নানা নাটকীয়তার পর ধর্ষণ ও অপহরণের অভিযোগ প্রত্যাহার করলেন খুলনার সেই নারী।
রোববার (২৮ জানুয়ারি) মধ্যরাতে মহানগরী সোনাডাঙ্গা থানায় হাজির হয়ে সেই নারী বলেন, আমাকে ধর্ষণ বা অপহরণ করা হয়নি।
হাসপাতালের সামনে থেকে তুলে নেওয়ার ৭ ঘণ্টা পর সেই মাইক্রোবাসে করেই খুলনা সোনাডাঙ্গা থানায় হাজির হয়েছিলেন তিনি ও তার মা। কোনো অভিযোগ না থাকায়, পুলিশ সবাইকে ছেড়ে দিয়েছে। তারপর ডুমুরিয়ার নিজ বাড়িতে ফিরে গেছেন তারা।
আরও পড়ুন: চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগকারী তরুণীকে হাসপাতাল থেকে অপহরণ
এরআগে, শনিবার রাতে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেন ওই নারী। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে অনেক দিন ধরে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ ছিল তার। শনিবার রাত সোয়া ১১টায় ওই নারী নিজেই খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি হন।
রোববার বিকেল সাড়ে ৫টায় তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হলে হাসপাতালের ওসিসির সামনে থেকে ফিল্মি স্টাইলে তরুণী ও তার মাকে মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয় ডুমুরিয়া উপজেলার রুদাঘরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গাজী তৌহিদু্জ্জামানকে। তিনি ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদের চাচাতো ভাই। এ ঘটনায় সারা দেশে তোলপাড় তৈরি হলে তৎপর হয় পুলিশ।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ একাধিক সূত্র জানিয়েছে, তুলে নেওয়ার পর ওই তরুণী ও তার মাকে কেশবপুর উপজেলার তাদের এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই মাইক্রোবাসে করে থানায় উপস্থিত হন তরুণী ও তার মা। থানায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন।
জিজ্ঞাসাবাদের পর গণমাধ্যমের কাছে তিনি দাবি করেন, ধর্ষণের শিকার হননি। তাকে তার ভাই ও এক ব্যক্তি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে নিয়ে ভর্তি করেছিলেন। রোববার বিকেলে সেখান থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর তিনি গাড়িতে নিজেই রওনা দেন এবং যশোরের কেশবপুরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। এরপর পুলিশ তাদের খবর দিলে তারা থানায় এসেছেন।
কেন ওই দু’জন তাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন– সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি কোনো জবাব দেননি। নিজে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত দাবি করে অতিরিক্ত প্রশ্ন করলে ‘পাগল’ হয়ে যাবেন বলেও দাবি করেন।
সোনাডাঙ্গা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিরুল ইসলাম জানান, জিজ্ঞাসাবাদে ওই তরুণী জানিয়েছেন, ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ তাকে ধর্ষণ করেননি। এ ছাড়া খুমেক হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর তাকে কেউ অপহরণও করেনি। নিজেই এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন।
আমিরুল ইসলাম আরও জানান, অপহরণের অভিযোগে আটক করা এজাজের চাচাতো ভাই গাজী তৌহিদুজ্জামানের বিরুদ্ধেও ওই তরুণীর কোনো অভিযোগ নেই। সে কারণে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে প্রথম থেকেই গাজী এজাজ বলেছিলেন, এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। সামনে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন, কেউ হয়তো ওই নারীকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করাচ্ছে।