দক্ষিণ কোরিয়ার নতুন দুই ধরনের ভিসার ঘোষণা

::
প্রকাশ: ২ years ago

রাশিদুল ইসলাম জুয়েল, দক্ষিণ কোরিয়া প্রতিনিধি:
দক্ষিণ কোরিয়া সরকার করোনা মহামারীর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত পর্যটন শিল্পকে চাঙ্গা করার জন্য নতুন দুটি ভিসা চালু করছে। ভিসা ২টি হলো কে-কালচার ভিসা এবং দ্য ওয়ার্কেশন ভিসা। একই সঙ্গে ২০২৩ ও ২০২৪ সালকে ‘ভিজিট কোরিয়া ইয়ার’ হিসেবে ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার।

কে-কালচার ভিসা মূলত ওই ধরনের বিদেশি নাগরিকদের জন্য যারা কে -পফ এবং কোরিয়ান সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহী তারা নির্দিষ্ট সময় কোরিয়া অবস্থান করে কোরিয়ান সংস্কৃতি সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জন এবং প্রশিক্ষণ করতে পারবে। দেশটির সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে, ২০২৩ সালের প্রথমার্ধে এই ভিসা চালু করা হবে।

ওয়ার্কেশন ভিসা হলো ভ্রমণ এবং কাজ দুইটাই একসাথে করা। বিদেশি নাগরিকরা তাদের নিজের দেশের প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অবস্থায় কোরিয়া ভ্রমণ করবে এবং ভ্রমণরত অবস্থায় রিমোটলি তার কাজও চলবে।এটি চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে চালু করা হবে।

এদিকে, নতুন বছরে দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশ থেকে আরও ৭ হাজার কর্মী যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেমের (ইপিএস) আওতায় ২০০৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়ায় মোট ২৭ হাজার ৯৩৫ জন কর্মী পাঠানো হয়েছে। এরমধ্যে ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের ২৮ তারিখ পর্যন্ত মোট পাঁচ হাজার ৮৯১ জন গেছেন।

সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে দেশটিতে ২০২৩ সালে প্রায় ৭ হাজার কর্মী পাঠানোর প্রত্যাশা করছেন বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল)।

বোয়েসেল সূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালে দক্ষিণ কোরিয়া ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে কর্মী পাঠানোর বিষয়ে সমঝোতা চুক্তি হয়। ২০০৮ সাল থেকে দেশটিতে দক্ষ কর্মী পাঠানো শুরু হয়। বোয়েসেল ও দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের হিউম্যান রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট সার্ভিস অব কোরিয়া (এইচআরডি কোরিয়া) স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় কর্মী পাঠানোর কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। ইপিএসের আওতায় কয়েক ধাপে নির্বাচনের পর চাহিদা অনুসারে দক্ষ কর্মীরা কোরিয়ার শিল্প খাতে যাওয়ার সুযোগ পান।

বোয়েসেলের তথ্য মতে, সর্বশেষ ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত শুধু দক্ষিণ কোরিয়া গেছেন পাঁচ হাজার ৮৯১ জন বাংলাদেশি কর্মী। বিদায়ী বছরেই সর্বাধিক সংখ্যক কর্মী পাঠিয়ে রেকর্ড করেছে সরকার। আগামী বছরও দেশটিতে প্রায় ৭ হাজার কর্মী যেতে পারবেন বলে আশা করছে বোয়েসেল। বর্তমানে জামানতসহ সব কিছু মিলিয়ে নতুন কর্মীদের দুই লাখ টাকার মতো খরচ পড়ে। দক্ষিণ কোরিয়ার চাহিদা অনুসারে পর্যায়ক্রমে এই শ্রমিক পাঠানো চলমান থাকবে।

বোয়েসেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মল্লিক আনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশি কর্মীদের সংখ্যা বৃদ্ধি, যোগ্য কর্মী প্রস্তুত এবং তাদের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বৈচিত্র্য আনতে ঢাকায় দেশটির দূতাবাস এবং ইপিএস সেন্টারের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে।

তিনি বলেন, দক্ষিণ কোরিয়া সরকার ইপিএসের মাধ্যমে বাংলাদেশসহ নির্বাচিত ১৬টি দেশ থেকে মাঝারি ও স্বল্প-দক্ষ বিদেশি কর্মী নিয়োগ করছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে বাংলাদেশি কর্মীদের রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল ১৩৫.৪৬ মিলিয়ন ডলার। দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকদের রেমিট্যান্স আয়ের ১৫টি প্রধান উৎসর অন্যতম।