নতুন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান

:: পাবলিক রিঅ্যাকশন রিপোর্ট
প্রকাশ: ১ বছর আগে
হাবিবুর রহমান। ফাইল ছবি

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) নতুন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ট্যুরিস্ট পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি হাবিবুর রহমান।

বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

রাষ্টপতির আদেশক্রমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব সিরাজাম মুনিরা স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে টুরিস্ট পুলিশের প্রধান ও অতিরিক্ত আইজিপি হাবিবুর রহমানকে ডিএমপি’র কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

ডিএমপির বর্তমান কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক আগামী ২ অক্টোবর অবসরে যাবেন। এর পরেই ডিএমপি কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেবেন হাবিবুর রহমান।

হাবিবুর রহমানের শিক্ষা জীবন শুরু হয় গোপালগঞ্জের এর চন্দ্রদিঘলীয়া মোল্লাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনিষ্টিটিউট থেকে তিনি স্নাতোকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। এরপর তিনি বিসিএস পরিক্ষায় অংশ গ্রহণ করেন এবং বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের পুলিশ ক্যাডারের জন্য মনোনীত হন।

১৯৯৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ১৭তম বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে তিনি সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন। এরপর বাংলাদেশ পুলিশ এর বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদে পর্যায়ক্রমে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ঢাকা জেলায় পুলিশ সুপারিন্টেন্ট হিসেবে কাজ করেন। অতঃপর পদোন্নতিক্রমে বাংলাদেশ পুলিশ সদরদপ্তরে অতিরিক্ত সহকারী মহাপরিদর্শক (সংস্থাপন) হিসেবে পদস্থ হন। পরবর্তীতে তিনি উপ-মহাপরিদর্শক পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ১০ অক্টোবর ২০২২ উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) হাবিবুর রহমান কে ট্যুরিস্ট পুলিশ ইউনিটের প্রধান করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

হাবিবুর রহমান বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রতিষ্ঠার পেছনে ভূমিকা পালন করেন এবং সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

হাবিবুর রহমান সাভারে বেদে পল্লীর সমাজ ব্যবস্থা উন্নয়নে কাজ করেছেন। সেখানে স্কুল, কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার, গাড়ি চালনা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও বুটিক হাউসসহ নানা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে ও বাল্য বিবাহ রোধে ভূমিকা পালন করেছেন।

তিনি হিজড়াদের সামাজিক বৃত্তিতে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেন। হিজড়া ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জীবন-মান উন্নয়নের লক্ষ্যে ‘উত্তরণ কর্ম-সংস্থান প্রশিক্ষণ’ কর্মসূচি চালু করেন এবং উত্তরণ ফাউন্ডেশন নামক সংস্থা প্রতিষ্ঠা করে এর মাধ্যমে তাদের সাবলম্বী করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

হাবিবুর রহমান বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া তিনি জাকার্তায় অনুষ্ঠিত এশিয়ান গেমসের আসরে ‘এশিয়ান কাবাডি ফেডারেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট’ হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে পুলিশ বাহিনীর অবদান ও ঢাকায় তাদের প্রথম প্রতিরোধ বিষয়ক ঘটনা নিয়ে তিনি “মুক্তিযুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ” নামে একটি বই লিখেছেন।

বেদেদের হারিয়ে যেতে বসা ভাষাকে সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়ে দীর্ঘ আট বছরের গবেষনার পর তিনি ‘ঠার’ নামক একটি বই রচনা করেন।

প্রশংসনীয় ও কৃতিত্বপূর্ন কাজের জন্য বাংলাদেশ পুলিশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি “বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)” লাভ করেন।এছাড়া “রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম)” লাভ করেন।এছাড়াও প্রশংসনীয় ও ভাল কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তাকে আইজিপি’স ব্যাজ প্রদান করা হয়।

তিনি সর্ব মোট তিনবার বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) পেয়েছেন। এবং দুই বার প্রেসিডেন্ট পুলিশ পদক (পিপিএম) সেবা পেয়েছেন। সেবা, সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য পুলিশ সপ্তাহে পদক দেওয়া হয় যা বিপিএম এবং পিপিএম নামে পরিচিত। প্রথমটি বাংলাদেশ পুলিশ পদক এবং পরেরটি রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক।

হাবিব বেদেদের বিপন্ন ভাষার সংরক্ষণের উপর ‘ঠার’ নামক একটি বই লিখেছেন। তার এই অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ ২০২৩ সালে তিনি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক লাভ করেন।

বেদে সম্প্রদায়ের বিলুপ্ত ভাষা ঠার বইটির জন্য তিনি মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান এবং মেলাকা গভর্নরের পক্ষ থেকে জোজো ইন্টারন্যাশনাল আইকনিক স্টার অ্যাওয়ার্ড ২০২৩ পেয়েছেন।