বাংলাদেশে বিচ্ছিন্নভাবে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘঠেছে। এসব খবরে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের জ্যাকসন হাইটস, ডিভারসিটি প্লাজাতে রোববার (১১ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকাল ৫টায় আমেরিকা হিন্দু কোলিশন (Hindu Coalition, USA) সংগঠনের ব্যানারে দীনেশ মজুমদারের সমন্বয়ে একটি প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ পালিত হয়। সমাবেশ থেকে বেশ কিছু দাবি তুলে ধরেন তারা। এ সময় আমেরিকার হিন্দু প্রগতিশীল বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন উপস্থিত ছিল।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের পর থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলা-নির্যাতন-হত্যা অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে এই প্রতিবাদ সভা বিক্ষোভ সমাবেশ পালিত হয়। এতে সংহিত প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের সংখ্যালঘু বিভিন্ন অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন, হিন্দু জাগরণ মঞ্চ, হিন্দু ছাত্র জনতা মঞ্চ সমন্বয়ে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের দাবিকে সমর্থন জানিয়েছেন। আমেরিকা হিন্দু কোলিশনের ঘোষিত আট দফা দাবি হলো—
১। সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচারের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দোষীদের দ্রুততম সময়ে উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করা এবং ক্ষতিগ্রস্তদের যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।
২। অনতিবিলম্বে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা।
৩। সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন করা এবং সংখ্যালঘুদের জন্য ১০ শতাংশ সংসদীয় আসন বরাদ্দ করা।
৪। হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে হিন্দু ফাউন্ডেশনে উন্নীত করা, পাশাপাশি বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টানধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে ফাউন্ডেশনে উন্নীত করা।
৫। দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন এবং অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন যথাযথ বাস্তবায়ন করা।
৬। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংখ্যালঘুদের জন্য উপাসনালয় নির্মাণ এবং প্রতিটি হোস্টেলে প্রার্থনাকক্ষ বরাদ্দ করা।
৭। সংস্কৃত ও পালি শিক্ষা বোর্ড আধুনিকায়ন পূর্বক প্রতিটি থানায় সংস্কৃত কলেজ ও অনাথ আশ্রম প্রতিষ্ঠা করা।
৮। শারদীয় দুর্গাপূজায় ৫ দিন ছুটি বরাদ্দ করতে হবে।
আমেরিকা হিন্দু কোলিশনের বিক্ষোভে সংহতি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক, অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, কাজল দেবনাথ, অবধূত সংঘ বাংলাদেশের আর কে মন্ডল (রবিন), সৎসঙ্গ বাংলাদেশের ধৃত ব্রত আদিত্য, আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ ইসকন বাংলাদেশের সত্য রঞ্জন বাড়ৈ, মাইনরিটি জনতা পার্টি বাংলাদেশের সুকৃতি কুমার মন্ডল, বাংলাদেশ সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন, হিন্দু জাগরণ মঞ্চ, হিন্দু ছাত্র জনতা বাংলাদেশের রাজ সরকার, স্মৃতি রানী প্রমুখ।
এদিকে, সোমবার (১২ আগস্ট) বিকেলে খুলনার শহীদ শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, গত ৫ আগস্ট দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে ২০ জেলায় ৩০টির মতো সংখ্যালঘু বিষয়ক অপরাধের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে অধিকাংশই লুটপাট ও মন্দিরে অগ্নিসংযোগ; যার অধিকাংশই রাজনৈতিক–সংশ্লিষ্ট। এ সময়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি আশাব্যাঞ্জক উল্লেখ করে সেনাপ্রধান বলেন, পরিস্থিতির আরও উন্নতি হলে সব নিয়মিত বাহিনী সন্ত্রাস দমনে তাদের অভিযান পরিচালনা করবে।