পাবলিক রিঅ্যাকশন ডেস্ক:
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বলেন, দেশে অপসংস্কৃতির সয়লাব হয়ে যাচ্ছে। অপসংস্কৃতির প্রসারে অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এই অপসংস্কৃতির সয়লাব রুখতে হলে শুধু কথায় কাজ হবে না; বরং নান্দনিক ও মননশীল সাহিত্যের প্রসারের স্বার্থে উপযোগী প্রকাশনার প্রসার ঘটাতে হবে।
তিনি রাজধানীর এক মিলনায়তনে ছাত্রশিবির প্রকাশিত ২০২৩ সালের প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রকাশনা সামগ্রীর উদ্বোধকের বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সেক্রেটারি জেনারেল রাজিবুর রহমান এবং সেক্রেটারিয়েট সদস্যবৃন্দ।
শিবির সভাপতি বলেন, একজন মানুষের মৌলিক মানবিক সত্তার বেড়ে উঠার কিছু স্বাভাবিক দিক থাকে, যার ওপর মূল্যবোধ তৈরি হয়। তা থেকে আমরা অনেকটা দূরে অবস্থান করছি। মুসলিম বিশ্বে চিন্তা ও নান্দনিকতার সংকট চলছে। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আমরাই দ্বিধাগ্রস্ত। আমাদের মনন আজ পরিচালিত হয় আধুনিকতাবাদের পশ্চিমা ধাঁচে, যা বিশ্বাসে ফাটল ধরায়। ফলাফল হিসেবে বুদ্ধিহীনতা এবং আত্মপ্রত্যয়হীনতার প্রস্ফুটন বাড়ছে। আধুনিক বিশ্বের নাগরিক হিসেবে আমাদের বসবাস অনেকটাই বস্তুবাদ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এককথায় ধ্যানধারণা এবং মৌলিক দৃষ্টিভঙ্গিগত অঙ্গনে শূন্যতা তৈরি করছে। চিন্তাধারায় স্বকীয়তার সংকট থেকে বেরোনোর পথ পেতে আমাদের নেতৃত্ব খুব সামান্যই ভাবেন। পূর্ববর্তী নেতৃবৃন্দ যেসকল স্বকীয় নান্দনিক চিন্তার খোরাক আমাদের জন্য রেখে গেছেন, তার চর্চার বিপরীতে আমরা আধুনিক হতে শিখে যাওয়ার উপকরণ বেছে নিচ্ছি। গ্রিক দর্শনের তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ করাকে আমরা চিন্তার দর্শন হিসেবে বেছে নিয়েছি। তার শৈল্পিক উপস্থাপনার সাথে মিশে গিয়ে কোন ফাঁকে কোন পাঁকে যে আমরা ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত হচ্ছি- তা টেরই পাচ্ছি না। এই অনাকাঙ্ক্ষিত পরিণতির মূল কারণ পাঠে অনাগ্রহ, অযাচিত উপকরণের সয়লাব ও দুনিয়ার মোহ।
তিনি বলেন, আসলে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা এবং তার আদলে সমাজব্যবস্থাটাই এভাবে সাজানো হয়ে গেছে- যা থেকে সহসা বেরোনো কঠিন হয়ে পড়েছে। ঠিক এই প্রেক্ষাপটকে সামনে রেখেই বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির প্রতিনিয়ত ছাত্রসমাজের কাছে চিন্তাধারার সংকট উত্তরণে নান্দনিক উপস্থাপনার মাধ্যমে কিছু উপকরণের সমাহার নিয়ে হাজির হয়। এক্ষেত্রে নববর্ষের উপকরণ অন্যতম। আমরা মনে করি, আমাদের এই উপকরণসমূহ কিছুটা হলেও পাঠহীনতা, পাঠের উপকরণে অনাগ্রহ, অযাচিত উপকরণের সয়লাব থেকে ছাত্রসমাজকে বের করে আনতে সক্ষম হবে- যাতে করে দুনিয়াবি মোহ থেকে দূরে থাকার একটা সুযোগ অন্তত আমরা চিন্তাশীল-ভাবুকদের সামনে রাখতে পারব।
উল্লেখ্য, প্রতিবছরই নতুন বছরে জন্য আকর্ষণীয় প্রকাশনা সামগ্রী প্রকাশ করে ছাত্রশিবির। এবারের প্রকাশনার মধ্যে রয়েছে তিনপাতা ক্যালেন্ডার, একপাতা বড়ো ক্যালেন্ডার, একপাতা ছোটো ক্যালেন্ডার, ডেস্ক ক্যালেন্ডার, ইংরেজি বড়ো ডায়েরি, বাংলা বড়ো ডায়েরি, মাঝারি ডায়েরি ও পকেট ডায়েরি, ইসলাম ও সচেতনতামূলক বাণী সংবলিত স্টিকার প্রভৃতি। শিবির সভাপতি এসব প্রকাশনা সামগ্রী ছাত্রসমাজ ও সুধী মহলের নিকট পৌঁছে দেওয়ার জন্য সংগঠনের সকল স্তরের জনশক্তির প্রতি আহ্বান জানান।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি