স্পোর্টস ডেস্ক:
বিশ্বকাপের শেষ ষোলোর খেলা, প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া। ডান প্রান্ত থেকে আলেক্সিস ম্যাক আলিস্তারকে বল দিয়ে ডি-বক্স যখন ঢুকে পড়েন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক, তখন আলিস্টারের কাছ থেকে বল পেয়ে লিওনেল মেসির দিকে বাড়ান নিকোলাস ওতামেন্দি। বল পেয়ে বাঁ পায়ের কোণাকোণি শট মেসির। বল জড়ায় জালে, এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। শেষ পর্যন্ত দলটি জায়গা করে নেয় কোয়ার্টার ফাইনালে।
স্বাভাবিকভাবেই নিজের এমন কৃতিত্বে দারুণ উচ্ছ্বসিত ওতামেন্দি। কারণটা অ্যাসিস্ট করেছেন অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি ম্যাচে। তাও আবার সময়ের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় লিওনেল মেসিকে। তাই ম্যাচ শেষে মজা করেই বলতে থাকেন, ‘বলো, বলো, বলে যাও। আমার কাছ থেকে এটা নিও না। এটি ছিল অ্যাসিস্ট, অ্যাসিস্ট।’
এরপর অবশ্য কৃতিত্বটা অধিনায়ককে দিয়ে যোগ করেন, ‘সত্যিটা হলো লিও এখন ভালো সময় কাটাচ্ছে, সবাই খুশি, আমরা সকল আর্জেন্টাইন এবং আমাদের স্বপ্নের জন্য কাজ করছি। আমাদের এইভাবে চালিয়ে যেতে হবে, সবকিছু ভালোভাবে এবং ধীরে ধীরে করতে হবে।’
তবে মেসিকে অ্যাসিস্ট করা এবারই প্রথম নয় ওতামেন্দির। এর আগে ২০১১ সালে একটি প্রীতি ম্যাচে ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে মেসির গোলে সহায়তা করেছিলেন এ ডিফেন্ডার। এতো দিন আন্তর্জাতিক ফুটবলে এটাই ছিল তার একমাত্র অ্যাসিস্ট। দীর্ঘদিন পর ফের সেই মেসিকেই অ্যাসিস্ট করে সংখ্যাটা বাড়ালেন এ আর্জেন্টাইন।
বিশ্বকাপে এবার বেশ দারুণ খেলছেন ওতামেন্দি। ভালো কিছু করতে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিয়েই এসেছেন বলে জানান তিনি, ‘আমি এই বিশ্বকাপের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করেছি। টুর্নামেন্টে ভালো কিছু করতে, ছন্দে পৌঁছাতে মানসিকভাবে তৈরি হয়েছিলাম। জাতীয় দলে এই অবিস্মরণীয় মুহূর্তগুলো উপভোগ করছি। মাঠে যেমনটা দেখা যায় আমি শুধু সেটাই নই, আমার সব সতীর্থরা মিলেই বিশ্বকাপ উপভোগ করছি। এবং সেইভাবে চালিয়ে যেতে চাই।’
নিকোলাস ওতামেন্দি সর্ম্পকে:
পুরো নাম নিকোলাস এর্নান গোনসালো ওতামেন্দি। জন্ম ১৯৮৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৮। জন্মস্থান আর্জেন্টিনার বুয়েন্স আইরেস। উচ্চতা ১.৮৩ মিটার বা ৬ ফুট।
আর্জেন্টিনার এই পেশাদার ফুটবলার পর্তুগিজ লিগের ক্লাব ক্লাব বেনফিকা এবং আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের হয়ে রক্ষণভাগের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেন। জাতীয় দলে তার জার্সি নম্বর ১৯।
তিনি তার ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে, ভেলেজ সার্সফিল্ড এবং পোর্তোর মতো ক্লাবে খেলেছেন, যেখানে তিনি ৩টি জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ এবং ২০১১ উয়েফা ইউরোপা লিগসহ সর্বমোট ৮টি প্রধান ট্রফি জয়লাভ করেছেন। ২০১৫ সালে, তিনি প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটির চুক্তিবদ্ধ হন। ম্যানচেস্টার সিটিতে ৩০ নম্বর জার্সি নিয়ে খেলেন।
২০০৯ সাল থেকে তিনি আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের হয়ে খেলেন। তিনি ২০১০ ফিফা বিশ্বকাপ এবং ২টি কোপা আমেরিকায় আর্জেন্টিনাকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, যেখানে তারা রানার-আপ হয়েছিল।