ব্রিকস জোটের দেশগুলোর ওপর নব-নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শতভাগ শুল্কারোপের হুমকির নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে ভারতীয় মুদ্রার মানে। গত সোমবার ডলারের বিপরীতে দশমিক ২ ভাগ দরপতনে ইতিহাসের সর্বনিম্ন দরে নামে রুপি।
এদিন দেশটিতে ডলারের দাম পৌঁছায় ৮৪ দশমিক ৭০ রুপিতে। যা শুক্রবারের তুলনায় ১৪ পয়সা বেশি। আর এর ফলে মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির মান ইতিহাসের সর্বনিম্ন স্তরে নেমে যায়।
এদিকে ভারতে জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশা থাকলেও হয়েছে ৫ দশমিক ৪ ভাগ। বিশ্লেষকরা বলছেন, অব্যাহত ভূ-রাজনৈতিক চাপ রুপির মানে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
২০১১ সালে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিয়ে গঠিত হয় ব্রিকস জোট। চলতি বছর যুক্ত হয় ইরান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইথিওপিয়া এবং মিশর। অক্টোবরে জোটের শীর্ষ সম্মেলনে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বার্তা দেন, সারাবিশ্বে পশ্চিমা দেশগুলো সমর্থন হারাচ্ছে। বাড়ছে ব্রিকসের প্রতি আস্থা। জোটটি এরই মধ্যে ডলারের বিকল্প মুদ্রা তৈরির চিন্তা-ভাবনা করছে।
সারা বিশ্বে আন্তর্জাতিক লেনদেনে ডলারের আধিপত্য ধরে রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ডোনাল্ড ট্রাম্প। ৩০ নভেম্বর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্রিকস দেশগুলোর ডি-ডলারাইজেশনের চেষ্টাকে রুখে দেওয়ার বার্তা দেন। বিকল্প মুদ্রা তৈরি করলে মার্কিন বাজারে ব্রিকস দেশগুলোর পণ্যে শতভাগ শুল্কারোপের হুঁশিয়ারি দেন ট্রাম্প।
ট্রাম্পের হুমকির নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে ভারতের মুদ্রার মানে। সোমবার দিন শেষে দেশটিতে ডলারের দাম পৌঁছায় ৮৪ দশমিক ৭০ রুপিতে। যা শুক্রবারের তুলনায় ১৪ পয়সা বেশি। ভারতে জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশা থাকলেও হয়েছে ৫ দশমিক ৪ ভাগ। এতে ফরোয়ার্ড মার্কেটে ডলারের চাহিদা বাড়ায় কমে রুপির দর। সেইসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা আমলে নিচ্ছেন, বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের ১ শতাংশ দাম বৃদ্ধিকেও। এদিকে ট্রাম্পের সম্ভাব্য বাণিজ্য যুদ্ধের হুশিয়ারিতে চীনা মুদ্রারও দরপতন হয়েছে।
রুপি এই ধারাবাহিক দরপতনকে ব্যবসায়ীরা উদ্বেগজনক বলছেন। রুপির দরপতনের সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগও বাড়ছে। আমদানি-রপ্তানি থেকে শুরু করে বিদেশে পড়াশোনা করা শিক্ষার্থীদের, সকলেই প্রভাবিত হচ্ছেন। রুপির দরপতনের খেসারত ভোগ করতে হবে সাধারণ গ্রাহকদের।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম গুলো বলছে, প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়া এবং বিদেশি বিনিয়োগের প্রবাহে টান পড়ার ফলে রুপি দাম কমেছে।