পাবলিক রিঅ্যাকশন ডেস্ক:
মহামারি করোনার প্রকোপ আবারও বাড়ছে। বিশেষ করে চীন, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে নূতন ধরনের করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, দেশে সাত দিন পর করোনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে গত ২৪ ঘন্টায়, শনাক্ত হয়েছে ৬ জন।
গতকাল শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি চীন, ভারতসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নূতন ধরনের করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। জেনেটিক সিকুয়েন্স পরীক্ষার মাধ্যমে জানা গেছে এসব দেশে ওমিক্রন ধরনের বিএফ ৭ উপধরনের কারণে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিবেশী দেশসমূহে সংক্রমণ বাড়লে বাংলাদেশেও সেই সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন ওমিক্রনের এই নতুন উপধরন বিএফ ৭ অত্যন্ত সংক্রামক। এর সংক্রমণ এড়াতে এবং দেশের জনগোষ্ঠীর সুরক্ষার জন্য দেশের সকল নৌ, স্থল ও আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরগুলোতে সতর্কতা জারি এবং স্বাস্থ্যবিধি মানাসহ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে এই ভাইরাস যেন বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে এজন্য চীন, ভারত, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ব্রাজিল, জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আসা সন্দেহজনক যাত্রীদের ব্যাপারে হেলথ স্ক্রিনিং জোরদার করতে হবে। এমতাবস্থায় এসব দেশ থেকে আগত সন্দেহজনক যাত্রীদের দেশের স্থল, নৌ বন্দর এবং বিমান বন্দরের ইমিগ্রেশন ও আইএইচআর হেলথ ডেস্কের সহায়তায় এ বিষয়ে স্বাস্থ্য বার্তা প্রদান এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিবিড়ভাবে পরিচালনার জন্য নির্দেশ দেওয়া হল।
সীমান্তবর্তী জেলার পয়েন্টস অব এন্ট্রি সমূহে স্থাপিত ডিজিটাল থার্মাল স্ক্যানার ও ইনফ্রা রেড হ্যান্ড হেল্ড থার্মোমিটার কার্যকর রাখার কথা জানিয়ে বলা হয়, নৌ, স্থল ও বিমান বন্দর সমূহে আগত সন্দেহ জনক যাত্রীদের র্যাপিড এন্টিজেন পরীক্ষা করতে হবে। সেই সঙ্গে রিস্ক কম্যুনিকেশন কার্যক্রম জোরদার করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
এদিকে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, নতুন ছয় রোগীকে নিয়ে এ পর্যন্ত মোট করোনা শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৩৭ হাজার ২৪ জনে। আর নতুন এক মৃত্যু নিয়ে এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা ২৯ হাজার ৪৩৯ জনে দাঁড়িয়েছে।
রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৬৯ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয়েছে ১ হাজার ৩৭২টি নমুনা। পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার শূন্য দশমিক ৪৪ শতাংশ। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৭৩ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৯ লাখ ৮৭ হাজার ২৯৭ জন।
দেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে গত বছরের ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ২০২০ সালের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
২০২১ সালের ৫ আগস্ট ও ১০ আগস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারির মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।