ভোলা গ্যাস সরবরাহ ও ইন্ট্রাকো রিফিউলিং স্টেশন পিএলসির বিরুদ্ধে দৈনিক কালবেলায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়েছে ইন্ট্রাকো গ্ৰুপ।
গ্ৰুপের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) কমান্ডার মোহাম্মদ আবু সাঈদ স্বাক্ষরিত প্রতিবাদে বলা হয়েছে, দৈনিক কালবেলায় ১১ সেপ্টেম্বর ভোলার গ্যাস সিএনজিকরণে “বিপুর মদদে ইন্ট্রাকো হাতিয়ে নিয়েছে সাড়ে চারশো কোটি টাকা” শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
ইন্ট্রাকো গ্ৰুপের পক্ষ থেকে ঘটনার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেয়া হয়। ব্যাখ্যা নিম্নরূপ:
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির নেটওয়ার্কের স্বল্পচাপ এলাকায় ভোলা থেকে নন-পাইপ গ্যাস পরিবহনের জন্য ইন্ট্রাকো রিফিউলিং স্টেশন পিএলসি সহ আনুমানিক পাঁচ থেকে সাতটি প্রতিষ্ঠান সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (এসজিসিএল) এর নিকট প্রস্তাব জমা দিয়েছিল। প্রাপ্ত সব প্রস্তাবের পুঙ্খানুপুঙ্খ মূল্যায়ন এবং বিশেষ করে সিএনজি সেক্টরে ইন্ট্রাকো রিফিউলিং স্টেশন পিএলসির দীর্ঘ অভিজ্ঞতা বিবেচনা করে, ভোলা থেকে কমপ্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস (সিএনজি) সরবরাহের জন্য সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড এবং ইন্ট্রাকো রিফিউলিং স্টেশন পিএলসির মাঝে ২১ মে, ২০২৪ তারিখে একটি চুক্তি সম্পাদিত হয়।
চুক্তিটি অবাস্তব মূল্যে প্রদান করা হয়েছিল বলে যে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে এমন দাবির বিপরীতে জানানো যাচ্ছে, মন্ত্রণালয়, পেট্রোবাংলা এবং এসজিসিএল অত্র প্রকল্পের প্রযুক্তিগত দিকগুলির বিস্তারিত মূল্যায়ন করে এবং ইন্ট্রাকো রিফিউলিং স্টেশন পিএলসির প্রস্তাবটি প্রাসঙ্গিক, কার্যকর এবং সাশ্রয়ী বলে প্রতীয়মান হয়। পরবর্তীতে, মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের মূল্য ৪৭.৬০ টাকা নির্ধারিত হয়, যার মধ্যে গ্যাসের মূল্য ১৭ টাকা, কম্প্রেশন চার্জ ৮ টাকা, নদী ও সড়কপথে পরিবহন বাবদ ২১ টাকা এবং গ্রাহক প্রাঙ্গনে ডিকম্প্রেশন বাবদ ১.৬০ টাকা। এই মূল্য অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক এবং আমাদের প্রতিযোগীদের কেহই এই হার পূরণ করতে পারেনি, যা আমাদের প্রস্তাবের উপযুক্ততা এবং যথার্থতা প্রমান করে।
গ্যাসকে সিএনজি আকারে পরিবহনের অন্যান্য পদ্ধতি কারিগরিভাবে অত্যন্ত দুরূহ। এছাড়া, প্রতিবেদনের দাবি অনুযায়ী গ্যাস সরবরাহ প্রক্রিয়ায় যে বিলম্ব দেখা দিয়েছে, তা প্রধানত প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে, যা শীঘ্রই সমাধান করে গ্যাস সরবরাহ পুনরায় শুরু করা হবে। ০৫ আগস্ট ছাত্রজনতার আন্দোলনে সরকারপতনের সাথে গ্যাস স্টেশন বন্ধ হওয়ার কোন সম্পর্ক নাই। গত ২৯ আগস্ট থেকে কারিগরি ত্রুটির কারনে সাময়িকভাবে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ আছে যা খুব শীঘ্রই চালু হবে।
প্রতিবেদনে ইন্ট্রাকো কর্তৃক এ পর্যন্ত মুনাফার নামে ৪৫৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে যে মন্তব্য করা হয়েছে সে প্রেক্ষিতে ইন্ট্রাকোর পক্ষ হতে জানানো যাচ্ছে যে, ইন্ট্রাকো প্রাথমিকভাবে ৫ মিলিয়ন ঘনফুট প্রজেক্টের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ১৯,৬৯,৭৯৬ ঘনমিটার গ্যাস সুন্দরবন থেকে ক্রয় করে এবং একই পরিমাণ গ্যাস বিভিন্ন কারখানায় বিক্রয় করে। টাকার হিসেবে যার পরিমাণ ৯,৩৭,৬২,৩০১ টাকা মাত্র। যার মধ্যে গ্যাসের মূল্য, পরিবহন খরচ, কম্প্রেশন ও ডিকম্প্রেশন খরচ অন্তর্ভুক্ত। অতএব খবরে প্রকাশিত ইন্ট্রাকোর এখন পর্যন্ত মুনাফা নামে ৪৫৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন এবং কাল্পনিক।
বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, এই প্রকল্পের জন্য ইন্ট্রাকোর নির্বাচন তার প্রমাণিত দক্ষতা, সিএনজি খাতে তার নেতৃস্থানীয় ভূমিকা এবং এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়নে তার ক্ষমতার উপর ভিত্তি করেই করা হয়েছিল। আমরা আমাদের চুক্তিগত দায়বদ্ধতা পূরণ এবং প্রকল্পটি সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য সম্পূর্ণভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ইন্ট্রাকো রিফিউলিং স্টেশন পিএলসি দেশের প্রচলিত আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং বেআইনী বা অনুমোদনহীন কোন কাজের সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই।
আমরা আশা করি এই ব্যাখাটি প্রকল্পের নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং ইন্ট্রাকো রিফিউলিং স্টেশন পিএলসির ভূমিকা সম্পর্কে যে কোনো ভুল ধারণা দূর করতে সাহায্য করবে।