তৃণমূল পর্যায়ে পরিবেশ ও মানবাধিকার উন্নয়নে স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের ভূমিকা

::
প্রকাশ: ২ years ago

লায়ন মো. গনি মিয়া বাবুল:
পরিবেশ ও মানবাধিকার শব্দ দুটি বহুশ্রুত ও বহুল আলোচিত। ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর জাতিসংঘের ৩০টি ধারা সম্বলিত “সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা” গৃহীত হয়। সংবিধানে বলা হয়েছে, “প্রজাতন্ত্র হইবে একটি গণতন্ত্র, যেখানে মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার নিশ্চয়তা থাকিবে, মানবসত্তার মর্যাদা ও মূল্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নিশ্চিত হইবে,” (গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান, একাদশ অধ্যায়)। কিন্তু জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের প্রকাশিত বহু গ্রন্থেই মানবাধিকার প্রসঙ্গটি গুরুত্ব দেয়া হয়নি। যেমন, তৃতীয় শ্রেণীর পরিবেশ পরিচিতি সমাজ বইয়ের “অধ্যায়-এক” এর প্রথম পাঠ “পরিবেশ কী”। এতে বলা হয়েছেঃ আমাদের চারপাশে কী আছে, এসো আমরা তা দেখি। কী দেখতে পাচ্ছি? ঘরবাড়ি, দালানকোঠা, গাছপালা, রাস্তাঘাট, দোকানপাট, বিদ্যালয়, খেলার মাঠ, মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা, গীর্জা। আমরা আরও দেখি খাল-বিল, নদী-নালা পুকুর, ডোবা, পশু-পাখি, ফুল-ফল ইত্যাদি। আমাদের চারপাশের এসব কিছু নিয়ে আমাদের পরিবেশ। (পৃষ্ঠা-১) এখানে লক্ষ্য করার বিষয়, তৃতীয় শ্রেণীর পরিবেশ পরিচিতি সমাজ বইতে “পরিবেশ” এর সঙ্গায়ন প্রচেষ্টায় পরিবেশের প্রধান উপাদান যে, “মানুষ” সে কথাই উল্লেখ করা হয়নি। অথচ মানুষ অন্য উপাদানগুলোর মতো একটি মাত্র নিস্ক্রিয় উপাদান নয়। বরং মানুষ এবং মানব সৃষ্ট উপাদান “সামাজিক পরিবেশ” তৈরী করে। অতএব পরিবেশ কী আলোচনায় “মানুষ” অনুপস্থিত থাকতে পারে না।

আর “মানুষ” কে সূচনাতেই যদি অনুপস্থিত রাখা হয় তাহলে তার অধিকার বা “মানবাধিকার” তো অনুপস্থিত থাকবেই। অর্থাৎ মানুষই হচ্ছে পরিবেশের প্রধান উপাদান। আবার এই মানুষের দ্বারাই প্রতিদিন পরিবেশ কোন না কোনভাবে নষ্ট হচ্ছে। ফলে পরিবেশের উন্নয়ন ও পরিবেশ দূষণ রোধে মানুষকেই সচেতন হয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

ক্রমাগতভাবে উত্তপ্ত হচ্ছে পৃথিবী, গলছে বরফ আমাদের প্রস্তুতি কি যথেষ্ট? এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞগণ অভিমত দিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের যেসব সংকট সৃষ্টি হবে তা মোকাবেলায় আমাদের প্রস্তুতি যথেষ্ট নয়। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও পরিবর্তিত পরিবেশে টিকে থাকার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি পর্যায়ে দক্ষতা বৃদ্ধি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের ভূ-পৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে ধীরে ধীরে। তথ্যমতে, গত ১০০ বছরে বাংলাদেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ০.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস এবং সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে ০.৫ মিটার। বিশেষজ্ঞদের মতে, সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা ১ মিটার বৃদ্ধি পেলে বৃহত্তর খুলনার শতকরা ৬৫ ভাগ, বরিশালের ৯৯ ভাগ, নোয়াখালীর ৪৪ ভাগ, ফরিদপুরের ১২ ভাগ ও পুরো পটুয়াখালী এলাকা তলিয়ে যাবে। ফলে উদ্বাস্তু হবে দেশে প্রায় ২ কোটি লোক। বিশেষজ্ঞরা অভিমত দিয়েছেন, ভূ-পৃষ্ঠের জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও কৃষির পরিবর্তনের মাধ্যমে আগামী ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের প্রায় ১৫ কোটি মানুষ পরিবেশগত দূর্যোগের সম্মুখীন হবে। জানা যায়, সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে দেশের অভ্যন্তরীণ নদীগুলোতে পানি বৃদ্ধি পাবে। ফলে মোট ভূ-খন্ডের ২০ ভাগ ক্ষতির সম্মুখীন হবে। এছাড়া লবণাক্ততা বৃদ্ধির কারণে দেশের ৩২ ভাগ ভূমিকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করবে এবং সুন্দরবনের ৪ লাখ ১৬ হাজার হেক্টর ভূমিসহ বনায়নকৃত বনভূমি পর্যায়ক্রমে ধ্বংস হতে থাকবে।

পরিবেশ বিজ্ঞানীরা পরিবেশগত বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে দায়ী করেছেন, (১) উন্নত বিশ্বের পারমানবিক অস্ত্র পরীক্ষা, (২) কল-কারখানা ও গাড়ির কালো ধোঁয়া (৩) শষ্যক্ষেতে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার (৪) ফসলের জমিতে অতিরিক্ত রাসায়নিক সার প্রয়োগ (৫) কলকারখানা থেকে নিক্ষিপ্ত রাসায়নিক বর্জ্য (৬) অপরিকল্পিত ও যত্রতত্র তৈরী করা বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ (৭) শব্দ দূষণ (৮) বাতাসের বিষাক্ত গ্যাস (৯) নদী ও জলাধারা দূষণ (১০) যত্রযত্র বর্জ্য ও ময়লা আবর্জনা রাখা (১১) বায়ু দূষণ (১২) পানি দূষণ (১৩) অপ্রতুল সুয়ারেজ (১৪) ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপ (১৫) নদী বা জলাধারে পায়োবর্জ্য ও শিল্প বর্জ্য নিক্ষেপ (১৬) ফসলের জন্যে অধিক পানি সেচ (১৭) অধিক হারে বৃক্ষ নিধন ও বনভূমি উজাড় (১৮) পাহাড় বা টিলা কেটে ধ্বংস করা (১৯) খাল-নালা বা জলাভূমি ভরাট করা (২০) ভূমিক্ষয় (২১) গ্রীন হাউজ প্রভাব (২২) আবহাওয়া ভূ-মন্ডলীয় তাপ বৃদ্ধি (২৩) সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি (২৪) মরুময়তা (২৫) ওজন স্তর ক্ষয় (২৬) পলিথিন ও প্লাস্টিক দ্রব্যের যথেচ্ছা ব্যবহার (২৭) ধূমপান, তামাক এবং তামাকজাত সামগ্রীর ব্যবহার ইত্যাদি। পরিবেশ বির্যয়ের উল্লেখিত ক্ষতিকর দিকগুলো চিহ্নিত করে সেই সাথে ব্যাপক গণসচেতনতা বাড়াতে হবে। এই জন্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। পরিবেশ বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচতে হলে আমাদের এখনই যথাযথ পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। পরিবেশ উন্নয়ন ও ধূষণরোধে গণসচেতনতা আরো বৃদ্ধি করতে হবে। আর এই কাজে তৃণমূল পর্যায়ে নির্বাচিত স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিগণ গুরুত্বপূর্ণ রাখতে পারেন। তৃণমূল পর্যায়ে পরিবেশ ও মানবাধিকার উন্নয়নে স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিগণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমি রাখতে পারেন। কারণ বাংলাদেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর নাগরিক সুযোগ সুবিধা পাওয়ার ও গণতন্ত্র চর্চার সবচেয়ে নিকটতম প্রতিষ্ঠান হচ্ছে স্থানীয় সরকার। স্থানীয় সমস্যাবলীর সুষ্ঠু সমাধান নিশ্চিত করবার জন্য স্থানীয় সরকারের প্রয়োনীয়তা অনস্বীকার্য। যে কোন স্থানীয় সমস্যা দ্রুত ও কম খরচে সমাধান করতে স্থানীয় সরকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। গণতন্ত্রের প্রথম যাত্রা শুরু হয় স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে, স্থানীয় লোকজনকে উন্নয়নমূলক কাজে উদ্বুদ্ধ করতে স্থানীয় সরকার সংস্থাগুলোর গুরুত্ব অপরিসীম। স্থানীয় সরকারের ভূমিকা নিম্নে উল্লেখ করা হলো।

(১) বর্তমানে রাষ্ট্রের কার্যাবলী বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে দূর থেকে সকল কাজ সব সময় দক্ষতার সাথে সম্পন্ন করা সম্ভব হয়ে উঠে না। তাই স্থানীয় সমস্যাবলীর সুষ্ঠু সমাধান নশ্চিত করবার জন্য স্থানীয় সরকারের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
(২) স্থানীয় সরকার স্বল্প সময়ে, স্বল্প ব্যয়ে ও স্বল্প পরিশ্রমের বিনিময়ে স্থানীয় জনসাধারণের চাহিদা মোতাবেক স্থানীয় সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে।
(৩) স্থানীয় সরকার একটি ভৌগোলিক সীমারেখায় বিদ্যমান, যেমন ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা, পৌর, সিটি কর্পোরেশন এলাকা ইত্যাদিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠে। ফলে স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে রাজনৈতিক ও নাগরিক চেতনা বৃদ্ধি পায়।
(৪) গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক বিধিব্যবস্থা ও দেশের সুশাসন প্রতিষ্ঠায় স্থানীয় সকারের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। কারণ গণতন্ত্রের প্রথম পাঠ শুরু হয় স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে।
(৫) জাতীয় সরকারের কার্যক্রমে জনগণ প্রত্যেক্ষভাবে অংশ গ্রহণের সুযোগ না পেলেও স্থানীয় সরকারের কার্যক্রম তাদের অংশ গ্রহণের সুযোগ আছে।
(৬) জাতীয় ও স্থানীয় পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে স্থানীয় সরকার সহায়ক হিসেবে কাজ করে।
(৭) সরকারের পরিকল্পনা প্রণয়ণে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ ও সার্ভে করার জন্য স্থানীয় সরকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
(৮) ক্ষুদ্র প্রকল্প ও কুটির শিল্পসহ এলাকার উন্নয়নে গৃহীত কর্মসূচী স্থানীয় সরকারের মাধ্যমেই বাস্তবায়ন সম্ভব।
(৯) স্থানীয় সরকার স্থানীয় জনগণকে সরকারের উন্নয়নমূলক কাজে উদ্বুদ্ধ করতে পারে।
(১০) স্থানীয় সরকার স্থানীয় জনগণের অসন্তুষ্ট দূর করতে পারে। স্থানীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে স্বনির্ভরতা অর্জন সম্ভব।
(১১) স্থানীয় সরকার জনগণের প্রতিনিধি বলে তাদেরকে স্থানীয় জনগণের কাছে দায়ী থাকতে হয়। ফলে উন্নয়নমূলক কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্যে স্থানীয় সরকার সদা সচেষ্ট থাকেন।
(১২) দারিদ্র বিমোচন, নিরক্ষরতা দূরীকরণ, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, সন্ত্রাস দমন, কর্মসংস্থান তৈরী, কৃষিক্ষেত্রে উন্নয়ন, সাহিত্য-সাংস্কৃতিক উন্নয়ন প্রভৃতি ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ অবদান রেখে স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিগণ পরিবেশ ও মানবাধিকার উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে।
(১৩) যে কোন জাতীয় দুর্যোগে স্থানীয় সরকার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
(১৪) এলাকার আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করা এবং এ বিষয়ে প্রশাসনকে সহায়তা প্রদানে স্থানীয় সরকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
(১৫) কৃষি, বৃক্ষরোপন, মৎস্য ও পশু সম্পদ, স্বাস্থ্য, কুটির শিল্প, সেচ, যোগাযোগ ইত্যাদি ক্ষেত্রে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে স্থানীয় সরকারের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে।
(১৬) জনগণের সম্পত্তি যথা রাস্তা, ব্রীজ, কালভার্ট, বাঁধ, খাল, টেলিফোন, বিদ্যুৎ ইত্যাদি সংরক্ষণে স্থানীয় সরকারের ভূমিকা অনেক।
(১৭) স্থানীয় সম্পদের উন্নয়ন ও তার ব্যবহার নিশ্চিত করতে স্থানীয় সরকারের ভূমিকা ব্যাপক।
(১৮) স্বাস্থ্য সম্মত পায়খানা ব্যবহারে এবং পরিবেশ দূষণরোধে স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিগণের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
(১৯) জনগণের সম্পত্তি ও সরকারি বিভিন্ন সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণে স্থানীয় সরকারের গুরুত্ব অনেক।
(২০) স্থানীয় জনগণের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে স্থানীয় সরকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

উল্লেখ্য যে, স্থানীয় জনগণের চাহিদা মোতাবেক সুযোগ সুবিধা প্রদানে সংস্থাগুলো নির্দলীয়ভাবে ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করার কথা। কিন্তু পরিতাপের বিষয় এই ক্ষেত্রে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ প্রকট থাকাতে স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিগণ স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না। ফলে দেশ স্বাধীন হওয়ার ৪৭ বছরেও দেশে আশানুরূপ উন্নয়ন সম্বব হয়নি।

বর্তমান সরকার স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করতে বিভিন্ন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ফলে দেশ দ্রুত উন্নয়ন অগ্রগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বে দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি বর্তমানে বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত। বাংলাদেশ বর্তমানে উন্নয়নে বিশ্বের রোল মডেল।

বর্তমানে পল্লী অঞ্চলে স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ এবং শহর অঞ্চলের স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশন কাজ করছে।
দেশে গণতন্ত্রের মজবুত ভিত তৈরী করতে ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করা প্রয়োজন। প্রত্যেক নাগরিকের জন্য অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, কর্মসংস্থান দূষণমুক্ত পরিবেশ ইত্যাদি সম্পর্কিত যাবতীয় ব্যবস্থা ও সুযোগ সুবিধা স্থানীয় জনগণের কাছে সহজলভ্য করার বিষয়ে জাতীয় সরকারকে স্থানীয় সরকার সহায়তা প্রদান করতে পারে, এছাড়াও পল্লী উন্নয়ন, নারী উন্নয়ন, পরিবেশ উন্নয়ন, মানবাধিকার উন্নয়ন সংরক্ষণ, জ্বালানী, বিদ্যুৎ, সড়ক, যোগাযোগ, আইন শৃঙ্খলা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা, কৃষি উন্নয়ন প্রভৃতি ক্ষেত্রে স্থানীয় সরকারের অবদান অনস্বীকার্য। ফলে উন্নয়নের জন্য অবশ্যই স্থানীয় সরকারকে অধিক শক্তিশালী করতে হবে। মূলত শক্তিশালী স্থানীয় সরকার হচ্ছে সকল উন্নয়নের বাহক। তৃণমূল পর্যায়ে পরিবেশ ও মানবাধিকার উন্নয়নে স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিগণের ভূমিকা সবচেয়ে বেশী তবে এ ক্ষেত্রে স্থানীয় সরকারকে অবশ্যই শক্তিশালী করতে হবে। স্থানীয় জনগণের চাহিদা মোতাবেক সুযোগ সুবিধা প্রদানে স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিগণকে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে হবে।

তৃণমূল পর্যায়ে পরিবেশ ও মানবাধিকার উন্নয়নে প্রত্যাশিত সাফল্য অর্জন করতে হলে প্রয়োজনীয় ক্ষমতা, দায়িত্ব এবং সম্পদ অবশ্যই স্থানীয় সরকারকে দিতে হবে।

আসুন পরিবেশ ও মানবাধিকার উন্নয়নে আমরা নিজেরা সচেতন হই এবং অন্যদেরকে সচেতন করে তোলার মাধ্যমে আমাদের পরিবেশকে নিরাপদ রাখি এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও সংরক্ষণ করে একটি সুখী সমৃদ্ধশালী, সুস্থ্য ও সুন্দর বাংলাদেশ আগামী প্রজন্মের জন্যে গড়ে তুলি।

 

লেখক:
শিক্ষক, কলাম লেখক, প্রাবন্ধিক ও সংগঠক।
সভাপতি, বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদ, কেন্দ্রীয় কমিটি।