দেশের ৫৬ নদীই অতিমাত্রায় দূষিত, ভয়াবহ পরিস্থিতি ৩টির

:: পা.রি. ডেস্ক ::
প্রকাশ: ২ years ago
সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশে ৫৬টি নদীর দূষণের মাত্রা পরীক্ষা করতে গিয়ে সবকটি অতিমাত্রায় দূষিত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এরমধ্যে গাজীপুরের লবণদহ, নরসিংদীর হাঁড়িধোয়া ও হবিগঞ্জের সুতাং এই তিনটি নদীর অবস্থা সবচেয়ে ভয়াবহ।

এই নদীগুলোয় সহনীয় মাত্রার চেয়ে তুলনামূলক বেশি দূষণের অস্তিত্ব পেয়েছেন গবেষকরা।

রিভার অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার (আরডিআরসি) গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশের ৫৬টি নদীর গুণগত মান বিশ্লেষণ করে গত ১৪ মার্চ এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

সেখানে দূষণের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে যত্রতত্র প্লাস্টিকের ব্যবহারকে। অপর দুই বড় কারণ হলো- নদীতীরবর্তী শিল্প কারখানাগুলোর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকা, সেইসাথে পৌরসভাগুলোর ময়লা ফেলার জন্য নদীকে বেছে নেয়া।

বাংলাদেশের সংবিধানে নদীকে জনসম্পদ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হলেও সেই নদী রক্ষায় সরকারের সদিচ্ছার যথেষ্ট অভাব রয়েছে বলে মনে করেন পরিবেশবিদরা।

তাদের আশঙ্কা, দ্রুত কোনো ব্যবস্থা না নিলে এই ৫৬টি নদীর দূষণ সারা দেশের ৭৫৪টি নদীতে ছড়িয়ে পড়বে।

তারা বলছেন, এতে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি পড়বে নদী তীরবর্তী মানুষের জীবন, জীবিকা, সেইসাথে কৃষি, জলজ স্বাস্থ্য, জনস্বাস্থ্য ও বিশুদ্ধ খাবার পানির যোগানও হুমকি মুখে পড়বে।

 

তিন নদীর হাল এমন হলো কেন
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী, নদীকে মানুষের মতোই একটি জীবন্ত সত্তার স্বীকৃত দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ নদীগুলো এখন থেকে মানুষ বা প্রাণির মতো আইনি অধিকার পাবে। নদীর যেকোনো ক্ষতির বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হওয়া যাবে।

গবেষণায় যে তিনটি নদীকে সবচেয়ে দূষিত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে এরমধ্যে ‘লবণদহ’ নদী এর ব্যাপ্তির কারণে আগে লবলং সাগর হিসেবে পরিচিত ছিল বলে জানা গেছে।

 

 

এই নদীর উৎপত্তি হয়েছে ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলার ক্ষীরু নদীর সংযোগস্থল থেকে। সেখান থেকে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার ওপর দিয়ে মির্জাপুরের কাছে তুরাগ নদীতে গিয়ে মিশেছে।

আরডিআরসির গবেষকরা এই নদীর তীরে ২৫০টি কারখানা পেয়েছেন। যার সবগুলোর কেমিক‍্যাল বর্জ্য সেইসাথে শ্রীপুর পৌরসভার সব বর্জ্য পড়ছে এই নদীতে। শ্রীপুর অংশে প্রায় ৩০ কিলোমিটারজুড়ে চলছে এই দূষণ।

ফলে একসময়কার প্রমত্তা নদী দখল ও ভরাট হতে হতে বর্তমানে খাল বা নালায় রূপ নিয়েছে। মাছসহ জলজ জীব বেঁচে থাকার পরিবেশ হারিয়েছে।

 

 

একই অবস্থা হাঁড়িধোয়া নদীর। এই নদীর উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার দক্ষিণ-পশ্চিম ও শিবপুর উপজেলার পশ্চিম-উত্তর শীতলক্ষ্যা নদীর কোণ থেকে। এরপর প্রায় ৬০-৭০ কিলোমিটার আঁকাবাঁকা হয়ে নদীটি জেলা শহরের পূর্ব-দক্ষিণ কোণে এসে মেঘনা নদীর মোহনায় মিলিত হয়েছে।

এক সময় এই নদী কৃষিকাজ ও মাছ ধরার উৎস হলেও এখন তা শিল্পকারখানার বিষাক্ত বর্জ্যে সম্পূর্ণ ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

তবে সবচেয়ে করুণ অবস্থা সুতাং নদীর। বাংলাদেশ-ভারতের আন্তঃসীমান্ত নদীটি বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের হবিগঞ্জে প্রবেশ করে ৮২ কিলোমিটার জুড়ে ছড়িয়ে আছে।

এক সময়কার এই খরস্রোতা নদী এতটাই ভয়াবহ রূপ নিয়েছে যা দুই দশক আগের বুড়িগঙ্গার কথা মনে করিয়ে দেয়।

এর কারণ হিসেবে আরডিআরসি বলছে, সুতাং নদীর তীরে বেশ কয়েকটি টাইলস, ডাইয়িং, রাসায়নিক ও ব্যাটারি কারাখানা গড়ে উঠেছে। এতে নদীর পানি আলকাতরার চেয়েও কালো ও থকথকে হয়ে পড়েছে।

ফলে এটি নদী নাকি নালা – তা বোঝার উপায় নেই।

 

দূষণের মাত্রা কেমন
এই নদীগুলোয় পিএইচ, দ্রবীভূত অক্সিজেন, বায়োলজিক্যাল অক্সিজেন ডিমান্ড এবং কেমিক্যাল অক্সিজেন ডিমান্ড – এই চারটি প্যারামিটারের ভিত্তিতে গবেষণা পরিচালনা করা হয়।

এখানে পিএইচ হল পানির জারক প্রকৃতি নির্ধারণের সূচক।

পরিবেশ সংরক্ষণ নীতি অনুযায়ী, নদীর পানিতে পিএইচের আদর্শ মান হল ছয় থেকে নয়। এর চেয়ে মাত্রা বেশি হলে পানির ক্ষারত্ব বাড়তে থাকে ও কম থাকলে অম্লতা বাড়তে থাকে।

পিএইচের পরিবর্তন পানির অক্সিজেন ও তাপমাত্রাকে প্রভাবিত করে। এ কারণে পানিতে পিএইচের মানমাত্রা বেশি ও কম দুটোই জনস্বাস্থ্যের জন্য ভয়াবহ ক্ষতিকর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অথচ সবচেয়ে দূষিত তিন নদীর পানির পিএইচ মাত্রা অনেক কম।

এদিকে ‘ডিজলভড অক্সিজেন’ বলতে বোঝায় পানির ভেতরে দ্রবীভূত অক্সিজেনের মাত্রাকে। এর আদর্শ মাত্রা হলো প্রতি লিটারে ৪.৫ থেকে আট মিলিগ্রাম।

এর চেয়ে কম অক্সিজেন থাকলে জলজ প্রাণীর অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়, ফলে তারা ওই পরিবেশে বাঁচতে পারে না। ভয়াবহ দূষিত ওই তিন নদীর পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনের মাত্রা ভয়াবহ কম দেখা গেছে।

সুনামগঞ্জের সুতাং নদীতে পিএইচের মাত্রা ৪ এবং দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ দশমিক আট, গাজীপুরের লবনদহ নদীতে পিএইচের মাত্রা ৫ এবং দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ দশমিক সাত। নরসিংদীর হাঁড়িধোয়া নদীতে পিএইচের মাত্রা ৬.১ এবং দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ দশমিক ছয়। অর্থাৎ আদর্শ মানের চাইতে নিচে।

এছাড়া এসব নদীর পানিতে বায়োলজিক্যাল অক্সিজেন ডিমান্ড এবং কেমিক্যাল অক্সিজেন ডিমান্ড এই দুটির মাত্রাও অস্বাভাবিক অবস্থায় পাওয়া গেছে। ফলে এসব নদ-নদীর দূষিত পানি প্রাণ-প্রতিবেশ, জলজ স্বাস্থ্য ও জনস্বাস্থ্যের জন্য ভয়াবহ হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে বলে আশঙ্কা করছেন পরিবেশবিদরা।

 

সব নদীতে প্লাস্টিক
এই গবেষণায় মূলত গুরুত্ব দেয়া হয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে আসা শহর ও উপশহর তীরবর্তী দূষিত নদীগুলোকে। পরবর্তী সময়ে গ্রাম ও প্রত্যন্ত এলাকার নদীগুলোকেও গবেষণার অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

গবেষণায় শহর ও গ্রামের প্রায় সব নদীতে শিল্প-বর্জ্য, পৌর বর্জ্য বিশেষ করে মাইক্রো-প্লাস্টিক দূষণের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। কারণ নদী বহমান হওয়ায় এই দূষণ স্রোতের সঙ্গে সঙ্গে সারা দেশের সব নদীতে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে।

এ নিয়ে আরডিআরসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘আমরা মূলত শহরাঞ্চলের নদীগুলোর গুণগত মান পরীক্ষার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছি। পরে গ্রামাঞ্চলের নদীগুলোর নমুনাও আমরা সংগ্রহ করি। দুঃখের বিষয় হলো, এমন কোনো নদী নেই যেখানে দূষণ পাইনি। সব জায়গায় প্লাস্টিক পেয়েছি।’

‘পটুয়াখালীর দিকের নদীতে শিল্প দূষণ কম, নগরায়ন নেই – কিন্তু সেখানকার উপকূলীয় এলাকা থেকেও আমরা প্রচুর প্লাস্টিক পেয়েছি। কারণ জেলেরা মাছ বহনে প্রচুর প্লাস্টিক ব্যবহার করে। এই প্লাস্টিক দূষণ কতটা ভয়াবহ পর্যায়ে গেছে না দেখলে বিশ্বাস করবেন না। আর শহরে তো প্লাস্টিকের মাত্রা গুণে শেষ করা যাবে না।’

ঢাকার আশপাশের চারটি নদীতে (বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু, টঙ্গিখাল) ৬০৮টি দূষণ পয়েন্ট পেয়েছেন গবেষকরা। এরমধ্যে ২৫০টি হল নদী তীরবর্তী ডাস্টবিন।

নদী তীরবর্তী মানুষ, বাজার, কারখানা তাদের দৈনন্দিন বর্জ্য নদীতে ফেলে। কারণ এসব কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কোনো মেকানিজম সিটি করপোরেশনের নেই। সেইসাথে পয়ঃনিষ্কাশনের বর্জ্য তো আছেই।

এ কারণে ঢাকার আশেপাশে সাতটি নদী থাকা সত্ত্বেও পানির অভাব রয়েছে। কারণ ওই নদীর পানিগুলো এতটাই দূষিত যে তা পরিশোধনের কোনো উপায় নেই।

 

মূল কারণ ‘উন্নয়ন’
গত দুই দশক ধরে বাংলাদেশের ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর বাইরে অন্য শহরেও নগরায়ন, শিল্পায়ন ও নানা ধরনের উন্নয়ন কাজ চলছে।

আরডিআরসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজের অভিযোগ, এসব উন্নয়ন কাজ চলছে সম্পূর্ণ অপরিকল্পিতভাবে, পরিবেশের কথা না ভেবেই।

ফলে একদিকে উন্নয়ন হচ্ছে দেখালেও পরিবেশ দূষণ সারা দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে।

তিনি বলেন, ‘এ নিয়ে সরকারের কোনো নিয়ম-নীতি নেই, তদারকি বা জবাবদিহিতার জায়গা নেই।’

এতে নদীনির্ভর প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকা, কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা, নিরাপদ পানির যোগান হুমকির মুখে পড়েছে বলে তিনি জানান।

এক্ষেত্রে তিনি অভিযোগের তীর ছুঁড়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের দিকে।

তার মতে, পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অবহেলার কারণেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এখনই তাদেরকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা না হলে সামনে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সরকার সাম্প্রতিক সময়ে যে ইপিজেড স্থাপনের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে তার প্রত্যেকটির অবস্থান নদীর তীরে।

এমন অবস্থায় কারখানাগুলোর তরল বর্জ্য যদি কেন্দ্রীয়ভাবে পরিশোধন না করে আগের মতোই সরাসরি নদীতে ফেলা তাহলে ওইসব নদীর জীব-বৈচিত্র্য নষ্ট হয়ে যাবে বলে তিনি জানান।

মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘ট্যানারিগুলোর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অনেক ধূয়া তোলা হলেও প্রকৃত অর্থে কোনো পরিবর্তন হয়নি। নদীতেই ফেলা হয়েছে। এখন সামনের উন্নয়ন কাজের মাশুল যদি নদীগুলোকে দিতে হয় তাহলে সেটাকে উন্নয়ন বলা যাবে না।’

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতি বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান কটাক্ষ করে বলেছেন, আমাদের উন্নয়নের মডেলটাই এমন যেখানে নদীকে বর্জ্য ফেলার জায়গা হিসেবে চিহ্নিত করা হয় এবং এভাবেই উন্নয়নের কথা ভাবা হয়।

বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে নদীমাতৃক দেশ বলা হলেও এখানে নদীগুলো ডাম্পিং গ্রাউন্ডের মতো ব্যবহার হচ্ছে। এগুলো ওয়াসার জন্য পয়ঃবর্জ্য ফেলার জায়গা, শিল্প কারখানাগুলোর জন্য অপরিশোধিত শিল্প-বর্জ্য ফেলার জায়গা, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের জন্য হয়ে গেছে ময়লা ফেলার জায়গা।’

নদীগুলোর সাথে যা করা হচ্ছে তা পরিবেশ-প্রতিবেশের গণহত্যার সামিল বলে তিনি মন্তব্য করেন।

 

উপায় কি আছে?
বাংলাদেশের নদীগুলোর জন্য সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ হলো বর্ষাকাল। প্রতিবছর যে পরিমাণ বৃষ্টি হয় সেটা এই দূষণ অনেকটাই দূর করতে সক্ষম।

কিন্তু নদীগুলোকে আগের রূপে ফিরিয়ে নিতে শিল্প কারখানা, পয়ঃনিষ্কাশন ও বর্জ্য নিষ্কাশনের ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দিয়েছেন পরিবেশবিদরা।

এক্ষেত্রে সংকটাপন্ন নদীগুলোকে রক্ষায় তারা পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততার ওপর জোর দিয়েছেন।

গবেষকরা বলছেন, নদীগুলো যে জনসম্পদ, মানুষের বেঁচে থাকার জন্য নদীগুলোকে রক্ষা করতে হবে সে বিষয়টিকে মাথায় রেখে উন্নয়নের কর্ম পরিকল্পনা সাজাতে হবে।

এ বিষয়ে সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান জানান, ‘শিল্পায়ন, নগরায়ন কিংবা উন্নয়ন কাজ সবকিছুই পরিবেশকে রক্ষা করে করা সম্ভব। শিল্প-বর্জ্য, পয়ঃনিষ্কাশন বর্জ্য ও পৌরসভা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আধুনিক সমাধান আছে। কিন্তু বাংলাদেশে তা মানা হয় না।’

সাধারণত নদী বা কোনো জলাশয়ের পাশে শিল্প-কারখানা থাকলে সেগুলোর তরল বর্জ্য ওই নদীতে ফেলার আগে পরিশোধন করে নিতে হয়। এই কাজটি করা হয় এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্টের মাধ্যমে।

বাংলাদেশে আইন করে কারখানাগুলোকে এই ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অনেক কারখানা সেগুলো স্থাপন করলেও তদারকি না থাকায় এখনো কারখানার বর্জ্য সরাসরি নদীতে গিয়েই পড়ছে।

সেক্ষেত্রে যে নদীগুলোর তীরে দূষণকারী শিল্প কারখানা আছে সেগুলোকে ইকোলজিক্যাল ক্রিটিক্যাল এরিয়া ঘোষণা করে, প্রত্যেকটি কারখানার এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট আছে কিনা, সেটা কার্যকর কিনা, সেগুলো চালু রাখা হয় কিনা সেগুলো নিয়মিত কঠোর নজরদারির তাগিদ দেন রেজওয়ানা হাসান।

নিয়মিত তদারকির জন্য গ্রামবাসীদের নিয়ে পরিবেশ অধিদফতরের মনিটরিং টিম থাকা দরকার বলে তিনি মনে করেন।

সেইসাথে পৌরসভা বা সিটি করপোরেশনকে বিকল্প জায়গায় বা সরকারি খাস জমিতে ময়লা ব্যবস্থাপনা করা এবং ওয়াসাকে পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ট্রিটমেন্ট প্লান্ট গড়ে তোলার পরামর্শ দেন।

সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান বলেন, ‘এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকায় বাংলাদেশের কোনো নদী আর আগের রূপে নেই। দিন দিন নষ্ট হচ্ছে। একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকের লাভের জন্য, দুই হাজার শ্রমিকের চাকরির জন্য, ওয়াসা ও পৌরসভার দায়িত্বে অবহেলার জন্য একটা প্রাণ ব্যবস্থাকে তো নষ্ট হতে দেয়া যাবে না।’

 

সূত্র : বিবিসি


আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে ভার্চুয়াল মতামত ও অন্যান্য ভিডিও পাবেন।

গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে সাথেই থাকুন।


Public Reaction একটি মতামতভিত্তিক সাইট।
মূলধারার সংবাদ এবং মতামত, প্রবন্ধ, গল্প, কবিতাসহ সৃজনশীল লেখা প্রকাশের একটি মুক্তমাধ্যম এটি। লিখুন আপনিও।
ইমেইল: opinion2mail@gmail.com, info@publicreaction.net