বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনোনীত হয়েছেন কণ্ঠশিল্পী বেবী নাজনীন। শনিবার (১৫ জুন) এক বিজ্ঞপ্তিতে দলটির পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিএনপির সাবেক সহ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক বেবী নাজনীনকে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা করা হয়েছে। তার সঙ্গে আরও ৯ জনকে উপদেষ্টা করা হয়েছে।
তারা হলেন—জহির উদ্দিন স্বপন, ব্যারিস্টার এ এইচ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান সরোয়ার, অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হারুন অর রশিদ, লায়ন আসলাম চৌধুরী এফসিএ, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন এবং ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন চৌধুরী পাহিন। এছাড়া বিএনপির বিশেষ সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপনকে দলের ভাইস চেয়ারম্যান করা হয়েছে। সবমিলিয়ে ৩৯টি পদে রদবদল এনেছে বিএনপি।
প্রসঙ্গত, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নীলফামারী-৪ (সৈয়দপুর-কিশোরগঞ্জ) আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছিলেন ‘ব্ল্যাক ডায়মন্ড’ খ্যাত কণ্ঠশিল্পী বেবী নাজনীন। বাংলাদেশ বেতার, চলচ্চিত্র, টেলিভিশন ও মঞ্চে শ্রোতাদের মন জয় করেছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে পরিবার নিয়ে থাকেন বেবী নাজনীন। তবে এই মুহূর্তে একমাত্র ছেলে মহারাজ অমিতাভকে নিয়ে নিউইয়র্কে আছেন। ছেলে ইউনিভার্সিটি অব হিউস্টোন থেকে আইটি নিয়ে স্নাতক করেছেন।
মাত্র সাত বছর বয়স থেকে মঞ্চে গান গাওয়া শুরু বেবী নাজনীনের। সেই যে শুরু, চলেছে টানা ২০০৮ পর্যন্ত। এরপর তাঁর স্টেজ শো কমতে থাকে। এই কমে যাওয়ার প্রধান কারণ, তার রাজনৈতিক পরিচয়। ২০১৪ সাল থেকে বাংলাদেশের কোনো স্টেজ শোতে দেখা যায়নি এই শিল্পীকে। দেশের মঞ্চে গাইতে না পারলেও ইউরোপ-আমেরিকার বিভিন্ন মঞ্চে গান গেয়ে চলছেন তিনি।
বেবী নাজনীন বলেন, ‘একদমই তা–ই। গণতান্ত্রিক দেশে রাজনীতি করাটা সবার স্বাধীনতা, আমিও তা–ই করেছি। অথচ এই রাজনীতি করার কারণে একের পর এক আমার কনসার্ট বাতিল হয়েছে। এমনকি টেলিভিশনের সরাসরি অনুষ্ঠান থেকেও অজ্ঞাত কারণে আমাকে বঞ্চিত করা হয়েছে। রাজনীতির কারণে আমাকে কোণঠাসা করা হয়েছে। একজন জাতীয় শিল্পী হিসেবে আমি কিন্তু নানা সময়ে দেশকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরেছি। গানের মাধ্যমে আমি আমার ইন্ডাস্ট্রিকে এনহেন্স করেছি। বিএনপির রাজনীতির কারণে অনেক বছর ধরে রাষ্ট্রীয়ভাবেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমাকে ডাকা বন্ধ। কিছুই বলি না, মনে মনে কষ্ট পাওয়া ছাড়া কিছুই তো করার নেই।’
বেবী নাজনীনের গানের হাতেখড়ি বাবা মনসুর সরকারের কাছে। তারপর জীবনের দীর্ঘ চলার পথে সংগীতের নানা দীক্ষা এবং সাধনায় নিজেই নিজেকে গড়ে তুলেছেন তিনি। ১৯৮০ সালে প্রথম সিনেমার গানে কণ্ঠ দেন তিনি। এহতেশামের ‘লাগাম’ সিনেমার গানটির সুর ও সংগীত করেন আজাদ রহমান। ১৯৮৭ সালে মকসুদ জামিল মিন্টুর সংগীত পরিচালনায় প্রকাশিত প্রথম অ্যালবাম ‘পত্রমিতা’। এটিই তার সংগীত জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। তারপর ‘নিঃশব্দ সুর’, ‘কাল সারা রাত’, ‘প্রেম করিলেও দায়’, ‘দুচোখে ঝুম আসে না’ আরও অনেক অনেক অ্যালবাম বের হয় তার।
তার অসংখ্য জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে ‘ঘুম ভাঙ্গায়া গেলরে মরার কোকিলে’, ‘এলোমেলো বাতাসে, উড়িয়েছি শাড়ির আঁচল’, ‘লোকে বলে আমার ঘরে নাকি চাঁদ এসেছে’, ‘দুচোখে ঘুম আসে না’, ‘কাল সারা রাত ছিল স্বপনেরও রাত’, ‘ও বন্ধু তুমি কই কই রে’, ‘কই গেলা নিঠুর বন্ধুরে’ ইত্যাদি।