নির্বাহী ক্ষমতা পেয়ে এক মাসেই দু’বার দাম বাড়ালো বিদ্যুৎ বিভাগ

::
প্রকাশ: ২ years ago

পাবলিক রিঅ্যাকশন ডেস্ক:
দাম বাড়ানোর ক্ষমতা নিজেদের হাতে নিতে সরকার বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন সংশোধন করে গত ১ ডিসেম্বর অধ্যাদেশ জারি করে। গত ৩০ নভেম্বর বিইআরসি অধ্যাদেশ ২০২২ সংশোধনের কারণে তেল, গ্যাসসহ, জ্বালানি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা পায় সরকার। ওই অধ্যাদেশের আওতায় বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণা দিল সরকার।

নতুন মূল্য অনুযায়ী গ্রাহক পর্যায়ে ইউনিটপ্রতি বিদ্যুতের দাম ২০ পয়সা বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। যা আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।

সোমবার (৩০ জানুয়ারি) রাতে সরকারের এক নির্বাহী আদেশে বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে চলতি মাসেই দুই দফা বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে সরকার।

এর আগে, গত ১২ জানুয়ারি আরও একবার এক নির্বাহী আদেশে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্য ৫ শতাংশ বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন, ২০০৩ (২০০৩ সনের ১৩ নম্বর আইন) এর ধারা ৩৪ক-তে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার ভর্তুকি সমন্বয়ের লক্ষ্যে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের আওতাধীন বিদ্যুতের খুচরা মূল্যহার এবং বিদ্যুৎ সম্পর্কিত বিবিধ সেবার জন্য চার্জ/ফি পুনঃনির্ধারণ করল।

মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে জারি করা প্রজ্ঞাপনে আবাসিক গ্রাহকদের ক্ষেত্রে শূন্য থেকে ৫০ ইউনিট ব্যবহারকারী লাইফলাইন গ্রাহকদের বিদ্যুতের দাম ইউনিটপ্রতি ৩ টাকা ৯৪ পয়সা থেকে বেড়ে ৪ টাকা ১৪ পয়সা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ৭৫ ইউনিট ব্যবহারকারীর বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ টাকা ৬২ পয়সা, যা আগে ছিল ৪ টাকা ৪০ পয়সা।

একইভাবে ৭৬ থেকে ২০০ ইউনিট ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ টাকা ৩১ পয়সা, যা আগে ছিল ৬ টাকা ১ পয়সা ইউনিট। মূলত সবেচেয়ে বেশি গ্রাহক ৭৬ থেকে ২০০ ইউনিট শ্রেণির। এ শ্রেণির ইউনিট প্রতি বিদ্যুতের দাম বাড়ল ৩০ পয়সা ইউনিট। এখন থেকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের অতিরিক্ত এ পয়সা গুনতে হবে।

আর ২০১ থেকে ৩০০ ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী গ্রাহকদের ক্ষেত্রে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ টাকা ৬২ পয়সা। এ শ্রেণির গ্রাহককে আগে দিতে হতো ৬ টাকা ৩০ পয়সা। এছাড়া ৩০১ থেকে ৪০০ ইউনিটের গ্রাহকের ৬ টাকা ৬৬ পয়সা থেকে বেড়ে ৬ টাকা ৯৯ পয়সা। ৪০১ থেকে ৬০০ ইউনিটের জন্য ১০ টাকা ৪৫ পয়সা থেকে ১০ টাকা ৯৬ পয়সা এবং ৬০০ ইউনিটের বেশি ব্যবহারকারী আবাসিক গ্রাহকদের প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের জন্য গুনতে হবে ১২ টাকা ৬৩ পয়সা, যা আগে ছিল ১২ টাকা ৩ পয়সা।

গত বছরের ২১ নভেম্বর বিদ্যুতের পাইকারি দাম ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বাড়ায় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। এরপর বিদ্যুতের খুচরা দাম বাড়ানোর আবেদন করে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, ডিপিডিসি, ডেসকোসহ ছয়টি প্রতিষ্ঠান। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৮ জানুয়ারি গণশুনানি হয়।

গণশুনানিতে বিইআরসির কারিগরি কমিটি প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুতের খুচরা দাম ১ টাকা ২১ পয়সা বাড়ানোর সুপারিশ করেছে। সেই হিসেবে খুচরা বিদ্যুতের দাম গড়ে ৭ দশমিক ১৩ পয়সা থেকে বেড়ে ৮ দশমিক ১৩ পয়সা করার সুপারিশ করেছে। তবে খুচরা বিদ্যুৎ বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো সুপারিশ করেছিল বিদ্যুতের দাম গ্রাহক পর্যায়ে ১৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ বাড়ানোর।


Public Reaction একটি মতামতভিত্তিক সাইট।
মূলধারার সংবাদ এবং মতামত, প্রবন্ধ, গল্প, কবিতাসহ সৃজনশীল লেখা প্রকাশের একটি মুক্তমাধ্যম এটি। আপনিও লিখুন।
ইমেইল: opinion2mail@gmail.com, info@publicreaction.net