বিএনপি’র অবরোধের প্রথম দিনে নিহত ১, বৃহত্তর সিলেটে বুধবার হরতাল

:: সিলেট ব্যুরো ::
প্রকাশ: ১ বছর আগে
সিলেটে অবরোধের খন্ডচিত্র। ইনসেটে নিহতের ছবি

বিএনপির ডাকা তিন দিনের অবরোধের প্রথম দিনে সিলেটে একজন নেতা নিহত হয়েছে। দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে তিনি যুবদলের কর্মী। আহত হয়েছে পুলিশসহ অর্ধশতাধিক। যুবদলের নেতার নিহতের প্রতিবাদে আগামীকাল বুধবার হরতালের সকাল – সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে যুবদল।

মঙ্গলবার (৩১অক্টোবর) সন্ধ্যায় প্রতিবাদে সমাবেশে হরতালের ডাক দেন।

এর আগে বেলা ১টার দিকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ উপজেলার যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য দিলু আহমদ জিলু। এর আগে সিলেটের বিভাগে বিভিন্ন স্থানে বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের অনুসারীরা সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে অবরোধ করেন।

এদিকে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার লালাবাজার এলাকায় পিকেটিং করতে গিয়ে আহত হন যুবদলের নেতা জিলু। যুবদলের অভিযোগ করে জানান, পিকেটিং এর সময় ধাওয়া করে পুলিশের গাড়ি ধাক্কা দিলে মোটরসাইকেল থেকে পড়ে জিলু আহত হন। পরে পুলিশ তাকে আটক করে নিয়ে যায়, আর হাসপাতালে মৃত্যু হয়।

অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশ জানান, পিকেটিংকালে পুলিশের গাড়ি দেখে পালানোর সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সাথে জিলুকে বহনকারী মোটরসাইকেলের ধাক্কা লাগে। এতে আহত হন জিলু। স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করার পর জিলু মারা যান। এদিকে, জিলুর মৃত্যুর জন্য পুলিশকে দায়ি করে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে সিলেট শহরের তাঁতীপাড়া থেকে মিছিল বের করে যুবদল। মিছিলটি কোর্ট পয়েন্টে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে। ওই সমাবেশ থেকে আগামীকাল বুধবার সিলেট বিভাগে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেওয়া হয়।

এ প্রসঙ্গে সিলেট জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মকসুদ আহমদ বলেন, আমাদের দলের নেতা দিলু আহমদ জিলুকে পুলিশ গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যা করেছে। এর প্রতিবাদে আমরা সিলেট বিভাগে সকাল সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছি। অপরদিকে একই দিন হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলর মিরপুরে বাজারে বেলা ১২টার দিকে অবরোধের সমর্থনে আসা বিএনপির কর্মীদের সাথে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে পুলিশ দেড়শ রাউন্ড টিয়ারশেল ও ফাঁকা গুলি নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষে ৫ পুলিশ সদস্যসহ আহত উভয় দলের আহত হয়েছে কমপক্ষে ৩০ জন নেতাকর্মী। এর মধ্যে আশঙ্কা জনক অবস্থায় শাহ আলম নামে পুলিশের এক কনস্টেবলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

জানা যায়, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে মিরপুর বাজারে বিএনপির নেতাকর্মীরা অবরোধের সমর্থনে পিকেটিং শুরু করে। এসময় শান্তি সমাবেশে পাহারায় থাকা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে উভয় দলের নেতাকর্মীরা লাঠিসোঠা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা। ঘন্টা ব্যাপী চলা সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়। সংঘর্ষের সময় পুরো মিরপুর বাজার এলাকায় সৃষ্টি হয় আতঙ্ক। খবর পেয়ে পুলিশ দেড়শ রাউন্ড টিয়ারশেল ও ফাঁকা গুলি নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে। সংঘর্ষে আহতদের বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সেসহ বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে বাহুবল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মশিউর রহমান জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৩ বিএনপি নেতাকে আটক করেছি।

সিলেট/ অমিতা সিনহা/ ৩১ অক্টোবর ২০২৩ ইং।