পাবলিক রিঅ্যাকশন ডেস্ক:
বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এমনকি শুধু ফ্রিল্যান্সিংকে অনেকে মূল পেশা হিসেবেও বেছে নিয়েছেন। এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে- বাসায় বসে নিজের সুবিধা অনুযায়ী সময়ে কাজ করে আয় করা যায়। তবে ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে আয় নির্ভর করে নিজের উপর। আপনি চাইলে মাসে লাখ টাকাও আয় করতে পারবেন ফ্রিল্যান্সার হয়ে। অনলাইনে আয় রোজগার করার সবচেয়ে সহজ পথ হচ্ছে এই ফ্রিল্যান্সিং। তবে এ জন্য আপনার সঠিক গাইডলাইন প্রয়োজন। ফ্রিল্যান্সিং এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে কাজের দক্ষতা অর্জন করা।
ফ্রিল্যান্সিং কথাটির অর্থ হল মুক্তপেশা। একজন ফ্রিল্যান্সার হল স্বনির্ভর পেশাজীবী যিনি একটি প্রতিষ্ঠানের অধীনে কাজ না করে স্বাধীন ভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বা ক্লায়েন্টের হয়ে কাজ করে থাকে।
আরো ভালোভাবে বললে এটি হল এমন একটি স্বাধীন পেশা যেখানে কোনো বেক্তি নির্দিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ না করে স্বাধীনভাবে একাধিক প্রতিষ্ঠান বা ক্লায়েন্টসদের হয়ে কাজ করে।
আর যে বা যারা ফ্রিল্যান্সিং জব করে তাদের ফ্রিল্যান্সার বা ফ্রিল্যান্স ওয়ার্কার বলা হয়। আর এরা সাধারণত ঘন্টা ও দৈনিক হিসাবে তাদের কাজের জন্য ফি ধার্য করে থাকে।
আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে জানতে চান তাহলে আউটসোর্সিং কি তাও আপনার জানা দরকার।
যখন কোনো কাজ একটি কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানে করা সম্ভব হয়ে ওঠে না বা অন্য কোথাও থেকে করালে দ্রুত ও কম খরচে তা করা সম্ভব হবে তাকে আউটসোর্সিং বলা হয়।
আরো সহজ ভাবে যদি বলি তাহলে ফ্রিল্যান্সাররা যে সমস্ত কাজগুলি করে থাকে বা তাদের দিয়ে যে কাজগুলি করানো হয় তাকে বলে আউটসোর্সিং।
চলুন এবার জেনেনি যে একজন ফ্রিল্যান্সার এবং একজন সাধারণ সেলফ এমপ্লয়েড বা চাকুরীজীবীর মধ্যে কি কি পার্থক্য থাকে।
কর্মসংস্থানের অবস্থা
কাজের সময়
নিয়ন্ত্রণ
কাজের স্থান
কাজের রেট বা বেতন নির্ধারণ
বেকারত্ব
চলুন এবার আমরা জেনেনি যে কিভাবে একজন ফ্রিল্যান্সার হাওয়া যায় বা ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো?
আপনি যদি একজন ফ্রিল্যান্সার হতে চান বা ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করতে চান তাহলে আপনাকে বেশ কিছু জিনিস জানতে হবে।
যেকোন কাজ করার জন্য প্রতিটি মানুষের একটি সাধারণ জ্ঞান বা যোগ্যতা থাকা অবশ্যই দরকার। ফ্রিল্যান্সিং করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনার একটু English পড়তে ও লিখতে জানতে হবে।
তার সাথে ইন্টারনেট সম্পর্কে ভালো ধ্যান ও ধারণা থাকতে হবে এবং একটু কুইক লার্নার হতে হবে যাতে খুব সহজে ইউটিউব ও গুগল থেকে শিখতে পারেন।
সঠিক ভাবে লক্ষ্য স্থির না করে আপনি যদি এগোতে থাকেন তাহলে আপনাকে বিভিন্ন বাধা বিপত্তির এবং অসুবিধার সম্মুখীন হতে হবে।
অর্থাৎ আপনি কি ফ্রিল্যান্সিং পার্ট টাইম কাজ হিসাবে করতে চান নাকি অন্য কাজের পাশাপাশি কিছু এক্সট্রা অর্থ উপার্জনের জন্য করতে চান।
নাকি আবার ফুল টাইম কাজ হিসাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে চাইছেন। এই সমস্ত বিষয়গুলিই পরিষ্কার ও নির্দিষ্ট ভাবে আপনা ঠিক করতে হবে।
তাই ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার আগে অবশ্যই নিজেকে একবার প্রশ্ন করুন এবং স্পষ্ট ও নির্দিষ্ট লক্ষ্য স্থির করার পরেই এগোন।
কারণ আপনি যদি দোনো মনো হয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন তাহলে সেই ক্ষেত্রে আপনার শুধু সময়ই নষ্ট হবে।
ফ্রিল্যান্সার হিসাবে কাজ করার একটি সব থেকে বড় সুবিধা হল আপনি এখানে সমস্ত রকমের কাজের বিকল্প পাবেন।
ইন্টারনেটে করা যায় এরকম প্রায় সব রকমের কাজ আপনি ফ্রিল্যান্সিং হিসাবে করতে পারবেন বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং সাইট থেকে।
যেহেতু সমস্ত কাজগুলি এখানে বলা সম্ভব না তাই কিছু জনপ্রিয় ও কমন কাজগুলি তুলি ধরছি:
এছাড়াও এরকম হাজার হাজার কাজ আছে যা আপনি ফ্রিল্যান্সিং হিসাবে করতে পারবেন।
যদিও আপনি বিভিন্ন রকমের কাজের বিকল্প পাচ্ছেন তাও তার মধ্যে থেকে আপনাকে একটি বা দুটি কাজের বিষয় বা Niche নির্বাচন করতে হবে।
এবং আপনি যে বিষয় বা Niche টি নির্বাচন করবেন তা করার আগে আপনাকে অবশ্যই বেশ কিছু দিক বিবেচনা করতে হবে। যেরকম:
ইন্টারনেটে এরকম বহু ফ্রিল্যান্সিং সাইট বা প্লাটফর্ম আছে যাদের ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস বলা হয়। যেখান থেকে আপনি ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করতে পারবেন।
যেরকম একটি সাধারণ মার্কেটপ্লেসে ক্রয় বিক্রয় হয়ে থাকে সেরকমই বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং সাইট বা প্লাটফর্মেও ফ্রিল্যান্স কাজের ক্রয় বিক্রয় হয়ে থাকে।
এই সমস্ত সাইটে ফ্রিল্যান্সাররা হল কাজের বিক্রেতা আর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বা ক্লায়েন্টস হল ক্রেতা যারা অর্থের বিনিময়ে কাজ করায়।
তো চলুন এবার জেনেনি এরকম কিছু ফ্রিল্যান্সিং সাইট যেখান থেকে আপনি ফ্রিল্যান্সিং কাজ শুরু করতে পারবেন।
তবে কোনো ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্ম বা সাইটে যুক্ত হওয়ার আগে অবশ্যই সেই প্লাটফর্ম সম্পর্কে ভালো ভাবে জেনে ও রিসার্চ করে নেবেন।
ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্ম নির্বাচন করার পর আপনার শেষ যেই কাজটি বাকি থাকে তা হল সেই প্লাটফর্মে নিজের একটি প্রোফাইল তৈরি করা।
আপনাকে আপনার প্রোফাইলের মধ্যে আপনার নাম, প্রোফাইল পিকচার, শিক্ষাগত যোগ্যতা, যে সমস্ত কাজগুলি আপনি করতে চান সেই কাজের দক্ষতা বা অভিজ্ঞতা ইত্যাদি সমস্ত বিষয় প্রদান করতে হবে।
তার সাথে Describe yourself একটি অংশ থাকবে যেখানে আপনার পছন্দ অপছন্দ, কি ভালোবাসেন এবং কাজ সম্পর্কে আপনার বিভিন্ন বক্তব্য যুক্ত করতে হতে পারে।
অর্থাৎ সমস্ত বিষয় নিয়ে আপনাকে এরকম ভাবে আপনার প্রোফাইলটি তৈরি করতে হবে যাতে ক্লায়েন্টসরা আপনার প্রোফাইলের প্রতি আকৃষ্ট হয় ও আপনাকে জবের অফার প্রদান করে।
ফ্রিল্যান্সিং করে আপনি কত টাকা আয় করতে পারবেন তা সম্পূর্ণ আপনার কাজের ক্ষেত্র এবং স্কিল (Skill) বা কাজের দক্ষতার ওপর নির্ভর করছে।
তবে ফ্রিল্যান্সিং করে কেউ মাসে ১০০-১০০০ ডলার আয় করে আবার কেউ ১০,০০০ থেকে ১,০০,০০০ ডলারও আয় করে।
আর আপনি সাধারণত বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্ম থেকে Paypal ও Payoneer এর মাধ্যমে টাকা তুলে সরাসরি আপনার ব্যাঙ্ক একাউন্টে ট্রান্সফার করে নিতে পারবেন।
১। আপনি যদি ক্লায়েন্ট পেতে কোনো সমস্যা হয় তাহলে ফেসবুকে স্পন্সর করতে পারেন। এবং কেউ যদি আপনাকে দিয়ে কাজ করাতে চায় তাহলে আপনার মার্কেটপ্লেস একাউন্টে যেয়ে কাজের অর্ডার করতে বলবেন। এর একটি সুবিধা হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে নতুনদের দিয়ে কেউ কাজ করাতে চায় না।
তাই আপনি যদি স্পন্সর করে ক্লায়েন্ট খুঁজে আপনার একাউন্টে কাজের অর্ডার নিতে পারেন তাহলে আপনার একাউন্ট মার্কেটপ্লেসে রাংক হবে। ফলে অন্যান্য ক্লায়েন্ট মনে করবে আপনি একজন পুরাতন ফ্রিল্যান্সার যার ফলে আপনি কাজের অর্ডার পাবেন।
২। ক্লায়েন্টের সাথে সবসময় সুন্দরভাবে কথা বলার চেষ্টা করবেন এবং কোনো কাজের অর্ডার পেলে নির্দিষ্ট সময়ের আগে আকর্ষনীয়ভাবে কাজ করে দিবেন। এতে ক্লায়েন্ট পরবর্তি সময় আপনাকে দিয়ে আরো কাজ করিয়ে নিতে পারে।
৩। ফ্রিল্যান্সিং কাজ শেখার সময় মনোযোগ দিয়ে কাজ শিখবেন। আপনি যত দ্রুত কাজ শিখতে পারবেন তত দ্রুত আয় রোজগার করতে পারবেন। সব সময় নতুন কিছু করার চেষ্টা করবেন যা অন্যরা করতে পারে না। ক্লায়ন্ট সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে ইউনিক কাজ।
তাই নতুন কিছু করার জন্য সব সময় আপনার কাজ রিলেটেড অনলাইনে রিসার্চ করবেন। রিসার্চ করে দেখবেন কে কেমন কাজ করছে এবং কেমন কাজ বেশি চাহিদাসম্পন্ন।