ডিবি অফিসে গয়েশ্বরের খাওয়ার ছবি নিয়ে তোলপাড়, এ্যানি বলছেন ‘সরকারের ফাঁদ’

::
প্রকাশ: ১ বছর আগে

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের সঙ্গে ডিবিপ্রধানের খাবারের ছবি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া সরগরম। তবে, বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলছেন এটি ‘সরকারের ফাঁদ’।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায়, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে সঙ্গে নিয়ে শনিবার (২৯ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে দুপুরের খাবার খেয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
সেখানে দেখা যায়, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এবং ডিএমপির ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ একসঙ্গে নানা প্রকার মাছ, মাংস, বিরিয়ানি ও মাল্টা, ড্রাগনসহ বিভিন্ন প্রকারের ফল দিয়ে মধ্যাহ্নভোজ সারেন।
রক্তাক্ত সাদা পাঞ্জাবি পরেই তিনি ডিবি কার্যালয়ে দুপুরের খাবার খান। ধোলাইখালে অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যকার সংঘর্ষে আহত হন গয়েশ্বর। মুখে জখম হয়ে রক্তাক্ত হন তিনি। সেখান থেকে তাকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যায় পুলিশ। খাবার শেষে ডিবির একটি সাদা গাড়িতে করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে নয়াপল্টনে পৌঁছে দেন ডিবির সদস্যরা।
বেলা সাড়ে ৩টার দিকে ডিবির গেটে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে ডিবি কার্যালয় থেকে ডিবির গাড়িতে করে বিএনপি কার্যালয়ে পৌঁছে দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে সংঘর্ষের সময় সেভ করা হয়। ওই সময়ও বিএনপির কর্মীরা ঢিল ছুঁড়তে থাকেন। তাকে সেভ করে ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়।


এদিকে, ডিবিপ্রধানের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজের বিষয়ে জানতে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। এরপর এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির কাছে।
শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, ‘এটা সরকারের একটি সাজানো ট্র্যাপ (ফাঁদ)। আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে নিয়ে যেতে বিরোধীদলের অনেককেই নানা রকম ফাঁদে ফেলা হবে। আজকে গয়েশ্বর দাদা, আমান ভাইয়ের সঙ্গে হয়েছে। কাল আমার সাথেও হতে পারে’।
এসময় সরকারের এসব ‘কৌশল’ থেকে নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন এ্যানি।

অন্যদিকে, শনিবার দুপুরে রাজধানীর গাবতলীতে দলীয় কর্মসূচি পালনকালে সেখান থেকে বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমানকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। পথে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাকে দেখতে যায় প্রধানমন্ত্রীর একটি প্রতিনিধিদল। তারা প্রধানমন্ত্রীর পাঠানো দুপুরের খাবার, বিভিন্ন প্রকার মৌসুমি ফল ও জুসের প্যাকেট দেন আমানকে।
এদিন বিকেলে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে রাজধানীর অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে যাওয়ার পথে আমানউল্লাহ আমান নিজের ফেসবুক পেজ থেকে লাইভে এসে কথা বলেন। সেখানে তিনি দাবি করেন, খাবার এবং ফল পাঠানো এসব ‘নাটক’।
আমানউল্লাহ আমান বলেন, ‘আহত অবস্থায় হাসপাতালে থাকার সময় ওষুধ দিয়ে আমাকে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছিল। সে সময় কে বা কারা আমাকে দেখতে এসেছিল, খাবার বা ফলের ঝুড়ি দিয়ে গেছে, তা বোঝার মতো শারীরিক অবস্থা আমার ছিল না। আমি সেটা বুঝতে পারিনি।’
চলমান আন্দোলনে তার ভূমিকা বিতর্কিত করা, তার পিঠে ছুরি মারা এবং নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত করার জন্য এ নাটক সাজানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন আমানউল্লাহ আমান। তিনি বলেন, সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। এই আন্দোলনে আছি। এতে মৃত্যু হলেও পিছপা হবো না।
এ বিষয়ে নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানান ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান।