দেব’। আমি যখন তাকে বললাম, আমি ভাইয়ার সাথে কথা বলি। তখন ভাবি বলল, ‘অপু তোমাকে সে তার কাছে এতটা খারাপ বানিয়েছে যে, তুমি কীভাবে কথা বলবা। সেই স্পেসটাই তো রাখেনি’। আমার বাচ্চাকে নিয়ে সে (বুবলী) বাজে মন্তব্য করেছে।”
তিনি আরো বলেন, ‘ভাবি (ফারজানা মুন্নী) বলছিল, আমি তাকে প্রশ্ন করছিলাম। সে উত্তর দিচ্ছিল। ভাবি আপনি স্ট্রং পারসোনালিটির মানুষ। আমি এখনো আপনাকে রেসপেক্ট করি। তাহলে অযথা কেন আমার মতো নির্দোষ মেয়ের সম্মানহানী করবেন?’
ফারজানা মুন্নীর সঙ্গে শাকিবের ফোনালাপ নিয়ে অপু বলেন, ‘ভাবি তো শুধু আমাকে না। তিনি শাকিবকে ফোন করছিলেন। শাকিব ফোন ধরছিল না। তখন ভাবি আমাকে বলছিল, শাকিব আমার নম্বর ধরছে না। তখন তাকে বারবার শাকিবের নম্বর মিলিয়ে দিয়েছি। শাকিবকে মেসেজ পাঠিয়েছি তার সঙ্গে কথা বলার জন্য।’
ভিডিও বার্তায় ফারজানা মুন্নীর সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা আদান-প্রদানের স্ক্রিনশটও দেখান। পাশাপাশি কয়েকটি বার্তা পড়েও শোনান অপু।