দাদির সঙ্গে পরকীয়া, নাতির হাতে খুন হন অপর প্রেমিক সাদ্দাম

:: পাবলিক রিঅ্যাকশন ডেস্ক | পাবলিকরিঅ্যাকশন.নেট
প্রকাশ: ৬ মাস আগে

সম্পর্কে দাদির সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন মঞ্জুরুল ইসলাম। একইসঙ্গে ওই নারীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে মঞ্জুরুল ইসলামের বন্ধু সাদ্দাম হোসেনের। এ নিয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়। এই দ্বিমুখী পরকীয়ার জেরে সাদ্দাম হোসেনকে (৩৭) খুন করেন বন্ধু মঞ্জুরুল ইসলাম।

খুনের ঘটনার দুদিন পরেই ঘাতক বন্ধু মঞ্জুরুল ইসলাম (৩৬) ও তার সহযোগী পরকীয়া প্রেমিকা বা দাদী, যার বয়স ৩০ বছর, দুজনকে গ্রেফতার করেছে রংপুর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে খুনের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন গ্রেফতারকৃতরা।

শুক্রবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার আবু মারুফ হোসেন এ তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, গ্রেফতারকৃত নারীর স্বামী মহানগরের আশি বছরের বৃদ্ধ। ওই নারীর সঙ্গে সম্পর্কে নাতি মঞ্জুরুল ইসলামের সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একইসঙ্গে মঞ্জুরুলের বন্ধু সাদ্দামের সঙ্গে ওই নারীর পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠার বিষয়টি গোপন ছিল। পরে তা জানাজানি হলে দুই বন্ধুর সম্পর্কের মাঝে টানাপোড়েন শুরু হয়। এ ঘটনার পর সাদ্দামকে এড়িয়ে যেতে চান ওই নারী। তবে সাদ্দামের কারণে তা সম্ভব হয়নি।

আবু মারুফ হোসেন জানান, গ্রেফতারকৃত নারী স্বীকার করেছেন- স্বামী বয়স্ক হওয়ায় শারীরিক চাহিদা পূরণ না হওয়ায় প্রতিবেশী নাতি মঞ্জুরুল ইসলামের সঙ্গে তিনি পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এক বছর ধরে একইসঙ্গে প্রতিবেশী সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গেও ওই নারীর পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি জানাজানি হলে মঞ্জুরুলের সঙ্গে ওই নারীর একাধিকবার বাকবিতণ্ডা হয় এবং সাদ্দামকে সরে যেতে সতর্ক করে দেন। এক পর্যায়ে ওই নারীকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। কারণ তাকে সাদ্দাম নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাত। এক পর্যায়ে ওই নারী যেকোনো মূল্যে সাদ্দামকে এ পথ থেকে সরিয়ে দিতে বলেন মঞ্জুরুলকে।

গত ২৬ জুন রাতে রাত ২টার দিকে ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ওই নারীর বাড়ির উঠানে সাদ্দামকে দেখতে পান মঞ্জুরুল। বাড়ির লোকদের কাছে ধরা পড়ার ভয়ে তারা সেখান থেকে বেরিয়ে মাঠের দিকে যেতে থাকেন। সাদ্দাম পেছন থেকে হাঁসুয়া নিয়ে মঞ্জুরুলকে সামনে রেখে এগিয়ে যেতে থাকেন। এক পর্যায়ে সাদ্দাম কাদায় পা পিছলে পড়ে যান। সুযোগ বুঝে সঙ্গে থাকা দা দিয়ে সাদ্দামকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেন মঞ্জুরুল। হত্যার পর ওই নারীকে বিষয়টি জানান তিনি। তারা দুজনেই বিষয়টি গোপন রাখেন।

লাশ উদ্ধারের পর গোয়েন্দা পুলিশ ক্লুলেস এই হত্যার ঘটনা উদঘাটনে তদন্ত শুরু করে। পরে গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে খুনের রহস্য উদঘাটন করে। শুক্রবার ভোররাতে নিজ বাড়ি থেকে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ।

উপ-পুলিশ কমিশনার আবু মারুফ হোসেন বলেন, ওই নারীর স্বামীর বয়স প্রায় ৮০ বছর এবং তার স্বামী ছেলেকে নিয়ে আলাদা ঘরে থাকতেন। একাই একটি ঘরে থাকায় সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়েছিল নারী। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।