রাত পোহালেই ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচন। আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র মিলে মোট সাতজন প্রার্থী এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও ভোটারদের কাছে বেশি পরিচিত দুজন। নৌকার প্রার্থী মোহাম্মদ আলী আরাফাত এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী আলোচিত ইউটিউবার আশরাফুল আলম হিরো আলম। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের অল্প কয়েক মাস আগের এই ভোট নিয়ে ভোটার-প্রার্থী কারও মধ্যে খুব আগ্রহ না থাকলেও অনেকটা হিরো আলমের জন্যই আলোচনায় এসেছে এই আসনের ভোট।
তবে হিরো আলম নিজেই নিজেকে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না। কারণ তিনি এই আসনের ভোটার নন। নিজ এলাকা বগুড়ার ভোটার তিনি।
সোমবারের (১৭ এপ্রিল) এই ভোটে শুধু হিরো আলম নন, একাধিক প্রার্থী নিজেকে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না। ঢাকার বাইরের আছেন আরও একজন। বাকিদের মধ্যে অন্তত দুজন আছেন যারা একজন উত্তরার, আরেকজন পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়া এলাকার ভোটার।
হিরো আলমের সহকারী পরিচয় দেওয়া শুভ বলেন, ‘হিরো আলম বগুড়ার ভোটার। তাই ঢাকায় ভোট দিতে পারবেন না। তবে ভোটের দিন আমরা সব কেন্দ্রে যাওয়ার চেষ্টা করব। ’ ভোট সুষ্ঠু হলে একতারা মার্কা নিয়ে হিরো আলম বিজয়ী হবেন বলেও আশা তার এই সহকারীর।
সংসদ নির্বাচনে যেকোনো আসন থেকে নির্বাচন করার সুযোগ থাকলেও যেখানে ভোটার সেই আসন ছাড়া ভোট দেওয়ার সুযোগ নেই প্রার্থীদের।
চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান ফারুক গত ১৫ মে মৃত্যুবরণ করায় ঢাকা-১৭ আসন শূন্য ঘোষণা করা হয়। এই আসনের উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, আলোচিত ইউটিউবার মো. আশরাফুল হোসেন আলম (হিরো আলম), জাতীয় পার্টির জিএম কাদেরপন্থী সিকদার আনিসুর রহমান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. রেজাউল ইসলাম স্বপন, গণতন্ত্রী পার্টির মো. কামরুল ইসলাম, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট’র মো. আকতার হোসেন ও তৃণমূল বিএনপির শেখ হাবিবুর রহমান।
সাত প্রার্থীর মধ্যে হিরো আলম ছাড়া বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. রেজাউল ইসলাম স্বপনের ঠিকানা উত্তরা। বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মো. আকতার হোসেনের ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ায়।
হিরো আলমের গ্রামের বাড়ি বগুড়া সদরে। সেখানে গিনি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে সদস্য পদে দুই দফা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তবে পাস করতে পারেননি।
পরে গত জানুয়ারিতে বিএনপির সংসদ সদস্যদের পদত্যাগে বগুড়ায় শূন্য ঘোষিত দুটি আসনে উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র তোলে আলোচনার জন্ম দেন আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম। আসন দুটি হলো—বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর)।
অবশ্য এর আগে বগুড়া-৪ আসন থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে একবার নির্বাচন করেছিলেন তিনি। তবে কোনো নির্বাচনে জিততে না পারলেও বগুড়া-৪ আসনে উপনির্বাচনে তার কাছে রীতিমতো নাকানিচুবানি খেতে হয়েছিল মহাজোট প্রার্থী একেএম রেজাউল করিম তানসেনের। মাত্র ৮৩৪ ভোটে হেরে যান হিরো আলম। তখন তিনি দাবি করেছিলেন, তিনি সংসদে যান এটা প্রশাসন চায় না। এজন্য তাকে জোর করে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ঢাকায় প্রার্থী হওয়া নিয়ে হিরো আলমের ভাষ্য, আমি আট বছর ধরে ঢাকা-১৭ আসনের আশপাশেই ছিলাম। ঢাকা শহরের সবচেয়ে বড় এলাকা, এলিট শ্রেণির এলাকা এই ১৭ আসন।