স্পোর্টস ডেস্ক:
বিশ্বকাপে নিজেদের শুরুর ম্যাচে ধাক্কা খেলেও এখন তারা সেরা চার দলের একটি। স্বাভাবিকভাবে আর্জেন্টাইনের উচ্ছ্বাসের শেষ নেই। বলা যায়, আর্জেন্টিনা তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ জিতবে- এই আশার পালে বাড়তি হাওয়া দিচ্ছে দূর-দূরান্ত থেকে কাতারে যাওয়া হাজার হাজার দর্শক।
সমর্থকদের বাঁধভাঙা উল্লাস বাড়তি প্রেরণা জোগাচ্ছে লিওনেল মেসিদের। তাদের কারণেই কানায় কানায় পরিপূর্ণ কাতারের স্টেডিয়ামগুলোতে ঘরের মাঠের মতো সমর্থন পাচ্ছে আর্জেন্টাইন ফুটবল দল। বলা হচ্ছে- সমর্থকদের কারণে কাতার বিশ্বকাপে ‘বাড়তি সুবিধা’ পাচ্ছে আর্জেন্টিনা
আর্জেন্টিনার বোম্বোনেরা বা মনুমেন্টাল স্টেডিয়ামের মতো ভেন্যুগুলো দর্শকপ্রিয়তার কারণে বিখ্যাত। এবারের বিশ্বকাপে দোহার লুসাইল স্টেডিয়ামেও একই ধরনের পরিবেশ তৈরি করেছিলেন আর্জেন্টিনার সমর্থকরা। নীল-সাদা জার্সি, পতাকায় ভরিয়ে তুলেছিলেন বিশাল স্টেডিয়ামটি।
৮৮ হাজার ৯৬৬ আসন বিশিষ্ট লুসাইল স্টেডিয়ামে এরই মধ্যে তিনটি ম্যাচ খেলেছে আর্জেন্টিনা। মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে সেমিফাইনালের মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটিও খেলবে একই মাঠে।
এবারের বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার বেশিরভাগ ম্যাচে শেষ বাঁশি বাজার পরেও খানিকটা বাড়তি সময় মাঠে থেকেছেন আলবিসেলেস্তারা। আবেগপূর্ণ এই সময়টুকু তারা সমর্থকদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। গত শুক্রবার কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে জয়ের পর মেসি বলেছেন, আমরা এখানে এবং আর্জেন্টিনায় যারা রয়েছেন, তাদের সঙ্গে এই মুহূর্তটিকে কাজে লাগাতে চাই।
কাতারে আর্জেন্টাইন দূতাবাসের তথ্যমতে, এবারের বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা দলকে সমর্থনের জন্য ৩৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার মানুষ উপসাগরীয় দেশটিতে গেছেন, যা গোটা টুর্নামেন্টে বিদেশি সমর্থকদের মধ্যে অন্যতম সর্বোচ্চ।
আর্জেন্টিনার এসব সমর্থকের মধ্যে কাতারে বসবাসরত বাংলাদেশ ও ভারতের হাজার হাজার প্রবাসী কর্মীও রয়েছেন। এ দুটি দেশেই মেসি বাহিনীর ব্যাপক সমর্থন লক্ষ্য করা যায়।
আর্জেন্টিনায় জন্ম নেওয়া সাবেক ফরাসি স্ট্রাইকার ডেভিড ট্রেজেগুয়েট বলেন, দল হিসেবে আর্জেন্টিনা হয়তো ফ্রান্সের পর্যায়ের নয়। তবে তারা এমন একটি দল, যারা এখানে সমর্থকদের থেকে উপকৃত হচ্ছে।
কোয়ার্টার ফাইনালে পেনাল্টি শুটআউট জয়ের নায়ক আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ বলেছেন, আমি যা করি, সাড়ে চার কোটি (আর্জেন্টিনার জনসংখ্যা) মানুষের জন্য করি। তারা খারাপ অর্থনৈতিক সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই মুহূর্তে মানুষকে আনন্দ দেওয়াই সবচেয়ে ভালো কাজ, যা আমি করতে পারি।
ট্রেজেগুয়েটও মনে করেন, আর্জেন্টিনার খেলোয়াড় ও সমর্থকদের মধ্যে দৃঢ় বন্ধনের পেছনে অর্থনৈতিক সংকটের ভূমিকা রয়েছে। সম্প্রতি আর্জেন্টিনায় আকাশচুম্বী মূল্যস্ফীতির কারণে আর্থিক অনটনে রয়েছেন বহু বাসিন্দা।
বুয়েন্স আয়ার্সের ফকল্যান্ডস মিউজিয়ামের পরিচালক এডগার্দো এস্তেবান বলেন, আর্জেন্টিনা জটিল, রাজনৈতিকভাবে ভগ্ন একটি দেশ। কিন্তু কিছু বিষয় রয়েছে যা গোটা দেশকে একত্রিত করে। যেমন- ফকল্যান্ডস ও ফুটবল।
সূত্র: এএফপি, গালফ নিউজ