মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী আরাকান আর্মির মধ্যে চলমান যুদ্ধে সীমান্ত পেড়িয়ে বাংলাদেশে আসছে গুলি ও মর্টার শেল। ইতিমধ্যে মর্টারশেলের আঘাতে এক বাংলাদেশি এবং এক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে।
নিহত বাংলাদেশির নাম হোসনে আরা (৫৫)। আর গুলিতে আহত হয়েছেন দুই বাংলাদেশি।
উড়ে আসা গোলার আঘাতে পুড়ে গেছে অন্তত তিনটি বাড়ি। এদিকে মিয়ানমারে বাংলাদেশের কক্সবাজার সীমান্তের কাছেই একটি বিজিপি ক্যাম্প দখলে নিয়েছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)।
রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাখাইন রাজ্যের মংডু জেলার উত্তরাঞ্চলে তংপিয়ো লেট ইয়ার নামে ক্যাম্পটি দখল করে নেয় গোষ্ঠীটির যোদ্ধারা। মিয়ানমারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এ খবর দিয়েছে।
সূত্র জানায়, প্রচণ্ড লড়াইয়ের মধ্যে রোববার তংপিয়ো লেট ইয়ার ক্যাম্প দখল করে নেয় আরাকান আর্মি। বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি জানিয়েছে, দখলের পর তল্লাশিকালে ক্যাম্পে ব্যাপক পরিমাণে অস্ত্র ও গোলাবারুদের পাশাপাশি বেশ কয়েকজন জান্তা সেনার মরদেহ পাওয়া গেছে।
থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দেশ ও জনগণের পক্ষে লড়াই করতে গিয়ে কয়েকজন বিদ্রোহী যোদ্ধাও নিহত হয়েছে। বার্মা নিউজ ইন্টারন্যাশনাল নামে স্থানীয় এক সংবাদমাধ্যমের মতে, রোববার ভোরে মংডু জেলার উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত কৌশলগতভাবে দুটি গুরুত্বপূর্ণ সেনা শিবির তংপিয়ো লেট ওয়ে ও তংপিয়ো লেট ইয়ার লক্ষ্য করে একযোগে আক্রমণ করে যোদ্ধারা।
মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের জেরে গত কয়েকদিনে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ৯৫ সদস্য অস্ত্রসহ বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। তাদেরকে নিরস্ত্রীকরণ করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
প্রতিবেদন মতে, বাংলাদেশে পালিয়ে আসা এই ৯৫ জনের মধ্যে মংডুর তংপিয়ো লেট ইয়ার ক্যাম্পের সদস্যরাও রয়েছে। মিয়ানমারের রাখাইনে গুলিবিদ্ধ হয়ে সে দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) সদস্য ও সাধারণ অনেক নাগরিক আশ্রয় নিচ্ছেন বাংলাদেশে। এরই মধ্যে আহত বেশ কয়েকজনকে কক্সবাজার ও বান্দরবানের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অনেকে আশ্রয় নিয়েছেন বিজিবির বিভিন্ন ক্যাম্পে।
এ ব্যাপারে বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম জানান, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের জেরে এখন পর্যন্ত মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ৯৫ সদস্য অস্ত্রসহ বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন। বিজিবি তাদেরকে নিরস্ত্রীকরণ করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়েছে। এরমধ্যে আহত ১৫ সদস্যর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।