কেমন হতে পারে ড. ইউনূস সরকারের প্রস্তাবিত আগামী সংসদ

:: পাবলিক রিঅ্যাকশন রিপোর্ট | পাবলিকরিঅ্যাকশন.নেট
প্রকাশ: ১ মাস আগে

রাষ্ট্রবিজ্ঞানী-লেখক অধ্যাপক আলী রীয়াজ। মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার তাঁকে দেশের সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। তার দায়িত্ব হচ্ছে দেশের প্রতিষ্ঠাকালীন দলিলটি পর্যালোচনা করে সংবিধান সংশোধন অথবা পরিবর্তনের জন্য প্রস্তাব দেওয়া।

এই প্রস্তাবে ড. ইউনূস সরকারের প্রস্তাবিত কেমন সংসদ হতে পারে এমন একটা ধারণাও দেবেন আলী রীয়াজ। বিভিন্ন সময়ে এ নিয়ে ইতোমধ্যেই বিভিন্ন মিডিয়াতে তিনি তার মতামত জানিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, ‘এখন আসে বিচারশাস্ত্রের প্রশ্ন: এর ত্রুটিগুলো কোথায়, কী পরিবর্তন প্রয়োজন ইত্যাদি। দ্বিতীয় পর্যায়ে পরিবর্তন এবং সংশোধনের প্রস্তাবনা দেওয়া হবে। আমাদেকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে আমি সরকারকে বলেছি, যেহেতু আমি ৭ অক্টোবর থেকে কাজ শুরু করেছি, আমার তিন মাসের সময়সীমা ৬ জানুয়ারি শেষ হবে, এবং আমি পুরো সময়ব্যাপ্তি ব্যবহার করব (হাসির সাথে)’।

১৪ ডিসেম্বর ভারতের ইন্ডিয়া টুডে তার একটি ইন্টারভিউ নেয়। এই ইন্টারভিউতে তিনি অনেক বিষয়ে কথা বলেছেন।

কমিশন দেশের জন্য কোন ধরনের সংসদের সুপারিশ করবে–এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা যেসব অংশীজন (স্টেকহোল্ডার) এবং বিশেষজ্ঞের সঙ্গে আলোচনা করেছি, তাদের মধ্যে অনেকেই আমাদের পরামর্শ দিয়েছেন যে আমরা যেন দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার প্রস্তাব করি, যার অর্থ হচ্ছে আইনসভায় দুটি আলাদা সংসদীয় কক্ষ থাকবে, যেমন যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র বা ভারতে রয়েছে। আমরা বিভিন্ন দেশের এই ব্যবস্থাটি অধ্যয়ন করেছি। যুক্তরাষ্ট্রে, দুটি কক্ষ সমান, তবে ভারতে রাজ্যসভার হচ্ছে উচ্চ কক্ষ আর লোকসভা হচ্ছে নিম্নকক্ষ। আমরা এগুলোর সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করছি এবং আমাদের চূড়ান্ত সুপারিশ সময়মতো আসবে।

অন্যদিকে, এটা আবশ্যকীয় যে আমাদের সংবিধানের ৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ পরিবর্তন করতেই হবে। সংসদের ফ্লোর ক্রসিং করে এটি সংসদের সদস্যদের স্বাধীনভাবে ভোট দিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। দলের বিপক্ষে ভোট দিলে, সদস্যগণ তাদের আসন হারিয়ে ফেলে। এই ব্যবস্থা শাসকদলকে সহায়তা করে অনুচ্ছেদটিকে রাবার স্ট্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করতে যাতে সংসদ কখনোই প্রধানমন্ত্রীকে অপসারণের জন্য অনাস্থা প্রস্তাব দিতে পারবে না। এটা পরিবর্তন করতে হবে

আলী রীয়াজ ইতোমধ্যে একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাতকারে ইতোমধ্যে বলেছেন,এমপিদের বয়সসীমা কমানো হবে। তরুণ প্রতিনিধির অংশগ্রহণ দরকার।

এছাড়া, সংবিধান সংশোধনের বৈধতা দিতে নতুন প্রস্তাব পেয়েছে অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বাধীন সংস্কার কমিশন। প্রস্তাবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে আলাদা ‘হ্যাঁ-না’ ব্যালটে গণভোট আয়োজনের কথা বলা হয়েছে। যদিও বর্তমান সংবিধানে গণভোটের বিধান নেই।’

আরেকটি বিষয় নিয়ে ভাবা হচ্ছে, সেটি হলো, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বাড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার সঙ্গে ভারসাম্য আনা। উপরাষ্ট্রপতি ও উপপ্রধানমন্ত্রী পদ সৃজন, একই ব্যক্তি পরপর দু’বারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না– এমন প্রস্তাব করা হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, আগামী বছরের শুরতেই সংবিধান সংস্কার কমিশন তাদের প্রস্তাবনা দেবেন। পরে সরকার বিবেচনা করে দেখবে।