পাবলিক রিঅ্যাকশন ডেস্ক:
ছিলেন কাজের মেয়ে। সেই রত্না এখন নিজেকে মেয়ে বলে দাবি করে সাবেক এমপি এ এস এম সোলায়মানের রাজনৈতিক, সামাজিক ও পারিবারিক সম্মান ভুলণ্ঠিত করছে বলে অভিযোগ করেছেন তার আত্মীয়রা।
আজ মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ এস এম সোলায়মান স্বজন ও সমর্থক ব্যানারে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় এই অভিযোগ করা হয়।
মানববন্ধনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সোলায়মানের আত্মীয় সাংবাদিক মোঃ মতিউর রহমান সরদার। তিনি বলেন, কৃষক শ্রমিক পার্টির সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি এ এস এম সোলায়মান সাহেবের মেয়ে দাবি করে কাজের মেয়ে রত্না কর্তৃক এ এস এম সোলায়মানের রাজনৈতিক, সামাজিক ও পারিবারিক সম্মান ভুলণ্ঠিত হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার উত্তর ষোলপাড়া মহল্লার মরহুম আব্দুল বাতেনের মেয়ে রাজিয়া সুলতানা রত্না। দেশের গণ্যমান্য লোকদের সাথে মিথ্যা তথ্য দিয়ে মেয়ে সেজে প্রতারণা করে মানুষের সরলতার সুযোগ নিয়ে এ এস এম সোলায়মান পরিবারকে বিভিন্নভাবে হয়রানী করে আসছে। প্রকৃত সত্য হলো- এই বহুরুপী বিউটিশিয়ান রাজিয়া সুলতানা রত্না নারায়ণগঞ্জ জেলার সুনামগঞ্জ উপজেলার উত্তর ষোলপাড়া মহল্লার মরহুম আব্দুল বাতেনের ৬ সন্তানের মধ্যে চতুর্থ কন্যা সন্তান। রত্নার পিতা মরহুম আব্দুল বাতেন সিটি কর্পোরেশনে মালির কাজ করতেন এবং আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে তার মেয়েকে এ এস এম সোলায়মান সাহেবের বাসায় ১৯৯০ সালে কাজের জন্য দিয়ে যান এবং সোলায়মান সাহেবের কনিষ্ঠ মেয়ে হৃদীর যাবতীয় কাজকর্ম করতো ও রত্নার পিতা প্রতি মাসে এসে বেতনের টাকা নিয়ে যেতেন। ৫ বছর পর রত্নার বড় বোন সাহিদা আক্তার ও তার মা সাহার বানু নানার বাড়িতে বেড়াতে নেওয়ার কথা বলে নিয়ে বিবাহ দিয়ে দেন। গত ০৪/০১/২০২২ তারিখে কাজের মেয়ে বেগম রুনা সোলায়মানের বাসায় বেড়াতে আসে। কথাবার্তার একপর্যায়ে রত্না বাসায় রাতে থাকতে চায় ও রুনা সোলায়মানকে সে “মা” বলে ডাকতে চায়। তাকে বাসায় না থাকার জন্য বলা হলেও রত্না অনুনয় বিনয় করে ২/৩ দিন থাকে। তার উশৃংখল আচরনের কারণে বেগম সোলায়মানের বাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়। এরপর থেকে সোলায়মান পরিবারের পারিবারিক বিভিন্ন ধরনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা শুরু করে। অবৈধভাবে বেগম রুনা সোলায়মানকে মা বলে এবং এ এস এম সোলায়মানকে বাবা বলে দাবি করে এবং তার সকল সম্পত্তির অংশীদার দাবী করে। গত ০২/০৩/২০২২ এক প্রতিবেশী সোলায়মানের কনিষ্ঠ মেয়ে আঞ্জুম সোলায়মান হৃদীকে ফোন করে বলে কে বা কারা তোমাদের বাসার পশ্চিম দিকের দেওয়াল টপকিয়ে বাসার ভিতরে ঢুকতেছে। বিষয়টি জেনে দেওয়ালের পাশে হৃদী গেলে তাকে গলায় ধাক্কা দিয়ে রত্নার ছেলে জোবায়ের আহমেদ দীপ্ত চৌধুরী বাসায় ঢুকে যায়। এরপর বাসার ভিতরে রত্না ও তার ছেলে বেগম রুনা সোলায়মানের নাক-মুখে স্প্রে করা শুরু করলে চিৎকার করেন এবং জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এ ফোন করলে পল্লবী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে বেগম রুনা সোলায়মানের বাসায় উপস্থিত হয়ে রত্নাকে তার ছেলেসহ পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। গত ২১/০২/২০২২ তারিখে সোনারগাঁও উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের বাড়ি মজলিশ এলাকায় রত্নদ্বীপ হলরুমে এ এস এম সোলায়মানের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করে এবং মিডিয়ায় প্রচার করে রত্না। একই বছর গত ৪ ডিসেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবে এ এস এম সোলায়মানের ২৫তম মৃত্যুবার্ষিকীর সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী। প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারের মাধ্যমে ও সাংবাদিক মোঃ মতিউর রহমান সরদারের বক্তব্যের মাধ্যমে বেগম রুনা সোলায়মান জানতে পারেন তার বাসার কাজের মেয়ে রত্না পুণরায় সোলায়মান সাহেবকে পিতা দাবি করে মিডিয়ায় অপপ্রচার চালাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিক মতিউর রহমান অনুসন্ধান করলে মূল রহস্য প্রকাশ পায়। এতে জানা যায়, এ এস এম সোলায়মানের ওয়ারিশান সূত্রের তথ্যে ২ স্ত্রী, ২ পুত্র ও ২ কন্যা। সেই ওয়ারিশান নামের তালিকায় রাজিয়া সুলতানা রত্নার নাম নেই। অন্যদিকে মিথ্যা তথ্য প্রদানকারী রাজিয়া সুলতানা রত্নার পিতা মরহুম আব্দুল বাতেন এর ওয়ারিশান সূত্রের তথ্যে পাওয়া যায় রাজিয়া সুলতানা রত্না তার ছয় সন্তানের মধ্যে চতুর্থ কন্যা সন্তান। পুলিশ ইনভেষ্টিকেশন অব ব্যুরো পিআইবি’র অনুসন্ধানে রাজিয়া সুলতানা রত্নার জাতীয় পরিচয় পত্র, কোভিড টিকা, পাসপোর্ট, আয়কর সনদ, বিবাহের কাবিন নামা যাচাই করে দেখতে পায় মরহুম বাতেন সাহেবের মেয়ে রাজিয়া সুলতানা রত্না।
কৃষক শ্রমিক পার্টির সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ মাধ্যমে রাজিয়া সুলতানা রত্না প্রতারণার আশ্রয় নেওয়ায় বেগম রুনা সোলায়মান সাংবাদিকদের সাথে যোগাযোগ করেন এবং সোস্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ জানান। তারই প্রতিবাদ স্বরূপ এ এস এম সোলায়মানের স্বজন ও সমর্থকদের পক্ষ থেকে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।