বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিকে ঘিরে রাজধানীকে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এরই মধ্যে কয়েকটি স্থানে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
ঢাকার প্রবেশমুখ গাবতলীতে সাঁজোয়া যানসহ সতর্ক অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, গাবতলীতে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের অবস্থান কর্মসূচিকে ঘিরে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
এদিকে, আমিন বাজারে যুবলীগের কর্মীদের সমাবেশ চলছে। পাশে চলছে রান্না। আর গাবতলীতে বিএনপি পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচী অনুযায়ী অবস্থান কর্মসূচী পালনর উদ্দেশ্যে জড়ো হয়। এ সময় বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমানের সঙ্গে পুলিশের ধস্কাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। আমানকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যেতে চাইলে মহিলা কর্মীরা পুলিশের কাছ থেকে তাকে ছিনিয়ে নেন।
তবে পরবর্তীতে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ।
আশেপাশের এলাকা ও গলি থেকে বিএনপি সন্দেহে অনেককে আটক করা হয়েছে গেছে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটির অভিযোগ, কিছু ধরেছে পুলিশ, বাকি সব আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের কর্মীরা।
এ প্রসঙ্গে ৯৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের জয়েন্ট সেক্রেটারি নবীন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পুলিশ আমাদের ধরার জন্য অনুমতি দিয়েছ, তাই ধরছি।’
ডিএমপি জয়েন্ট কমিশনার লিটন কুমার সাহা বলেন, গ্রেপ্তার না আটক সেটা পরে জানাবো। এখানে কাউকে সভা বা অবস্থান করতে দেবো না। আওয়ামী লীগ যে সভা, মিছিল করছে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাদেরও নিষেধ করা হয়েছে।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী রাজধানীর নয়াবাজারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করার কথা ছিল বিএনপিসহ দলটির যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গীদের। তবে, হঠাৎ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে বিএনপি গাবতলী, চিটাগাং রোড ও ধোলাইখাল মোড়ে অবস্থান নেয়। সেখানে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতাকর্মীদের ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
ওয়ারী জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) জিয়াউল আহসান তালুকদার বলেন, একটি মিছিল নিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীরা বাবুবাজারের দিকে যাচ্ছিল। পূর্ব অনুমতি না থাকায় ধোলাইখালে মিছিল আটকে দিলে তারা পুলিশের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে টিয়ারসেল ও জলকামান নিক্ষেপ করে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এদিকে রাজধানীর নয়াবাজারে কর্মসূচি পালনের সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে পুলিশ ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় তার মাথার একপাশ থেকে রক্ত ঝরতে দেখা যায়। সংঘর্ষের সময় সেখানে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীও উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া রায় সাহেব বাজার এলাকা থেকে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদসহ ৮-১০ জনকে পুলিশ আটক করেছে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।
এর আগে শনিবার (২৯ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে আমিনবাজার ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ঢাকাগামী লেনে পুলিশের ব্যাপক উপস্থিত দেখা যায়।
পুলিশ জানায়, আমিনবাজারে ২০ জন করে পাঁচ প্লাটুন পুলিশ সদস্য রয়েছে। এছাড়া এপিসি বুলেট প্রুফ একটি সাদা রংয়ের সাঁজোয়া যান অবস্থান নিয়েছে। তবে দুই দলের কোনো নেতাকর্মীকে দেখা যায়নি।
সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দিপক চন্দ্র সাহা বলেন, আমরা সকল বিষয়ে নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সার্বক্ষণিক তৎপর রয়েছি। যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আমাদের পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত রয়েছে৷