জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৯ বছর ও তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানকে ৩ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলার রায় বুধবার (২ আগস্ট) বিকাল ৪ টার দিকে ঘোষণা করেন ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. আছাদুজ্জামান।
এর আগে মামলার যুক্তি উপস্থাপন শেষে বুধবার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করা হয়। রায় নিয়ে দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল আগেই জানিয়েছিলেন, অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের সর্বোচ্চ ১৩ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। এ মামলায় ২৬(২) ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি ৩ বছরের কারাদণ্ড এবং ২৭(১) ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি ১০ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
প্রসঙ্গত, সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। দণ্ডিত আসামি হিসেবে বিদেশে পলাতক তারেক রহমানও নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাননি। দুদকের এ মামলার রায়ে ডা. জুবাইদার দুই বছরের বেশি সাজা হওয়ায় আইন অনুযায়ী তিনিও আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
আরও পড়ুন: খালেদা, তারেকের পর এবার বন্ধ হচ্ছে জুবাইদার নির্বাচনের দরজা!
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন জানান, তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে মামলায় দুদক সব অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। যুক্তি উপস্থাপন শেষে এ আইনে তাদের সর্বোচ্চ সাজা প্রত্যাশা করে দুদক।
যুক্তি উপাস্থপন শেষ হওয়ার পর রায়ের দিন ধার্য্য হওয়ার এর প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি সমর্থিত আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেছিলেন, প্রসিকিউশন এ মামলায় অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছেন। রায়ের বিরুদ্ধে তারা আপিল করবেন।
গত ২৪ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক তৌফিকুল ইসলাম সর্বশেষ সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন। এদিন তার সাক্ষ্য দেওয়ার মধ্য দিয়ে এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করেন আদালত। মামলাটিতে চার্জশিটভুক্ত ৫৬ জনের মধ্যে ৪৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
২১ মে মামলার বাদী দুদকের উপপরিচালক জহিরুল হুদার সাক্ষ্যের মাধ্যমে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এর আগে ১৩ এপ্রিল একই আদালত তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন। এ মামলায় তারেক রহমান ও জুবাইদাকে পলাতক দেখানো হয়েছে। গত বছরের ১ নভেম্বর একই আদালত তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, জ্ঞাত আয়ের বাইরে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া এবং সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় এ মামলা করে দুদক। মামলায় তারেক রহমান, জুবাইদা রহমান ও তার মা ইকবাল মান্দ বানুকে আসামি করা হয়। তারেক রহমানের শাশুড়ি মারা যাওয়ায় এ মামলা থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জুবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়। ওই সময় তিনি গ্রেপ্তার হন। পরে ২০০৮ সালে জামিনে মুক্তি পেয়ে সপরিবারে লন্ডনে চলে যান। এরপর আর দেশে ফেরেননি।