দুইবার ঘর বেঁধেছিলেন ঢালিউড চিত্রনায়ক শাকিব খান, সংসার জীবনে একবারও স্থায়ী হতে পারেননি। প্রেম-বিয়ে-সংসার নিয়ে বছরজুড়েই আলোচনায় থাকেন তিনি। মাঝে তৃতীয় বিয়ে নিয়েও গুঞ্জন উঠেছিল অভিনেতার। সম্প্রতি ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে প্রাক্তন দুই স্ত্রী-সন্তান ও তৃতীয় বিয়ে নিয়ে কথা বলেছেন শাকিব।
প্রথমে ভালোবেসে বিয়ে করেন চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাসকে। আব্রাহাম খান জয় নামে তাদের একটি পুত্রসন্তান রয়েছে। কিন্তু তাদের সেই সংসারে বেজে ওঠে বিচ্ছেদের সুর। বিবাহবিচ্ছেদের মাধ্যমে দাম্পত্য জীবনের ইতি টানেন তারা।
অপুর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর চিত্রনায়িকা শবনম বুবলীকে বিয়ে করেন শাকিব। এখানেও থিতু হতে পারেননি তিনি। এ সংসারেও শেহজাদ খান বীর নামে আরেকটি পুত্র সন্তান রয়েছে তার।
কাজ, তৃতীয় বিয়ে এবং সন্তানদের নিয়ে আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেছেন এই চিত্রনায়ক। তিনি বলেন, ব্যক্তিগত জীবনে তারা আঘাত তো দিয়েছেই, কোনো ভাঙনই তো সুখের নয়। যতটুকু হয়েছে, হয়তো সেটুকুই হওয়ার ছিল। ‘লাইফ ইজ আ জার্নি’- এই যাত্রায় অনেকের সঙ্গে দেখা হয়, পরিচয় হয়। আমার জীবনে দুইজন (অপু-বুবলী) মানুষ অতীত, এটা আগেও বলেছি। অতীত হিসেবে তারা থাকুক। এসব নিয়ে আমার কোনো আক্ষেপ নেই। যা হয়েছে হয়তো ভালোর জন্য হয়েছে।
শাকিব আরও বলেন, আমার দুই সন্তান, বাবা-মা, বোন ও তার পরিবার, কিছু কাছের আপন মানুষ, আমার ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান এবং দেশ-বিদেশের কোটি কোটি ভালোবাসার মানুষ রয়েছেন, যারা আমাকে অঢেল ভালোবাসা দেন, তাদেরকে নিয়ে আমি খুব ভালো আছি।
এ সময় শাকিবের কাছে জানতে চাওয়া হয়, আপনার তৃতীয় বিয়ের গুঞ্জন উঠেছে? পাত্রী নাকি চিকিৎসক! সত্যিই কি আবারও সংসার জীবনে দেখা যাবে শাকিবকে? হবেন? জবাবে চিত্রনায়ক বলেন, মানুষ একা থাকতে পারে না। পরিবার, সমাজ নিয়ে বেঁচে থাকে। দেখা যাক, কোনো তাড়াহুড়া নেই যে, নির্দিষ্ট কোনো বছরের মধ্যে বিয়ে করতে হবে। যদি তেমন কিছু হয় পারিবারিকভাবে হবে এবং সেটা বিয়ের পর্যায়ে যাবে। আমার বাবা-মার যেহেতু বয়স হয়েছে সন্তান হিসেবে তারা আমাকে সংসারী দেখতে চান।
দুই ছেলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রসঙ্গে শাকিব বলেন, ওরা এখনও অনেক ছোট। বুঝতে শেখেনি। ওরা স্কুলে যাচ্ছে, লেখাপড়া করছে। বাবা হিসেবে আমি ওদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ চাই। আমি চাই ওরা আমার চেয়েও অনেক বড় হোক। ওদের সুন্দর ভবিষ্যৎ দেওয়ার জন্য যা যা করতে হয় বাবা হিসেবে আমি করে যাব।
এদিকে ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খান চলতি মাসেই মুম্বাইয়ে ‘বরবাদ’-এর শুটিং শুরু করবেন। আগামী বছর সঠিক সময় দেখে মুক্তি পাবে সিনেমাটি। তবে অনন্য মামুনের ‘দরদ’ সিনেমা মুক্তি নিয়ে খুবই উচ্ছ্বসিত নায়ক। কাজের ভিড়ে সবসময় ব্যক্তিগত জীবন সামনে চলে আসে ঢাকাই সুপারস্টারের। কাজ, তৃতীয় বিয়ে এবং সন্তানদের নিয়ে তিনি কথা বলেছেন আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে।
শাকিবের আরেক নাম ‘কিং খান’, ভারতে শাহরুখ খানকেও এই নামে ডাকা হয়। আপনিকি তার সঙ্গে নিজের কোনও মিল খুঁজে পান? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শাহরুখ খান একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন মহাতারকা। এশিয়া মহাদেশের তারকাদের কাছে উনি অনুপ্রেরণার আরেক নাম। আমি মনে করি, শুধু ভারত নয়, সমগ্র মহাদেশের গর্ব তিনি। তার সঙ্গে তুলনার প্রশ্নই ওঠে না, আমি চিন্তাও করিনি কখনও এমন। তবে মানুষ একটু হলেও তার মতো করে আমাকে ভালবাসেন; বোধহয় এই মিলটুকু খুঁজে পাই। এটাই ভাল লাগার জায়গা।
আসন্ন ছবি ‘দরদ’-এ সোনাল চৌহানের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি জানালেন, সোনাল ভীষণ সহযোগিতা পরায়ণ। চেষ্টা করেছেন ভেঙে চুরে নতুন ভাবে নিজেকে উপস্থাপন করার। শুটিংয়ের সময় ওর যে মনোযোগ দেখেছি, আমার খুব ভাল লেগেছে। আমার বিশ্বাস, বাংলাদেশ এবং ভারত বিশ্বের যেখানে ‘দরদ’ ছবিটি দেখানো হবে, দর্শকের ওর কাজ ভাল লাগবে।
দেশের বড় একটা পালাবদল অর্থনীতির ওপর প্রভাব পড়েছে, সিনেমা হলে ভাঙচুর হয়েছে, বিষয়টি নিয়ে শাকিব খান বলেন, এমন একটা ঘটনার পর সব কিছু স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে সময় লাগে। আমাদের এখানকার একজন শিল্পীর ছবি যখন পশ্চিমবঙ্গে মুক্তি পেল, তখনই ওখানাকার একটি আন্দোলনের ফলে মুখ থুবড়ে পড়ল সেটা। সবখানে কমবেশি ওলট-পালট থাকে। দেশের সঙ্কটে সাধারণ মানুষ প্রতিবাদ করবে, আন্দোলন করবে এটাই স্বাভাবিক। সাধারণ মানুষই অনেক কিছু ভাঙে। আবার তারাই গড়ে! নতুন কিছু এলে নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি হয়। তাই সব কিছু আবার যে ভাবে গড়ে উঠছে, আমি আশা করছি সবাই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে কাজে মনোযোগী হয়েছেন। আমি আশা করছি, আমাদের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি আগের চেয়ে আরও দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাবে।