ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থান লক্ষ্য করে এক ঘণ্টায় অন্তত ২৫টি রকেট ও তিনটি আত্মঘাতী ড্রোন নিক্ষেপ করেছে ইরান-সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্রগোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। সোমবার সীমান্ত লাগোয়া লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল থেকে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলেছে, হিজবুল্লাহর ছোড়া কয়েকটি রকেট আয়রন ডোম আটকে দিয়েছে। এছাড়া কয়েকটি রকেট উন্মুক্ত স্থানে পড়েছে।
একই সময়ে অন্তত তিনটি বিস্ফোরক বোঝাই ড্রোন সীমান্তে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর একটি সামরিক চৌকিতে আঘাত করেছে।
আইডিএফ বলেছে, হিজবুল্লাহর এসব হামলায় হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। হামলার জবাবে লেবাননের ভূখণ্ডে হিজবুল্লাহর অবস্থানে পাল্টা গোলাবর্ষণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল।
ইসরায়েলি বাহিনী জানায়, লেবাননের মারওয়াহিন গ্রাম থেকে ইসরায়েল লক্ষ্য করে ট্যাংক-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছিল হিজবুল্লাহ। পরে হিজবুল্লাহর অবস্থানে গোলাবর্ষণ করেছে ইসরায়েলি সৈন্যরা। এছাড়া উত্তর ইসরায়েলে একের পর এক হামলা চালানোয় সোমবার লেবাননের দক্ষিণে হিজবুল্লাহর অন্যান্য এলাকাতেও যুদ্ধবিমান, কমব্যাট হেলিকপ্টার এবং ট্যাংক থেকে হামলা করা হয়েছে।
এর আগে, ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের বিরানিত সামরিক ঘাঁটিতে ভয়াবহ রকেট হামলা চালিয়েছে ইরান-সমর্থিত লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্রগোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। সোমবার স্থানীয় সময় সকালের দিকের এই হামলায় ইসরায়েলি সামরিক ঘাঁটিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হিজবুল্লাহর হামলা চালানোর একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে আইডিএফ। এতে দেখা যায়, লেবানন থেকে হিজবুল্লাহর চালানো রকেট হামলায় উত্তর ইসরায়েলের বিরানিত সামরিক ঘাঁটিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
বিরানিত সামরিক ঘাঁটিতে হিজবুল্লাহর ছোড়া রকেট আঘাত হেনেছে বলে নিশ্চিত করেছে আইডিএফ। ভিডিওতে দেখা যায়, রকেট আঘাত হানার সঙ্গে সঙ্গে ঘাঁটিতে আগুন ধরে যায়। তবে এই হামলায় কোনো হতাহত হয়নি।
গত ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীনগোষ্ঠী হামাসের সাথে ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সাথে আন্তঃসীমান্ত সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহ। তখন থেকে প্রত্যেক দিনই ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তে সামরিক বাহিনীর চৌকি, সামরিক ঘাঁটি ও বেসামরিক স্থাপনা এবং বসতি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে আসছে এই গোষ্ঠী।
তবে সীমান্তে হিজবুল্লাহ এবং ইসরায়েলি বাহিনীর সংঘাত গত কয়েক দিনে তীব্র আকার ধারণ করেছে। উভয়পক্ষের মাঝে পাল্টাপাল্টি হামলা-পাল্টা হামলা অব্যাহত রয়েছে। গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধ আঞ্চলিক সংঘাতে রূপ নিতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ইসরায়েলের সাথে সংঘাতে এখন পর্যন্ত হিজবুল্লাহর ৭০ যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। একই সময়ে লেবাননের কয়েকজন বেসামরিক নাগরিকও ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন।
সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল।