বুধবার শিক্ষার্থীদের কঠোর কর্মসূচি, ঘোষণা মঙ্গলবার

:: পাবলিক রিঅ্যাকশন রিপোর্ট | পাবলিকরিঅ্যাকশন.নেট
প্রকাশ: ৬ মাস আগে

সরকারি সব গ্রেডের চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে বুধবার (১০ মার্চ) কঠোর কর্মসূচি পালন করবেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এদিন দেশব্যাপী সর্বাত্মক ব্লকেড কর্মসূচি পালন করতে পারেন তারা।

সোমবার (৮ জুলাই) রাত সাড়ে ৮টায় শাহবাগ থেকে এমনটি জানান আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।

তিনি বলেন, মঙ্গলবার সড়ক ব্লকেডের আওতামুক্ত থাকবে। বুধবার ৬৪ জেলায় কঠোর কর্মসূচির প্রস্তুতির জন্য মঙ্গলবার সারা দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক এবং অনলাইনে-অফলাইনে গণসংযোগ করা হবে।

মঙ্গলবার বিকেলে অনলাইন ব্রিফিংয়ে বুধবারের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। তবে ছাত্র ধর্মঘট ও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি চলবে বলে জানান সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।

এদিকে ধানমন্ডিতে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে এক বৈঠকের পর শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, কোটার বিষয়ে হাইকোর্টের রায়ই চূড়ান্ত।

শিক্ষামন্ত্রীর এমন মন্তব্যে শাহবাগের আন্দোলন থেকে ‘ভুয়া, ভুয়া’ বলে দুয়োধ্বনি দেন কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা।

এর আগে সরকারি সব গ্রেডের চাকরিতে যৌক্তিক পর্যায়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ, বাংলামোটর, সায়েন্সল্যাব, মৎস্যভবন, পল্টন মোড়, গুলিস্তানসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান সাড়ে তিন ঘণ্টার বেশি সময় ধরে অবরুদ্ধ রাখেন তারা। পরে তারা শাহবাগে জড়ো হন।

আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, নিয়মতান্ত্রিকভাবে আমাদের কর্মসূচি পালন করছি। আমরা বাধ্য হয়েই রাজপথে নেমে এসেছি। ছাত্ররা সহজে মাঠ ছাড়বে না। আমাদের আহ্বান থাকবে আপনারা দায়িত্বশীল আচরণ করুন। তা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হব।

তিনি বলেন, অর্ধবেলা ব্লকেডে থেমে থাকব না। আমরা সর্বাত্মক ব্লকেড ঘোষণা করব। মঙ্গলবার সারা দেশে অনলাইন অফলাইন গণসংযোগ করব। অর্থাৎ সর্বাত্মক ব্লকেডের প্রস্তুতি চলবে। বুধবার থেকে সর্বাত্মক ব্লকেড।

তিনি আরও বলেন, আমাদের যে এক দফা দাবি এটি আদালতের হাতে নেই। খেলার বল এখন সরকারের কোর্টে। সরকারকে বলব আমাদের দাবি অবিলম্বে বাস্তবায়ন করুন। আইন পাস করে আমাদের এক দফা দাবি পূরণ করুন। এখানে আদালতের কোনো এখতিয়ার নেই। সরকার চাইলেই এটা সম্ভব।

এ সময় শিক্ষার্থীদেরকে বাধা বা হয়রানি করা হলে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

আন্দোলনের অন্যতম আরেক সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমরা আজকে মন্ত্রীর কথায় মর্মাহত হয়েছি। বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগের মধ্যে এনে হাইকোর্ট দেখানো হচ্ছে, অন্ধকে হাইকোর্ট দেখানো হচ্ছে। আমাদের ধৈর্যের পরীক্ষা নেবেন না। আমরা ফিরে যাওয়ার জন্য রাজপথে আন্দোলনে নামি নাই। দাবি আদায়ের আগ পর্যন্ত এই আন্দোলন চালিয়ে যাবো। আপনারা দায়িত্বশীলরা সহজ বিষয়কে ঘোলা করছেন। আপনাদের জন্যই শিক্ষার্থীদের মাঝে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হচ্ছে। আপনাদের ওপর আস্থা হারাচ্ছি।

তিনি বলেন, স্পষ্ট করে বলতে চাই, শিক্ষার্থীদের যেকোনো ক্ষতির দায়ভার আপনাদের নিতে হবে। কেউ আহত হলে অসুস্থ হলে তার দায়ভার আপনাদের ঘাড়ে বর্তাবে। আমরা রাস্তায় থাকব আর আপনারা এসে রুমে বসে রায় দেবেন তা আমরা মেনে নেব না। অতি দ্রুত আমাদের সঙ্গে সমন্বয় না করেন তাহলে বুঝব ছাত্র সমাজের পার্লস বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছেন।

আন্দোলনের আরেক অন্যতম সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, আজকে মন্ত্রী বলেছেন হাইকোর্টের রায়ের ওপর তাদের কথা নেই। হাইকোর্টের রায়ই নাকি চূড়ান্ত। এমন বক্তব্যকে আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। দেশের সব শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করে নেবে।

এর আগে বিকেল সাড়ে ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে বাংলা ব্লকেড কর্মসূচির সূচনা করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিকেল সোয়া ৪টা নাগাদ রাজধানীর কাঁটাবন, মিন্টু রোড, মৎস্যভবন, চানখারপুল, বাংলামোটর, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেটে বাংলা ব্লকেড করেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের ঘোষিত বর্তমান এক দফা দাবি হলো, সব গ্রেডে সব প্রকার অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করতে হবে। সংবিধানে অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাস করে কোটা পদ্ধতিকে সংশোধন করতে হবে।