কর্পোরেট সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারলে মুরগি ও ডিমের দাম আরো বাড়বে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ পোল্ট্রি এসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার।
বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এই মন্তব্য করেন।
এতে তিনি বলেন, সরকারী তদারকি না থাকায় পোল্ট্রি শিল্পে কর্পোরেটদের আধিপত্য বিস্তার যার খেসারত দিচ্ছে জনগন। ডিম মুরগির দাম বেড়ে বাজারে অস্থিরতার কারন ন্যায্য মূল্য না পেয়ে প্রান্তিক পর্যায়ের অধিকাংশ ছোট ছোট খামার বন্ধ করে দেয়ায় সরবরাহ সংকট সৃষ্টি হয় যার প্রভাব পড়েছে বাজারে। ছোট ছোট খামারি ও ডিলাররা পোল্ট্রি শিল্পের বিকাশ ঘটালেও আজ তারা অসহায় প্রতক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে জড়িত ৫০ লক্ষ প্রান্তিক উদ্যেক্তার অধিকাংশ খামারি ব্ল্যান্ক চেকের মাধ্যমে জিম্বি হয়ে পড়েছেন কোম্পানির দাদন ব্যবসার কাছে। প্রান্তিক খামারিদের ডিম মুরগি বাজারে আসলে দাম কমে যায় উৎপাদন খরচ তুলতে হিমশিম খেতে হয়।
বর্তমানে প্রান্তিক পর্যায়ে একটি ডিমের উৎপাদন খরচ ১০.৮৭টাকা থেকে ১১ টাকা পর্যন্ত, ১ কেজি ব্রয়লার মুরগি উৎপাদন খরচ ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা হলেও বাধ্য হয়ে ২০ থেকে ২৫ টাকা কমে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা বিক্রয় করতে হয়। বাজার কর্পোরেটদের নিয়ন্ত্রণে থাকায় তারা এস এম এস দিয়ে বাজার বাড়াতে চাইলে বাড়ে কমাতে চাইলে কমে। অন্য দিকে কর্পোরেট গ্রুপের মুরগি বাজারে আসলে দি গুন্ লাভ করেন। কর্পোরেটদের একটি ডিমের উৎপাদন খরচ ১০ টাকার কম, ১কেজি ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ ১১৯ থেকে ১৩০ টাকা। প্রান্তিক ও কর্পোরেটদের উৎপাদন খরচ ই বলে দেয় বাজারের পরিস্থিতি।সরকার চাইলে পোল্ট্রি ফিডের উৎপাদন খরচ যাচাই করে দাম কমানো সম্ভব । ২০২১ সালে ১ কেজি ভুট্টার দাম ২৮টাকা, ৫০কেজির ১বস্তা পোল্ট্রি ফিডের দাম ছিল ২৫০০ টাকা, ২০২২ সালের শুরুতে ভট্টার দাম ছিল ২৮টাকা, ৫০কজির ১ বস্তা ফিডের দাম ছিল ২৭০০ টাকা, ২০২২ সালের উক্রেন রাশিয়া যুদ্বের দোহাই দিয়ে লাগাম হীন ফিডের দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়, লাস্ট ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ভুট্টার দাম হয় ৪১টাকা কেজি পোল্ট্রি ফিডের ৫০ কেজি বস্তার দাম পৌঁছায় ৩৭৪০ টাকায়। কিন্তূ মার্চ ২০২৩ থেকে ভুট্টার দাম কমে দাঁড়ায় ২৪ থেকে ২৬ টাকায় পোল্ট্রি ফিড উৎপাদনে ৬০% ভুট্টা প্রয়জন হয় সেই ভুট্টার দাম কমেছে কেজিতে ১৬ টাকা এবং অন্য উপাদান ৪০% আন্তর্জাতিক বাজারে ফিড উৎপাদনের সকল পণ্যের দাম কমেছে কিন্তু পোল্ট্রি ফিডের দাম পার কেজিতে ২৫ টাকা বাড়িয়ে কমিয়েছেন কেজিতে ৩ টাকা মাত্র।ফিড কোম্পানি গুলোর ফিড বা”চার সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে। ডিম ও মুরগির দাম কমিয়ে রাখতে ও খামারিদের উৎপাদিত পণ্যে যৌক্তিক মূল্য সংযোজন করতে হবে । অন্য দিকে প্রান্তিক খামারি কোম্পানিকে মুরগি দেয়ার শর্তে কন্ট্রাক্ট ফার্মিংয়ে নামে চলে দাদন ব্যবসা ৫০কেজির ১বস্তা ফিডের দাম ২৬০০টাকা ধরে হিসাব করে ও সব সময়ের জন্য ১টি মুরগির বা”চার দাম, ৩৫টাকা ধরা হয়। কোম্পানির সাথে চুক্তিতে না গেলে ফিডের বস্তার দাম ৩৫৫০ টাকা ও বা”চার দাম ৪০ থেকে ৮০ টাকা দিয়েও অনেক সময় চুক্তির বাহিরে বা”চা বিক্রয় করেন না । এক দিকে প্রান্তিক খামারি হারিয়ে যাচ্ছে অন্য দিকে কর্পোরেট গ্রুপ গুলো ধিরে ধিরে বড় হচ্ছে। এই বৈষম্য দূর করে বাজারে প্রতিযোগিতা ফিরিয়ে আনতে হবে। ডিম মুরগি উৎপাদনে ৮০% শেয়ারের প্রান্তিক পর্যায়ের খামারিদের সুরক্ষা দিতে হবে। তা না হলে ভবিষ্যতে আমিষের ঘাটতি দেখা দিবে। সিন্ডিকের বিরুধ্যে শাস্তির ব্যব¯’া না হলে ডিম মুরগি বেশি দামে কিনে খেতে হবে জিম্বি হয়ে পড়বে ভোক্তা ও বাজার ব্যব¯’া।¯ি’তিশীল বাজার রাখতে হলে কোম্পানি গুলে ১০০% ফিড ও বা”চা উৎপাদন করে তাই করবে এবং তাদের কন্ট্রাক ফার্মিং ও কোম্পানিদের ডিম মুরগি উৎপাদন বন্ধ করতে হবে। প্রান্তিক খামারিরা ডিম মুরগি উৎপাদন করবে কখনো বাজার সিন্ডিকেট হবে না। খামারিদের সংগঠন বিপিএ দীর্ঘদিন ধরে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করে ও বাণিজ্য মন্ত্রীর এবং সচিব মহাদয় সহ প্রাণিসম্পদ এবং ভোক্তা অধিদপ্তর সহ সকল কর্মকর্তাদের অবহিত করে স্বারক লিপি প্রধান করে পোল্ট্রি বোর্ড ও মূল্য নির্ধারণ করে দেয়ার দাবির জানানোর পরিপেক্ষিতে খামারিদের উৎপাদিত ডিম মুরগি পোল্ট্রি ফিড ও মুরগির বা”চার উৎপাদন খরচ সমন্বয় করে যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে সকল স্টক হোল্ডারদের নিয়ে কমিটি করতে বলা হয় প্রাণিসম্পদকে সেই কমিটি কর্পোরেট সিন্ডিকেটদের আধিপত্য বিস্তার। সেখানে খামারিদের সংগঠন বিপিএ কে রাখা হয়নি কমিটিতে। রাখা হয়েছে ২০% উৎপাদন কারি কর্পোরেট গ্রুপের কয়েকটি এসোসিয়েশন ও এস এম এস দিয়ে যারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করে তাদের নিয়ে কমিটি করা হয়। ডিম মুরগির যোক্তিক মূল্য নির্ধারণ কমিটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রান্তিক খামারিদের রক্ষায় প্রাণিসম্পদের ডি এল এস কে দায়িত্ব দিলেও তাদের সাথে খামারিদের যোগাযোগ নেই। পোল্ট্রি খামারিদের রক্ষায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ডি এল এস এর কর্মকর্তাদের কোন ভূমিকা দেখছি না। তারা কর্পোরেটদের সহযোগিতা করে সকল সুযোগ সুবিধা দিয়ে যা”েছন। প্রানিসম্পদ অধিদপ্তর ও মন্ত্রনালয় ৮০%ডিম মুরগি উৎপাদন কারি প্রান্তিক খামারিদের মিটিং এ ডাকা হয় না ও মতামত নেয়া হয় না। ২০% ডিম মুরগি উৎপাদনকারী কর্পোরেট গ্রুপদের নিয়ে মিটিং ও আলোচনা করেন এতে কখনই সুফল আসবেনা।তাই পোল্ট্রী শিল্পের সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে পোল্ট্রি শিল্পের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনুন। পোল্ট্রি শিল্প ও প্রান্তিক খামারিদের উৎপাদনে ধরে রাখুন বৃহত্তর ৫০লক্ষ লোকের কর্মসংস্থান রক্ষা করুন।