‘স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি’ বা এসএমএ একটি দুরারোগ্য রোগ। বর্তমানে দেশে এই রোগের চিকিৎসা শুরু হয়েছে। এখনো এর চিকিৎসা এবং ওষুধ অনেক ব্যয়বহুল। আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা আগের তুলনায় অনেক উন্নত হয়েছে। এর সাথে সরকারের পরিকল্পনা ও সদিচ্ছার পাশাপাশি বিত্তমানরা এগিয়ে আসলে এসএমএ’র মতো দুরারোগ্য রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
অলিভিয়া সঞ্চারি নবনীর ওষুধ প্রাপ্তির বর্ষপূর্তি উপলক্ষে রোববার (২০ আগস্ট) এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের ব্যবস্থাপনা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ সোসাইটি অফ মেডিক্যাল জেনেটিকসের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা এই কথা বলেন।
বাংলাদেশ শিশু হাসপাতালের অডিটরিয়ামে ‘স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফির (এসএমএ) চিকিৎসায় অগ্রগতি: এসএমএ নিরাময়যোগ্য’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করে বাংলাদেশ সোসাইটি অফ মেডিক্যাল জেনেটিক্স এবং বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ নিউরো সায়েন্সেস ও হাসপাতালের পিডিয়াট্রিক নিউরোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. নারায়ণ সাহা।
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ডা. নারায়ণ সাহা আশা প্রকাশ করেন, আগামী এক বছরের মধ্যে দেশে এসএমএ রোগের ডায়াগনোসিস শুরু করা সম্ভব হবে।
২০২২ সালের ২০ মার্চ নয় মাস বয়সে শিশু অলিভিয়া সঞ্চারি নবনী এসএমএ’র মুখে খাওয়ার ওষুধ প্রথম ডোজ গ্রহণ করে। বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের পেডিয়াট্রিক নিউরোলজির সহকারী অধ্যাপক ডা. শাওলী সরকারের অধীনে নবনীর চিকিৎসা চলছে। এই ওষুধটি রোশ বাংলাদেশ লিমিটেড সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সরবরাহ করে। এই ওষুধ প্রাপ্তির এক বছর পূর্তি উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল।
দেশে এসএমএ রোগ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি এবং আক্রান্ত রোগী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন সেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে গঠিত হয়েছে সামাজিক সংস্থা ‘কিউর এসএমএ বাংলাদেশ’। শাহাদাত হোসেন এই সংগঠনের প্রেসিডেন্ট। তার সন্তান অলিভিয়া সঞ্চারি নবনী ওষুধটি গ্রহণ করে আসছেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ওষুধ গ্রহণের ফলে নবনীর আশাতীত উন্নতি হয়েছে। মেডিক্যাল হিস্ট্রি অনুযায়ী, এসএমএ’র টাইপ-১ আক্রান্ত শিশুরা সাধারণত ২৪ মাস বয়সের আগে মারা যায়। কিন্তু নবনীর দুই বছর ২ মাস বয়স চলছে। সে মুভ হাত-পা মুভমেন্ট করতে পারে। বসতে পারে। চিকিৎসকরা একে আশাতীত উন্নতি বলে অভিহিত করেন।