পাবলিক রিঅ্যাকশন ডেস্ক:
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) ৬টি ওয়ার্ডে নিয়মিত কৃষকের বাজার পরিচালিত হচ্ছে। কৃষক ও ভোক্তা উভয়ের সুবিধা বিবেচনায় বাজারগুলো টেকসই করার বিকল্প নেই। সিটি কর্পোরেশনের একটি পৃথক সেল তৈরি করে বাজারগুলো টেকসই করা যেতে পারে।
মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে কৃষকের বাজারের অভিজ্ঞতা বিনিময় বিষয়ক কর্মশালায় বক্তারা এ কথা বলেন।
কর্মশালায় স্থানীয় সরকার বিভাগের উন্নয়ন অধিশাখার যুগ্মসচিব নুমেরী জামানের সভাপতিত্বে এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সিনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার জিয়াউর রহমানের সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংস্থার প্রজেক্ট ম্যানেজার নাঈমা আকতার। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব) মো. সেলিম রেজা, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মো. মুস্তাফিজুর রহমান এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান।
কর্মশালায় বক্তারা সিটি কর্পোরেশনের নের্তৃত্বে ওয়ার্ডভিত্তিক কৃষকের বাজার স্থাপন, কৃষকের বাজারের জন্য নির্দিষ্ট স্থান নিশ্চিতকরণ, বাজার পরিচালনায় কৃষকদের দক্ষতা বৃদ্ধি, স্থানীয় বাজারের সাথে পণ্যের মূল্যের সমন্বয় সাধন, পণ্যের বৈচিত্র্যতা নিশ্চিতকরণ, বাজার কমিটির বাজার পরিচালনার ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধি, স্থানীয় পর্যায়ের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় পর্যায়ে বাজার কমিটি তৈরি, সিটি কর্পোরেশনের একটি পৃথক সেল তৈরি, ট্রাক বা গাড়ি কেনার জন্য কৃষকদের সহজ শর্তে লোন প্রদান, পণ্য পরিবহনের জন্য রেল ও নৌকে সম্পৃক্ত করাসহ বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরেন।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব) মো. সেলিম রেজা বলেন, আমাদের খাদ্য উৎপাদন থেকে বন্টন পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে সমতা নিশ্চিত করতে হবে। কৃষকের বাজার নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতের পাশাপাশি স্থানীয় অর্থনীতি শক্তিশালীকরণে ভূমিকা রাখছে। কৃষকের বাজারের উদ্যোগে সিটি কর্পোরেশনের সহযোগিতা থাকবে।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান বলেন, কৃষকের বাজারে কৃষক ও ভোক্তা উভয়েই উপকৃত হচ্ছেন। খাদ্য ব্যবস্থাপনা ও বাজার পরিচালনা দুর্নীতিমুক্ত হতে হবে। বাজারগুলো অস্থায়ীভাবে আয়োজিত হওয়াই প্রয়োজন, নতুবা বাজারের জায়গাগুলো দখল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রজেক্টের ফুড সিস্টেম পলিসি ইকোনমিস্ট পেদ্রো আন্দ্রেস গার্জন ডেলভো বলেন, কৃষকের বাজার টেকসই করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অংশীদারগণ আজকে উপস্থিত আছেন এবং সকলেই বাজারগুলো টেকসই করার ক্ষেত্রে ইতিবাচক মতামত দিয়েছেন। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা প্রতিবন্ধকতা জয় করে বাজারগুলো স্থায়ী করতে পারবো।
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর পরিচালক গাউস পিয়ারী বলেন, ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্পের আওতায় ১৬টি কৃষকের বাজার স্থাপিত হয়েছে। এলাকাবাসীর পুষ্টির চাহিদা পূরণে আমরা সামান্য হলেও ভূমিকা রাখতে পারছি। জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় বাজারগুলো স্থায়ী করা প্রয়োজন।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উন্নয়ন অধিশাখার যুগ্মসচিব নুমেরী জামান বলেন, নিরাপদ পণ্যের মূল্য কতটা হওয়া যৌক্তিক, সে ব্যাপারে একটি গবেষণা করে মূল্য নির্ধারণ করা প্রয়োজন। তাহলে মূল্য ব্যবস্থাপনা সহজ হবে। পণ্যের বৈচিত্র্যতা নিশ্চিত না হলে বাজার টেকসই করা কঠিন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের পরামর্শক্রমে বাজারের বর্তমান মডেলটি চলমান থাকতে পারে।
আরো বক্তব্য রাখেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ হাসান নূর ইসলাম, ৩৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আসিফ আহমেদ, ২৯, ৩০, ৩২ ওয়ার্ডের সংরক্ষিত কাউন্সিলর শাহিন আক্তার সাথী, ৩১, ৩৩, ৩৪ ওয়ার্ডের সংরক্ষিত কাউন্সিলর রোকসানা আলম, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিএম মোস্তফা কামাল, সাভার উপজেলার উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা নাসিরউদ্দিন ভূঁইয়া, ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রজেক্টের ফুড সিস্টেম পলিসি ইকোনমিস্ট পেদ্রো আন্দ্রেস গার্জন ডেলভো এবং পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি আবু নাসের খান।
আয়োজনে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের উপপ্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লেফটেনেন্ট কর্ণেল মো গোলাম মোস্তফা সারওয়ার, অঞ্চল ৩ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল বাকী, অঞ্চল ৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোতাকাব্বীর আহমেদ, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মাকসুদ হাসেমসহ অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, ঢাকা জেলা মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তাবৃন্দ, সাভার উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তাবৃন্দ, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ফুড সিস্টেম সিটি কো-অর্ডিনেটর মো. নজরুল ইসলাম, কৃষক ও বাজার কমিটির সদস্যসহ আরো বিভিন্ন অংশীজন।