নিজস্ব বর্ণমালায় প্রাক-প্রাথমিক বই চান সাঁওতালরা

:: পাবলিক রিঅ্যাকশন রিপোর্ট
প্রকাশ: ২ years ago

প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাঁওতাল শিশুদের জন্য সাঁওতালি বর্ণমালায় পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নসহ আদিবাসীদের ভাষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষার দাবি জানানো হয়েছে।

এ দাবিতে শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানবন্ধনের আয়োজন করে, উত্তরবঙ্গ আদিবাসী ফোরাম; সাঁওতাল লেখক ফোরাম-বাংলাদেশ; আদিবাসী সাঁওতাল ফেলোশিপ সমিতি, ঢাকা; সান্তাল রানাজোট সমিতি, ঢাকা; সাঁওতাল সমন্বয় পরিষদ; দি সান্তালস টাইমস ডট কম; সান্তালি নিউজ২৪.কম।

পাবলিক রিঅ্যাকশনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘সাঁওতাল শিশুরা মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে বঞ্চিত। ২০১০ সালে প্রাথমিক পর্যায়ে ৬টি আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে নির্বাচন করা হয় এবং সরকার ইতোমধ্যে ৫টি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর শিশুদের জন্য পাঠ্য পুস্তক প্রণয়নের কাজ সমাপ্ত করেছে কিন্তু সাঁওতালদের মধ্যে লিপি বিতর্কের অজুহাতে এখনো তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি। একটি শিশুর স্বকীয়তা, সৃজনশীলতা, মননশীলতা ও মেধার বিকাশ হয় তার মাতৃভাষার মধ্য দিয়ে। এদিক দিয়ে সাঁওতাল শিশুদের নিজ মাতৃভাষায় অক্ষরজ্ঞান না থাকায় তাদের সংস্কৃতিও হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্থ।’

বক্তারা আরও বলেন, ‘আমরা সরকারের নিকট ভাষার শালীনতা ও যথার্থতা এবং মাধূর্যতা রক্ষায় সাঁওতালি (রোমান) হরফে সাঁওতাল শিশুদের জন্য ২০২৩ সালের মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ণের জোর দাবি জানাচ্ছি এবং সরকারের কাছে ২০২৩ সালের মধ্যে এ কার্যক্রম শেষ করার জোর দাবি করছি।’

মানববন্ধনে অভিযোগ করা হয়, সরকার আদিবাসীদের সর্ম্পকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রাখেনি। তারা সংবিধানে উল্লেখিত ভাষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও বিকাশের কোনো যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। সরকার আদিবাসীদের মাতৃভাষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষায় দৃশ্যমান কোন কার্যক্রম দেখাতে পারেনি। দেশের ৫০ টি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর প্রায় ২০ লক্ষ শিশু নিজস্ব মাতৃভাষার শিক্ষা থেকে বঞ্চিত।

মানববন্ধনে সরকারের কাছে বেশ কিছু দাবি জানানো হয়। এগুলো হলো,
১. ২০২৩ সালের মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাঁওতালদের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় সাঁওতাল শিশুদের জন্য সাঁওতালি বর্ণমালায় পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের কাজ সমাপ্ত করতে হবে।
২. প্রতিটি জেলায় আদিবাসী কালচারাল একাডেমী প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং আদিবাসীদের মধ্য থেকে প্রতিনিধি ও কর্মকর্তা নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
৩. আদিবাসীদের ভাষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষায় সরকারি উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি পৃথক বরাদ্দের ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. টিভি,বেতার ও বিভিন্ন মিডিয়ায় আদিবাসীদের ভাষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যর সঠিক তথ্য তুলে ধরতে হবে এবং আদিবাসীদের অংশগ্রহণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৫. সরকারি ভাবে আদিবাসীদের মধ্যে বিভিন্ন শিক্ষা, সাংস্কৃতিক ও খেলাধুলার প্রতিযোগিতা আয়োজন করতে হবে।
৬. আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলে পুকুর/ জলমহাল সমূহ আদিবাসীদেরকে ইজারা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
৭. আদিবাসীদের জমি-জায়গা, কবর-শ্বশান এবং পূজা-পার্বনের স্থান দখল বন্ধে আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠণ করতে হবে।

মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন উত্তরবঙ্গ আদিবাসী ফোরামের সিনিয়র সহ সভাপতি বদন মুরমু। এসময় বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট প্রভাত টুডু, সাঁওতাল লেখক ফোরাম-বাংলাদেশ’র সভাপতি লেখক ও কলামিস্ট মিথুশিলাক মুরমু, মিল্কী সেদেক হাঁসদা, প্রফুল্ল টুডু, শিক্ষার্থী তমা মুরমু প্রমূখ।


আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে ভার্চুয়াল মতামত ও অন্যান্য ভিডিও পাবেন।

গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে সাথেই থাকুন।


Public Reaction একটি মতামতভিত্তিক সাইট।
মূলধারার সংবাদ এবং মতামত, প্রবন্ধ, গল্প, কবিতাসহ সৃজনশীল লেখা প্রকাশের একটি মুক্তমাধ্যম এটি। লিখুন আপনিও।
ইমেইল: opinion2mail@gmail.com, info@publicreaction.net