দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকেই বিএসএসএমইউ এর ডি ব্লকের সামনে উৎসুক জনতা ভিড় করতে শুরু করে।
তবে হাসপাতালে কোন বিশৃঙ্খলা না করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান বাংলাদেশ ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি এবং মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল দেলোয়ার হোসেন।
সোমবার (১৪ আগস্ট) রাত সাড়ে নয়টার দিকে এ চিত্র দেখা যায়।
তিনি এ সময় উপস্থিতদের উদ্দেশে বলেন, আমাদের দলের স্পন্দন, আমাদের হৃদয়ের ডাক দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী আমাদের মাঝ থেকে বিদায় নিয়েছেন (ইন্নানিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহী রাজিউন)। আমি সমস্ত অনুরাগী ভাইদের অনুরোদ করবো শোককে শক্তিতে পরিণত করুন। ধৈর্য ধারণ করুন। কোনো রকম বিশৃঙ্খলা করা যাবে না, এটি আমাদের বৈশিষ্ট নয়।
তিনি আরও বলেন, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মরদেহ আমরা নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে গিয়ে জানাজা করব। সে পর্যন্ত আপনারা ধৈর্য ধারণ করুন। এটি হাসপাতাল, অসংখ্য রোগী রয়েছে, তাদের যেন কোন সমস্যা বা কষ্ট না হয় সেদিকে সবার খেয়াল রাখতে হবে।
আরও পড়ুন: দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী মারা গেছেন
চকবাজার থেকে আশা কামাল হোসেন নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, তিনি সাঈদীর অনুসারী। মৃত্যুর খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে চলে আসেন।
তিনি বলেন, শুধু আমি একা নই, অনেকে এসেছেন তাকে শেষবার দেখার জন্য।
সাঈদীর মৃত্যুর পর বিএসএমএমইউ এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির রমনা জোনের সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ সালমান ফার্সী।
আরও পড়ুন: হাসপাতালে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর অনুসারীদের ভিড়
সাইদীর মৃত্যুর বিষয়ে বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ সোমবার রাতে বলেন, ‘দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্ডিওলজি বিভাগে চিকিৎসাধীন ছিলেন। রাত ৮টা ৪০ মিনিটে তিনি ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন। যেহেতু তিনি আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ও কাশিমপুর কারাগারে ছিলেন, এখন কারা কর্তৃপক্ষ তার মরদেহ নিয়ে যাবে।’
আরও পড়ুন: হার্ট অ্যাটাক হয়েছে সাঈদীর, লাগতে পারে রিং
তবে কাশিমপুর কারাগার কর্তৃপক্ষ জানায়, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির মৃত্যুর পর লাশ কারাগারে আনার রেওয়াজ নেই। সাধারণত কারা কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে লাশ পরিবারে কাছে হস্তান্তর করা হয়।
তারা জানায়, হাসপাতালে ভর্তির পর দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ঢাকা জেলা কারা কর্তৃপক্ষের অধীনে চলে যান।
আরও পড়ুন: হাসপাতালে ভর্তি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী
এর আগে রোববার রাত ১০টা ৪০ মিনিটে বিএসএমএমইউতে আনা হয় সাঈদীকে। তারও আগে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বুকে ব্যথাজনিত সমস্যার কারণে তাকে (দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী) কাশিমপুর কারাগার থেকে প্রথমে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। তার বুকে ব্যথা, হার্টে সমস্যা, প্রেশার ও ডায়াবেটিসজনিত কিছু সমস্যা ছিল। সেখানে তার ইসিজিসহ যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে করে সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে বিএসএমএমইউ পাঠানো হয়।
২০১০ সালের ২৯ জুন রাজধানীর শাহীনবাগের বাসা থেকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার হন সাঈদী। পরে ২ আগস্ট মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।