দেখতে কালো স্মার্ট, নিজের সুঠাম দেহকে কাজে লাগিয়ে বেছে নেয় প্রতরণার পথ। পড়াশোনা চতুর্থ শ্রেণি পাস। কিন্তু পরিচয় দেন পুলিশের এসআই গোয়েন্দা (ডিবি) আবার মাঝে মাঝে ডিএসবি পরিচয় দিয়ে প্রথমে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে লুটে নেয় টাকা, সোনাসহ মূল্যবানসামগ্রী।
এভাবে পরিচয় দিয়ে সম্প্রতি ৮তম বিয়ে করেছেন মনির ওরফে এসআই আমিনুল ইসলাম নামে এক যুবক।
মনির পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার ৫নং শাখারিকাঠী ইউনিয়নের ঘোপের খাল গ্রামের ময়ূর শেখের ছেলে। মনির সম্প্রতি রোকেয়া আক্তার দীনা (৪৮) নামে এক মহিলার সঙ্গে দুই বছর ধরে ভুয়া পুলিশের এসআই পরিচয় দিয়ে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করে ৮ম তম বিয়ে করেন।
দিনার বর্তমান বাড়ি ঢাকার শ্যামপুর থানার ধোলাইপাড় এলাকার যুক্তিবাদী মসজিদসংলগ্ন এলাকার নিজস্ব বাড়ি দিনা ভিলা ৫৮/ক। মূলত দিনা গোপালগঞ্জ জেলার টুংগীপাড়া উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের মৃত আব্দুল মোতালেব শেখের মেয়ে।
দিনার পূর্বের স্বামী মৃত আলমগীর হোসেন। তিনি করোনাকালীন মৃত্যুবরণ করেন। তার বাড়ি ঢাকার বিক্রমপুর এলাকায়।
ভুক্তভোগী দিনা জানান, আমি ২০ বছর কুয়েত ছিলাম। করোনোর সময় দেশে আসি। দেশে আসার কিছুদিন পর স্বামী মারা যায়। আমার ৫ মেয়ে বিয়ে দিয়ে আমি অভিভাবকহীন হয়ে পড়ি তখন মেয়েদের সঙ্গে আলোচনা করে একাকিত্ব দূর করতে পূর্বের পরিচিত (এসআই আমিনুল ইসলাম) ওরফে মনিরকে বিয়ে করি। বিয়ের পর থেকেই মনির নানা সময় বিভিন্নভাবে আমার কাছ থেকে নগদ অর্থ ব্যবহৃত সোনা ৩ ভরি আমার বাড়ির দলিল, বিয়ের কাবিননামাসহ মোট ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।
গত ২৫ জুন আমাকে আমার মালামাল, টাকা, সোনা নিয়ে নাজিরপুর আসতে বললে আমি চলে যাই। সেদিন রাতে তিনি আমার ওপর নির্মম অত্যাচার চালায়। মেরে রাতে আমাকে রাস্তায় ফেলে রাখে। স্থানীয়রা হাসপাতালে ভর্তি করে রেখে যায়। এক ভ্যানচালকের মাধ্যমে মনিরের বাড়ির খোঁজ পেয়ে সেখানে যাই। আমার সঙ্গে প্রতারণা ও নির্যাতনের বিচার চাই।
মনিরের বাবা মো. ময়ুর শেখ ছেলের কুকৃতির কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনিও বিচার চান এমন প্রতারক ছেলের। ছেলের বিয়ে সম্পর্কে তিনি জানান, প্রথম স্ত্রী দুই সন্তানসহ ঢাকায় কাজ করেন এভাবে একে একে ৮ জন স্ত্রীর আছে মনিরের। মনির ছোট বেলা থেকে দুরন্ত প্রকৃতির লোক। এবার যদি ছেলে মনির ভালো না হয় এলাকাবাসীদের নিয়ে নিজে জেলে দিয়ে আসব।
বেকারখাল ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. জাকির হোসেন হাওলাদার বলেন, আমি ওই ছেলের বাড়িতে গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি ওই বাড়িতে ওই মেয়ে অবস্থান করতেছে। আমি বিস্তারিত শুনেছি ঘটনা সত্য। বর্তমানে ছেলে পলাতক। আমি ওই ছেলের মা-বাবাকে বলেছি মেয়ের কাছ থেকে যে টাকা পয়সা সোনা এবং অন্যান্য সামগ্রী এনেছেন সবগুলো মেয়েকে ফেরত দিয়ে মেয়ে যদি যেতে চায় তাহলে পাঠিয়ে দেন। ওই ছেলে এইভাবে বিয়েশাদি করে এবং প্রত্যেককে বিয়ে করার পরে তার কাছ থেকে টাকা পয়সা রেখে মারধর করে তাদেরকে পাঠিয়ে দেয়। আমি চাই ওই ছেলের বিচার হোক।
এ বিষয়ে নাজিরপর থানার পুলিশ পরিদর্শক ওসি মো. শাহ আলম হাওলাদার জানান, এ বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ পাই নাই, পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।