ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী তানজিন তিশা। বুধবার (১৫ নভেম্বর) হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়েন এই অভিনেত্রী। তার অসুস্থতার খবরে পরবর্তীতে গুঞ্জন উঠে, মধ্যরাতে ‘প্রেমঘটিত’ কারণে ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন তিনি।
তানজিন তিশার বেশ কয়েকটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, শুরুতে এই অভিনেত্রীকে নেওয়া হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখান থেকে রাতেই নেওয়া হয় রাজধানীর পান্থপথে স্কয়ার হাসপাতালে। পরবর্তীতে সেই হাসপাতালে গিয়ে প্রথমে জানা যায়, তানজিন তিশাকে রাখা হয়েছে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ)।
পরে জানা যায়, সিসিইউ নয়, তাঁকে ছয়তলার হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) রাখা হয়েছে। তবে ভিন্ন নামে। হাসপাতালের কয়েকজন কর্মী নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানান, তানজিন তিশাকে ‘নাহার’ নামে ভর্তি করা হয়েছে। তাকে আড়াল করতেই এই চেষ্টা।
প্রসঙ্গত তানজিন তিশার ফেসবুক আইডির পুরো নাম দেওয়া তানজিন নাহার তিশা।
হাসপাতালের বেশ কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সকালেই তানজিন তিশাকে দেখতে একদফা হাসপাতালে গিয়েছিলেন অভিনেতা মুশফিক আর ফারহান। সেখানে গেলে তিশার বোনের সঙ্গে তার বাগবিতণ্ডা হয়। পরে ফারহান চলে যান।
তানজিন তিশার ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, দুপুরের আগে তিশাকে ১৩ তলায় কেবিনে স্থানান্তর করা হয়।
দুপুরের পরপরই হাসপাতাল থেকে বাসায় যান। বাসায় ফিরেই ফেসবুকে পুরো ঘটনা জানিয়ে পোস্ট দেন তিনি।
বর্তমানে তিশা সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন তার কাছের বেশ কয়েকজন নির্মাতা। খুব দ্রুতই কাজেও ফেরার ইচ্ছা আছে তার।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন ছোট পর্দার অভিনয়শিল্পীদের সংগঠন অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি আহসান হাবিব নাসিম। তিনি বলেন, বুধবার মধ্যরাতে বুকে ব্যথার কারণে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তিশাকে। সেখান থেকে তাকে রাজধানীর পান্থপথে একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়। বিষয়টি নিয়ে অফিশিয়ালিও বক্তব্য দিয়েছে অভিনয়শিল্পী সংঘ।
এদিকে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক পোস্টে দীর্ঘ এক স্ট্যাটাসে অসুস্থতার বিষয়ে বিস্তারিত জানান তানজিন তিশা।
পাঠকদের জন্য অভিনেত্রীর স্ট্যাটাসটি নিম্নে হুবহু তুলে ধরা হলো:
”আজকে কিছু ভুল নিউজ দেখতে পেলাম এবং সে বিষয়টি আমি সবাইকে পরিষ্কার করতে চাই। আসল বিষয়টি হলো, গতরাতে আমার ফুড পয়জনিং-এর পরে কিছু ব্যাপারে আমার খারাপ অবস্থা ছিলো তাই আমি একটা স্লিপিং পিল খাই এবং তার সাইডইফেক্ট হিসেবে আমার বমি হয় এবং হাসপাতালে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নেই। আমি এখন সম্পূর্ন সুস্থ।
আরো একটু বিষয় বলতে চাই, আমার বাবা গত দুই বছর আগে মারা যায় এবং বিষয়টি আমাকে এতোটাই শক্ত করে যে এই ধরনের পদক্ষেপ আমি এরকম কোন মানুষ অথবা যেকোন মানুষের জন্যই জীবনে নিবো না।
সবাইকে একটি বিষয় বলতে চাই যেটা আগেও বলেছি, আর্টিস্টদের একটা ব্যক্তিগত জীবন আছে। সেই ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আপনারা যদি কথা বলেন তাতে আমার বিন্দুমাত্র আপত্তি নেই। কিন্তু আমি একটি বিষয় বলতে চাই, ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আমারও হয়তো কখনো কিছু বলার থাকতে পারে। যদি থাকে এবং যারা আমার ক্ষতি করার চেষ্টা করছে মিডিয়ার কিছু মানুষ তাদের প্রত্যেকের নাম উল্ল্যেখ করে স্পেশালি [আমার ফিমেল-মেল কো-আর্টিস্ট, আমার ডিরেক্টর, আমার পার্সোনাল লাইফের মানুষ ] ***
যারা যারা আমার ক্ষতি করেছেন অথবা করার চেষ্টা করছেন তাদের প্রত্যেকটা মানুষের নাম ম্যানশন করে অতি শীঘ্রই আমার শুভাকাঙ্খিদের জন্য সাংবাদিক ভাই-বোনদের সাথে বসে প্রেস কনফারেন্স করবো। ধন্যবাদ। ”