পাঁচ বছরেই হওয়া যাবে জার্মান নাগরিক, ছাড়তে হবে না দেশের পাসপোর্ট

:: পাবলিক রিঅ্যাকশন ডেস্ক | পাবলিকরিঅ্যাকশন.নেট
প্রকাশ: ৬ মাস আগে
প্রতীকী ছবি

অভিবাসীদের জন্য জার্মান সরকারের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন কার্যকর হচ্ছে বৃহস্পতিবার (২৭ জুন)। জার্মান পার্লামেন্ট বুন্ডেসটাগ-এ প্রস্তাব পাস হওয়ার প্রায় সাত মাস পর আইনটি কার্যকর হতে যাচ্ছে।

আগের চেয়ে সহজ এ আইন কার্যকর হলে আট বছরের পরিবর্তে পাঁচ বছর পার হলেই জার্মান নাগরিকত্ব চেয়ে আবেদন করতে পারবেন অভিবাসীরা।

মূলত পাঁচটি বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে আইনটি সংস্কার করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে আছে:
১. নাগরিকত্ব অর্জনের প্রক্রিয়া গতিশীল করা
২. দ্বৈত নাগরিকত্বের সুযোগ রাখা
৩. বিশেষ যোগ্যতাকে স্বীকৃতি দেওয়া
৪. জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব সহজ করা
৫. ‘অতিথি কর্মীদের’ প্রজন্মকে লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট বা আজীবন সম্মাননা দেওয়া

আইনটি কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জার্মানিতে বসবাসরত বিদেশিরা আট বছরের পরিবর্তে পাঁচ বছর পরই নাগরিকত্ব চেয়ে আবেদন করতে পারবেন।

জার্মান নাগরিকের সঙ্গে কারো বিয়ে হলে, চার বছর পরই তিনি নাগরিকত্ব চেয়ে আবেদনের সুযোগ পাবেন।

আবেদনকারীদের মধ্যে যারা জার্মান সমাজের মানিয়ে নেয়ার (ইন্টিগ্রেশন) ক্ষেত্রে ‘বিশেষ সাফল্য’ দেখাতে পারবেন, তারা তিন বছর পরই নাগরিকত্ব চাইতে পারবেন। বিশেষ সাফল্যের মধ্যে রয়েছে: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভালো ফল করা, কর্মক্ষেত্রে নিজেকে প্রমাণ করা, ভাষাগত দক্ষতা এবং স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজে পারদর্শীতা।

জার্মান ফেডারেল পরিসংখ্যান অফিস জানিয়েছে, ২০২২ সালে জার্মানির মোট জনসংখ্যার প্রায় এক চতুর্থাংশ মানুষের অভিবাসন সম্পর্কিত ইতিহাস রয়েছে।

ছাড়তে হবে না নিজ দেশের নাগরিকত্ব
জার্মানির পাসপোর্ট পেতে বা নাগরিক হতে হলে আগের মতো নিজ দেশের নাগরিকত্ব ছাড়তে হবে না কোনো বিদেশিকে। ২৭ জুন থেকে কার্যকর হচ্ছে এই সুবিধাটিও। তবে আবেদনকারীর নিজ দেশ দ্বৈত নাগরিকত্ব রাখার সুযোগ দেয় কি না বিষয়টি তার ওপর নির্ভর করবে।

ভবিষ্যতে জার্মানিতে বিদেশি পিতা-মাতার ঘরে জন্ম নেওয়া শিশু ‘নিঃশর্তভাবে জার্মান নাগরিকত্ব পাবে। ’

এমনকি জার্মান বংশোদ্ভূত শিশুরাও এখন তাদের পিতা-মাতার নাগরিকত্ব ধরে রাখতে পারে, যদি তাদের মধ্যে একজন নিয়মিতভাবে অন্তত (আট বছর থেকে কমিয়ে) পাঁচ বছর জার্মানিতে বাস করেন।

নাগরিকত্ব পেতে হলে বিদেশিদের অবশ্যই নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের ভরণ-পোষণের সামর্থ্য থাকতে হবে। কারণ, জার্মান সোশ্যাল কোডের দ্বিতীয় ও দ্বাদশ ধারা (এসজি টু ও টুয়েলভ) অনুযায়ী, তাদের সরকারি কল্যাণ ভাতায় যুক্ত করা হবে না।

মাইগ্রেশন মিডিয়া সার্ভিসের সমীক্ষা বলছে, জার্মানির প্রায় প্রতিটি শহরে নাগরিকত্বের আবেদনে এগিয়ে আছে সিরীয়রা। এরপর আছে ইরাকি ও তুরস্কের নাগরিকেরা। গত বছরের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, এই দৌড়ে ইরানি ও আফগানিদের সংখ্যাও নেহাত কম নয়।

জার্মানির মোট জনসংখ্যার অন্তত ১৪ শতাংশ অর্থাৎ এক কোটি ২০ লাখ মানুষের কাছে নেই দেশটির নাগরিকত্ব। জার্মানিতে নাগরিকত্ব অর্জনের হার ইউরোপীয় ইউনিয়নের গড়ের অর্ধেক।