দোকানদার দিচ্ছে ২২০ টাকা করে ভাড়া, সরকার পায় মাত্র ২২ টাকা

::
প্রকাশ: ৩ সপ্তাহ আগে

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম মার্কেটের দোকান ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য চলছে। দোকান মালিক ভাড়া নিয়ে আরেক জনের কাছে ভাড়া দিয়ে ব্যবসা করছেন। বড় অঙ্কের টাকা আয় করছেন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকে (এনএসসি) দিতে হচ্ছে নামমাত্র ভাড়া। এখানে মধ্যস্বত্বভোগীরা সরকারি টাকা খেয়ে ফেলছেন।

এই যুগে এসেও পুরোনো আমলের ভাড়ায় চলছে দোকান। এই নৈরাজ্য কোনো সরকারই আমলে নেয়নি।

এবার নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আসায় নজর দিয়েছে। কারা কীভাবে ভাড়া পায় তা দেখতেই গতকাল আচমকা স্টেডিয়াম মার্কেট পরিদর্শন করতে গিয়েছিলেন ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তিনি নিজে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম মার্কেটের বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখেন। দোকানে দোকানে গিয়ে মালিক-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানতে চান বর্তমানে তারা কী হিসাবে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। ভাড়ার হিসাবটা কী, ভাড়া কাকে পরিশোধ করা হয়, কত টাকা ভাড়া দেওয়া হয়।

বিষয়টি নিয়ে তিনি যেন আকাশ থেকে পড়েছেন আসিফ। এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, মনে হচ্ছে আমাকে এনে কেউ দুর্নীতির মহাসাগরে ছেড়ে দিয়েছে।

আসিফ মাহমুদ লেখেন, আজ এনএসসির অধীনে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের দোকান পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। ২০-২২ টাকা/বর্গফুট হিসেবে এনএসসির কাছে ভাড়া গেলেও সরেজমিনে গিয়ে জানতে পারলাম দোকানগুলো ১৭০-২২০ টাকা/বর্গফুট করে ভাড়া দিচ্ছে। বিশাল অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছে সরকার।

তিনি আরও লেখেন, অর্থাভাবে ফেডারেশন চলছে না, টুর্নামেন্ট হয় না, মাঠের সংস্কার হয় না। অথচ বছরের পর বছর এভাবেই হাজার হাজার কোটি টাকা চুরি গেছে।

উপদেষ্টা নিজে নোট নিয়েছেন। মূলত তার উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রাপ্য আদায় করা। বছরের পর বছর বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম মার্কেটের দোকানের প্রকৃত ভাড়া থেকে সরকার বঞ্চিত হচ্ছে। বাজারমূল্যের সঙ্গে মিল রেখে এনএসসি ভাড়া বাড়ায় না। ভাড়া বাড়াতে গেলেই দোকানিরা এনএসসির সঙ্গে দফারফা করে পুরোনো ভাড়ায় আপোষ করে ফেলেন।

উপদেষ্টা চিন্তা ভাবনা করছেন, এ খাতে যে আয় হবার সেটা যেন উঠে আসে। তিনি বলেন, ‘হালনাগাদ কী আছে সেটা দেখতে এসেছিলাম। বাস্তবে না আসলে তো বুঝা যায় না। সরকারি খাতায় ২৬ টাকা স্কয়ার ফুট ভাড়া। আর দোকানিরা দিচ্ছেন ২১৭ টাকা স্কয়ার ফুট ভাড়া। এক্সট্রা টাকা কোথায় যাচ্ছে, এখানে এনএসসি বা মন্ত্রণালয় জড়িত কি না, খতিয়ে দেখব। এখানে (বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম) ১ হাজারের মতো দোকান আছে।’ দেশের অন্যান্য যেসব স্থানে স্টেডিয়াম রয়েছে, সেগুলোর খোঁজ নেবেন উপদেষ্টা।