বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ জানিয়েছেন, আগামীকাল মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) থেকে ঢাকায় ২৫ থেকে ৩০টি ট্রাকে করে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু হবে। দুই কেজি করে পেঁয়াজ, তেল, মসুর ডাল ও আলু বিক্রি করা হবে।
সোমবার (১৩) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান।
বাণিজ্য সচিব বলেন, এর মাধ্যমে প্রায় ৯ হাজার পরিবার উপকৃত হবে।
এসব ট্রাক থেকে একজন ক্রেতা প্রতিকেজি ৩০ টাকা দরে সর্বোচ্চ দুই কেজি আলু, ৫০ টাকা দরে দুই কেজি পেয়াজ, ৬০ টাকা দরে দুই কেজি মসুর ডাল এবং ১০০ টাকা দরে দুই লিটার সোয়াবিন তেল কিনতে পারবেন। টিসিবির পরিবার কার্ডের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে বিক্রি কার্যক্রমের পাশাপাশি এ কার্যক্রম চালানো হবে।
সচিব জানান, সারাদেশে এখন এক লাখ পরিবার টিসিবির পণ্য পায়। আর ঢাকায় পায় ১৩ লাখ পরিবার। কাল থেকে প্রতিদিন ট্রাক থেকে ৩০০ জন করে মোট ৯ হাজার পরিবার এসব পণ্য কিনতে পারবে। এসব পণ্য আরও আমদানি শুরু হলে ঢাকায় ট্রাকের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। কিছুদিনের মধ্যে সারাদেশেও শুরু হবে- এভাবে ট্রাকের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি। ঢাকা শহরে কিছু ভাসমান মানুষ আছে, যাদের টিসিবির আওতায় আনা যায়নি। তাদের অনেকের আইডি কার্ড না থাকায় তাদের জন্য এই ট্রাকের মাধ্যমে চারটি পণ্য বিক্রি হবে।
তপন কান্তি ঘোষ বলেন, আলু এর আগে কখনো আমদানি করতে হয়নি। এবারই প্রথম আমদানি করতে হলো। গতকাল পর্যন্ত ১০ হাজার ৯৫ টন আমদানি করা হয়েছে। পাইপ লাইনে আরও আছে; যা দুই একদিনের মধ্যে আসবে।
তিনি বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয় এখন পর্যন্ত ২ লাখ টন আইপির অনুমোদন দিয়েছে। ১৫ হাজার টনের জন্য এলসি খোলা হয়েছে। নতুন আলু না আসা পর্যন্ত আমদানি চলবে।
চিনি আমদানির বিষয়ে সচিব বলেন, চিনি ভারত ও ব্রাজিল থেকে আসে। ভারত রপ্তানি বন্ধ করেছে। ব্রাজিলের ওপর সারাবিশ্বে রপ্তানির চাপ আছে। এ জন্য চিনির ক্ষেত্রে সংকট রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে দেশে উৎপাদিত সব পণ্য বাজারে আসবে। আর আমদানি করা পণ্যও আরও বাড়বে। তাই জানুয়ারি মাসের প্রথম থেকে সব পণ্যের দাম কমা শুরু হবে।
এ সময় বাণিজ্য সচিব বলেন, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে নিত্যপণ্যের দামের ওপর প্রভাব পড়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চেষ্টা করেছে— সেটা স্থিতিশীল রাখতে। খাদ্য পণ্য আমদানি করতে এলসি খুলতে যাতে সমস্যা না হয় সে জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সব ব্যাংকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, এখন সারাদেশে এক কোটি পরিবার টিসিবির পণ্য পায় ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে। এর আওতা এখনোই বাড়ানো সম্ভব নয়। তবে আমদানি পণ্য যদি আরও বাড়ে, সে ক্ষেত্রে পরবর্তীতে এর আওতা বাড়বে।
বাণিজ্য সচিব বলেন, যারা ভোগ্যপণ্য মজুত করে মানুষকে জিম্মি করেছে, তাদের বিষয়টি দেখছে প্রতিযোগিতা কমিশন। ৬৫টি মামলা চলছে সেখানে। দুটি কোম্পানির বিরুদ্ধে ৮ কোটি টাকার বেশি জরিমানা করেছে। এর ফলে বাজারে প্রভাব পড়েছে। যদিও তারা জরিমানার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেছে।