তাপপ্রবাহ থাকবে আরও এক সপ্তাহ

:: পাবলিক রিঅ্যাকশন রিপোর্ট | পাবলিকরিঅ্যাকশন.নেট
প্রকাশ: ৭ মাস আগে

আবহাওয়া নিয়ে কোনো সুসংবাদ দিতে পারছে না বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। আগামী এক সপ্তাহ পর্যন্ত চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকার পাশাপাশি বৃষ্টির সম্ভাবনার কথাও জানাতে পারেনি সংস্থাটি। সেই সঙ্গে আবহাওয়া অফিসের ৪৪টি স্টেশনের মধ্যে ৪০ স্টেশনের উপর দিয়ে মৃদু, মাঝারি ও তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘মার্চ, এপ্রিল ও মে এই তিন মাস হচ্ছে গরমের মাস। এর বাইরেও যদি বৃষ্টি না থাকে তাহলে জুন, জুলাই ও আগস্ট মাসও গরমের মাস বলা হয়। মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে কালবৈশাখীর বৃষ্টি থাকে এবং জুন, জুলাই ও আগস্ট মাসে বর্ষাকালের বৃষ্টি থাকে। কালবৈশাখীর বৃষ্টির স্থায়িত্ব কম থাকে এবং জুন, জুলাই ও আগস্টের বৃষ্টির স্থায়িত্ব বেশি থাকে। কালবৈশাখীর বৃষ্টিতে তাৎক্ষণিকভাবে তাপমাত্রা অনেক কমে এবং বর্ষাকালে অনেক সময় নিয়ে বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা সামান্য কিছু কমে। বর্তমানে যদি বৃষ্টি না হয়, তাহলে তাপমাত্রা আরও কিছুটা বাড়বে।’

# আবহাওয়া অফিসের ৪০ স্টেশনে বইছে তাপপ্রবাহ
# তাপপ্রবাহ থাকবে আরও এক সপ্তাহ
# ১০ দিনেও নেই ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা

সারা দেশে বৃষ্টি কবে হবে— এমন প্রশ্নে শাহীনুল ইসলাম বলেন, ‘কালবৈশাখীর বৃষ্টি কখন হবে না হবে, সেটা আগে থেকে বলা মুশকিল। যেই সিস্টেমগুলো বাংলাদেশের বাইরে তৈরি হয়, সেগুলোর বিষয়ে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা আগে পূর্বাভাস পাওয়া যায়। কিন্তু বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যেগুলো তৈরি হয়, সেগুলোর বিষয়ে পূর্বাভাস দিতে বেশি সময় পাওয়া যায় না। তবে দেশের অভ্যন্তরে যে সিস্টেমগুলো তৈরি হয়, সেগুলোর বিষয়ে স্পষ্টভাবে পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব হয়। দেশ এবং দেশের বাইরে তৈরি হওয়া সিস্টেমগুলোর বিষয়ে আমাদের মডেলগুলো যেসব ধারণা দেয়, তার উপর বিশ্লেষণ করে আমরা পূর্বাভাস দেই। তবে এটা যে, শতভাগ প্রতিফলিত হবে সেটারও কোনো নিশ্চয়তা নাই। আমাদের সিস্টেম অনুযায়ী আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ভালো কোনো বৃষ্টির পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে না।’

আরেক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এখন কালবৈশাখী ও ঘূর্ণিঝড়ের সময় হলেও আগামী ১০ দিনের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের কোনো আভাস পাওয়া যাচ্ছে না। বর্তমানে আবহাওয়ায় জলীয়বাষ্পের পরিমাণ কম। তাপমাত্রা যতই বেশি থাকুক না কেন, জলীয়বাষ্পের পরিমাণ কম হলে তাপমাত্রা সহনীয় পর্যায়ে থাকে। কারণ, জলীয়বাষ্পের পরিমাণ কম হলে শরীরের ঘাম দ্রুত শুকিয়ে যায়। তাপমাত্রা বেশি হওয়াতে গরম অনুভূত হচ্ছে কিন্তু অস্বস্তি লাগছে না। কারণ, শরীর ঘামলে তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যাচ্ছে।’

বাংলাদেশ আবহাওয়া অফিসের সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুযায়ী, দেশের বেশিরভাগ জায়গায় তাপপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। আবহাওয়া অফিসের ৪৪টি স্টেশনের মধ্যে ৪০ স্টেশনের উপর দিয়ে তাপপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যে ২৫টি স্টেশনে মৃদু (৩৬ ডিগ্রি থেকে ৩৭.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস), ১৪টি স্টেশনে মাঝারি (৩৮ ডিগ্রি থেকে ৩৯.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এবং একটি স্টেশনে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

এদিকে, মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার ঢাকাসহ দেশের চার বিভাগের দু-এক জায়গায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে। তবে দেশজুড়ে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।

আবহাওয়া অফিস জানায়, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

এরই মধ্যে গরমে সারাদেশে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। তীব্র গরমে রাতে ফ্যান চালিয়েও ঘুমাতে পারছে না মানুষ। তবে এই দাবদাহ থেকে সহসা মুক্তি মিলছে না বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।

এর আগে, সোমবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায়। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এদিকে, বুধবার ও বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে ঝড়-বৃষ্টি থাকতে পারে। এতে ঐ দুটি অঞ্চল থেকে তাপপ্রবাহ দূর হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।