জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন দেশের ২৫ জন বিশিষ্ট নাগরিক।
সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের এর পক্ষে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদের পক্ষে আজ মঙ্গলবা (২৮ মার্চ) পাঠানো এক বিবৃতিতে তাঁরা বলেছেন,যুদ্ধাপরাধের দায়ে পাকিস্তানকে ক্ষমা চাইতে হবে, যুদ্ধাপরাধীদের দল জামাত নিষিদ্ধ করতে হবে।
বিবৃতিদাতারা বলেন,নিরস্ত্র বাঙালী জাতির উপর ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী স্বৈরশাসক ও তাদের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মিত্র মার্কিনীদের সহায়তায় বর্বোরচিত হত্যাকান্ডের ইতিহাস পৃথিবীর ইতিহাসে জঘন্যতম অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাত থেকে শুরু করে ১৬ ডিসেম্বর বাঙালী জাতির বিজয়ের প্রাক্কালে এই অপশক্তি ৩০ লক্ষ নিরীহ বাঙালীকে হত্যা করে। ৩ লক্ষের অধিক নারী এই সময়ে নিগৃহীত হয়। বাংলাদেশের প্রতিটি জনপদে এখনো এদের বর্বরতার স্বাক্ষ্য বহন করে। সারাদেশে পাকিস্তানী বর্বরদের সহযোগী হিসেবে তৎকালীন জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগ, নেজামে ইসলামী ও তাদের সহযোগী ইসলামী ছাত্র সংঘের নেতৃত্বে গড়ে উঠে আল-বদর, আল-শামস, রাজাকার বাহিনী। এই অপশক্তি সেদিন লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, নারী-ধর্ষণের মতো জঘন্য মানবতা বিরোধী অপরাধ সংঘঠিত করে এবং বাধ্য করে ১ কোটির উপর বাঙালিকে বন্ধুপ্রতিম ভারত রাষ্ট্রে আশ্রয় নিতে। স্বাধীনতা ৫২ বছর পরও পাকপ্রেমী মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী গোষ্ঠী এখনো এই দেশের ঘৃণিত জামাত ও পাক প্রেমে মগ্ন রয়েছে। সাম্রাজ্যবাদী মার্কিনী ও পাকিস্তানী স্বৈরশাসকদের এই জঘন্য অপরাধের বিষয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অসংখ্য প্রমান রয়েছে। সেদিন বিজয়ের উষালগ্নে সাম্রাজ্যবাদীদের নীল নকশা অনুযায়ী দেশের বরেণ্য বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, পেশাজীবীদের হত্যার মধ্যদিয়ে তারা চিরতরে বাঙালীর ইতিহাস মুছে দিতে চেয়েছে। আমরা স্বাধীনতার মাসে স্মরণ করি সেই সকল বীর শহীদদের গভীর শ্রদ্ধার সাথে। একইসাথে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে জামাতে ইসলামীসহ সকল ধর্মান্ধ রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানাই এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে পাকিস্তানকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানাই। পাকিন্তান থেকে বাংলাদেশের সমূদয় পাওনা বর্তমান বাজার মূল্যে ফেরত আনার দাবি জানাই। পাশাপাশি দ্রুত সময়ে ১৯৭১ এর গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে সরকারের কর্মতৎপরতার জোরদার করার আবেদন জানাই।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরদাতা হলেন:
১. এ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা
২. পঙ্কজ ভট্টাচার্য- সভাপতি, ঐক্য ন্যাপ
৩. রাশেদা কে চৌধুরী- তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা
৪. রামেন্দু মজুমদার- সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব
৫. ডাঃ সারওয়ার আলী- ট্রাস্ট্রি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
৬. অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন- সভাপতি সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন
৭. অধ্যাপক এম এম আকাশ- শিক্ষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
৮. অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস- নির্বাহী সভাপতি, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন
৯. ডাঃ রশীদ-ই মাহবুব- সাবেক সভাপতি, বিএমএ
১০. ডাঃ ফওজিয়া মোসলেম- সভাপতি, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ
১১. মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ- সভাপতি, জাতীয় শ্রমিক জোট
১২. এ্যাডভোকেট জাহিদুল বারী- সাধারণ সম্পাদক গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতি
১৩. ড. সেলু বাসিত- গবেষক ও শিক্ষাবিদ
১৪. ড. জোবায়দা নাসরিন কনা- শিক্ষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
১৫. এম এ সামাদ- সমাজ কর্মী
১৬. সালেহ আহমেদ- সাধারণ সম্পাদক, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন
১৭. রঞ্জিত কুমার সাহা- সিনেট সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
১৮. কাজল দেবনাথ- সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ
১৯. ড. সৈয়দ আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী- শিক্ষক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
২০. অলক দাশগুপ্ত- সভাপতি, উঠোন সাংস্কৃতি সংগঠন
২১. এ কে আজাদ- সমন্বয়ক, আনন্দন সাংস্কৃতিক সংগঠন
২২. জহিরুল ইসলাম জহির- সাবেক সাধারণ সম্পাদক, খেলাঘর
২৩. অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সবুজ- শিক্ষক নেতা
২৪. অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম- সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি
২৫. গৌতম শীল- সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্র লীগ, বিসিএল