জনগণ যদি আমাকে নির্বাচিত করে, তবে প্রথমেই সিলেট নগরের উন্নয়নের একটি মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের আশা রাখি। সমাজের সকল পেশাজীবী ও ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে নগরের মানুষের মতামতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। যার উদ্দেশ্য হবে ‘গ্রীণ-ক্লিন-স্মার্ট সিলেট’ প্রতিষ্ঠা করা বলে মন্তব্য করেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের(সিসিক) মেয়র প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
শনিবার (১৭ জুন, ২০২৩) সিলেট নগরীর একটি অভিজাত হোটেলে ২১ দফার ইশতেহার ঘোষণা করেন দেশের সবচেয়ে বড় দল আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান।
ইশতেহার ঘোষণার আগে তিনি বলেন, সিলেট একটি সম্ভাবনাময় নগরী। পরিকল্পিত নগরায়নের অভাবে আমাদের এই প্রিয় শহরে এখনো বহু সমস্যা বিদ্যমান, যা সমাধানে প্রয়োজনে একজন কর্মতৎপর নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, যিনি জনগণ ও সরকারের হয়ে নাগরিকদের এসব সমস্যার সমাধান করবেন। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সঙ্গে সংযোগ সৃষ্টিকারী নির্বাচিত নেতৃত্বের মাধ্যমেই অধিকতর যুগোপযোগী টেশসই উন্নয়ন সম্ভব।
প্রবাসী আনোয়ারুজ্জামান বলেন, প্রতিটি শহর নিমার্ণের পেছনে একটি পরিকল্পিত আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গি থাকা জরুরি, যার ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে নাগরিক সংস্কৃতি, মূল্যবোধ, মানবিকতা, জীবনাচরণ, উন্নয়ন পরিকল্পনা ও শহরটির ভবিষ্যৎ। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পাঁচ দশকেরও বেশি সময় পার হলেও, প্রাচীন শহর সিলেটকে পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে নজর দেয়া হয়নি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদেরকে বাংলাদেশ উপহার দিয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ তারই সুযোগ্য কন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রযুক্তিনির্ভর অর্থাৎ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মানের দ্বারপ্রান্তে। তিনি ইতোমধ্যে চারটি মূল লক্ষ্য নির্ধারন করে ২০৪১সালে স্মার্ট বাংলাদেশের রূপকল্প প্রণয়ন করেছেন। এর প্রধান লক্ষ্যমাত্রাগুলো হল- ১. স্মার্ট সিটিজেন, ২. স্মার্ট ইকোনমি, ৩. স্মার্ট গভর্নমেন্ট ও ৪. স্মার্ট সোসাইটি।
মেয়র প্রার্থী আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ এর প্রথম স্মার্ট নগরী হিসেবে আমি সিলেট নগরকে গড়ে তুলতে চাই। স্মার্ট বাংলাদেশের সুফল কাজে লাগিয়ে সিলেট নগরের প্রতিটি মানুষ যাতে উপকৃত হতে পারে এ নিয়ে রয়েছে আমার বিস্তর পরিকল্পনা। নতুন ১৫টি ওয়ার্ড প্রসঙ্গে তিনি সম্মানিত
নাগরিকবৃন্দের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যাত্রা লগ্নে ২৭টি ওয়ার্ড নিয়ে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমান সরকারের দূরদর্শী উন্নয়নচিন্তা ও প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীয়করণকে অধিক কার্যকর করার লক্ষ্যে বর্ধিত নগরায়নের চিন্তা থেকে বর্তমানে ৪২টি ওয়ার্ডে সিটি কর্পোরেশন সম্প্রসারিত হয়েছে। যার আয়তন ৭৯ দশমিক ৫০বর্গ কিলোমিটার। এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন সিলেট -১ আসনের মাননীয় সংসদ্য সদস্য, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে আব্দুল মোমেন।
এবারই প্রথম পূর্ণাঙ্গ ও বর্ধিত নগওে নির্বাচিত অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তাই এবারের নির্বাচন অন্য নির্বাচনগুলোর তুলনায় অনেক বেশি মর্যাদাপূর্ণ, চ্যালেঞ্জিং ও গুরুত্বপূর্ণ। এসময় সবার সম্মুখে নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ২১ দফা ইশতেহার ঘোষনা করেন। ইশতেহারগুলো হল: ১. স্মার্ট নগরভবন। ২. সবুজ, পরিচ্ছন্ন ও পরিবেশবান্ধব সিলেট। ৩.জলাবদ্ধতা দূরীকরণ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ। ৪.বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। ৫. পরিকল্পিত নগরায়ন। ৬. ডনরাপদ স্বাস্থ্যকর সিলেট। ৭. দুর্যোগ মোকাবেলায় সচেতনতা। ৮. শিক্ষা ও সংস্কৃতিবান্ধব সিলেট। ৯. নারীবান্ধব সিলেট। ১০.ব্যবসা বান্ধব সিলেট। ১১. পার্ক, উদ্যান ও খেলার মাঠ প্রতিষ্ঠা। ১২.সচল সিলেট। ১৩.মানবিক উন্নয়নে সিলেট। ১৪. প্রবাসী বান্ধব সিলেট। ১৫. সম্প্রীতির সিলেট। ১৬.পর্যটনবান্ধব সিলেট। ১৭. সামাজিক অপরাধ নির্মূল। ১৮. অংশগ্রহণমূলক ও সুশাসিত সিলেট। ১৯. নাগরিক বান্ধব সিলেট। ২০. তারুণ্যের সিলেট ও ২১. প্রযুক্তির সিলেট।
আয়োজিত ইশতেহার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দা জেবুন্নেছা হক, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদলে, কার্যনির্বাহী সদস্য আজিজুস সামাদ আজাদ ডনসহ সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী।
সিলেট/ অমিতা সিনহা/ ১৭ জুন ২০২৩