নাইমা আক্তার মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। অন্যান্য দিনের মতো সেদিনও মাদ্রাসার ক্লাস শেষে বান্ধবীদের সঙ্গে ঘোরাফেরা করে বাড়ি ফিরে। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে একবারও বুঝতে পারেনি, পরের দিন সকালটা তার জন্য ভিন্ন রকমের হবে। সকালে উঠে দেখে সে ছেলেতে রূপান্তরিত হয়েছে।
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) নাইমা ছেলেতে রূপান্তর হওয়ায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
তাদের বাড়িতে এখন শত শত মানুষের ভিড়। ভিড় সামলাতে ঘর থেকে তাকে রাখা হয়েছে বাড়ির উঠানে। মানুষের ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে পরিবারটিকে।
দিনাজপুরের সর্ব দক্ষিণে উপজেলা বিরামপুরের সীমান্তঘেষা এলাকা জোতবানী। ওই এলাকার কসবা সাগরপুর গ্রামের কমর আলীর প্রথম স্ত্রীর মেয়ে নাইমা আক্তার চতুরপুর দাখিল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। বুধবার সকালে ঘুম থেকে উঠে সে তার শরীরের পরিবর্তন দেখতে পায়।
নাইমা আক্তারের চাচাতো বোন লিজা বলেন, মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) নাইমা মাদ্রাসা থেকে আসার পর আমরা একসঙ্গে ছিলাম বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। অনেক বিষয়ে আলোচনা করেছি, আনন্দ ফুর্তিও করেছি। বুধবার সকালে নাইমা প্রথমে আমাকে তার ছেলেতে রূপান্তর হওয়ার কথা জানায়। এরপর তার মা ও দাদীকে জানায়। এখন তো পুরা এলাকার মানুষই জানে।
নাইমার গ্রাম সম্পর্কের চাচা বলেন, ওমর আলী আমার চাচাতো ভাই। ভাইয়ের প্রথম স্ত্রী মারা গেছে। তার ঘরে দুই সন্তান- নাইমা ও তার একটা ভাই রয়েছে। ছোট থেকেই জেনে আসছিলাম নাইমা মেয়ে। মঙ্গলবারেও সে মেয়েদের সঙ্গে দলবদ্ধ হয়ে আমার বাড়ির পাশ দিয়ে মাদ্রাসায় যাওয়া-আসা করেছে। পরের দিন নাকি মেয়ে থেকে ছেলে হয়েছে। প্রথমে বিশ্বাস না করলেও এখন তো বিশ্বাস করতেই হচ্ছে।
এই বিষয়ে নাইমার বাবা কমর আলী সময় সংবাদকে বলেন, আমার মেয়ে মঙ্গলবার মাদ্রাসা থেকে এসে প্রতিদিনের মতো তার বান্ধবীর সঙ্গে কথা বলছে। আমরা পরিবারের সবাই রাতের খাবার খেয়ে শুয়ে পড়ি। নাইমাও তার ঘরে শুয়ে পড়ে। সকালে ঘুম থেকে উঠে কাউকে কিছু না বললেও পরে তার মাকে জানাই তার শরীরের পরিবর্তনের কথা। পরে আমাকে জানায় নাইমার মা। বিষয়টা প্রথমে কাউকে না বললেও পরবর্তীতে আমি আমার মুরুব্বিদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টা কনফার্ম হয়েছি।
এই বিষয়টাকে অলৌকিক বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় আলেমসহ বয়োজ্যেষ্ঠরা। তবে ভিন্নমত চিকিৎসকদের। এ বিষয়ে হাকিমপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার সুলতান মাহমুদ বলেন, এটি হরমোন জনিত বিষয়। তিনি আরও বলেন, আমরা অনেক সময় দেখি একজন মেয়ে হিসেবে বড় হয়। কিন্তু হরমোনের কারণে পরে সে ছেলে হতে পারে। আবার একটা ছেলে ছোট থেকে ছেলে হিসেবে বড় হয়েছে। তার নামও রাখা হয়েছে ছেলেদের। কিন্তু বড় হয়ে হরমোনের কারণে সে মেয়ে হয়ে যেতে পারে।